কলকাতা: হুগলি, বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর দিনাজপুর। রাজ্যের প্রতিটি জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে থেকে নিত্যদিন সংবাদ শিরোনামে উঠে আসছে আলু কৃষকদের বিক্ষোভের খবর। এবার বিধানসভায় এই ইস্যুকেই হাতিয়ার করে সরব হল বিজেপি। সোমবার বিধানসভার বাইরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভ দেখান। হাতে আলু নিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। বিজেপির সোনামূখীর বিধায়ক দিবাকর ঘরামীর ক্ষেতের আলু নিয়ে এই বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
সোমবার শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আলু চাষিরা বিঘা প্রতি প্রায় ১০ হাজার টাকা ক্ষতিতে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। আমরা বিধানসভায় আজ এই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। কিন্তু তার উত্তর সন্তোষজনক নয়। আমরা চাই সরকার যে এমএসপি ঘোষণা করেছে সেই এমএসপি মূল্যে আলু ক্রয় করতে হবে। এই বছরের শর্টটার্মের কৃষি ঋণ রাজ্য সরকারকে পরিশোধ করতে হবে। কৃষকদের ন্যায্যমূল্য দিতে হবে।”
যদিও, শুভেন্দুর দাবিকে নস্যাৎ করে পঞ্চায়েত ও কৃষি বিপণন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “আমাদের এখানে কোনও চাষী ক্ষতিগ্রস্থ হননি। গতবছরও আলুতে ১৪ – ১৫ টাকা কেজি দরে দাম পেয়েছেন কৃষকরা।” আবার তৃণমূল বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় আলু উৎপাদনের ক্ষেত্রে খরচ বাড়ার কারণ হিসাবে কেন্দ্রীয় সরকারকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “সারের দাম বাড়ছে। সরকার ১০ লক্ষ মেট্রিক টন আলু কিনবে। উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। কোনও আলু চাষির মৃত্যু হয়েছে, এমন খবর আমার কাছে নেই। বিরোধী দলের কেউ কেউ আলু কিনে রাস্তায় ফেলে সিন ক্রিয়েট করার চেষ্টা করছে।”
বিগত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলার আলু চাষিরা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। তাঁদের দাবি, ফলনে যে খরচা হচ্ছে সেই খরচায় তাঁদের পোশাচ্ছে না। আরও বেশি দাম আশা করেন তাঁরা। এমনকী সরকারেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কয়েকদিন আগে হুগলিতেও বড় মাপের বিক্ষোভ হয়েছিল।
উল্লেখ্য, নিত্যদিন লাগাতার বিক্ষোভ চালাচ্ছেন আলু চাষিরা। তাঁদের দাবি, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর আলু চাষ করে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তাঁরা। চড়া দামে কিনতে হয়েছে সার। তার উপরে আলুর দাম ও কীটনাশক। নাজেহাল হয়ে পড়েছেন তাঁরা। অপরদিকে রাজ্য সরকার ৬৫০ টাকা করে কৃষকদের কাছ থেকে আলু কেনা শুরু করলেও সরকারকে আলু বিক্রি করতে নারাজ কৃষকেরা। এই অবস্থায় পরিস্থিতি কোনদিকে যায় সেটিই দেখার।