কলকাতা: কলকাতার বুকেই অভিনব কায়দায় চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন। ভাল আঁকেন, কিন্তু কখনও পারিবারিক সমস্যা কখনও আবার পেশাগত ঝুঁকি, নানা কারণে আর চিত্রশিল্পী হিসাবে সমাজকে বড় করে আর বড় করে জায়গা পাননি, সেই সব শিল্পীদের নিয়েই এক অভিনব চিত্র প্রদর্শনী হয়ে গেল উত্তর কলকাতায়। আয়োজকের ভূমিকায় ‘হিজিবিজবিজ সোসাইটি’। প্রায় দশ বছর আগে পথ চলা শুরু হিজিবিজবিজের। বদলের ভাবনা শুরু থেকেই। সেই ভাবনা থেকেই দশ বছরের মাথায় কলকাতার ঐতিহ্যকে পাথেয় করে, ফেলা আসা স্মৃতির পাতায় দোলা লাগাল ‘হিজিবিজবিজ সোসাইটি’।
উদ্যোক্তারা বলছেন, উত্তর কলকাতার সংস্কৃতি-ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই তাঁদের এই ভাবনা, সেখান থেকেই বাস্তবায়ন। ১০ তারিখ থেকে চলছিল এই বিশেষ প্রদর্শনী। শেষ হল ১২ জানুয়ারি। তিন দিনের এই প্রদর্শনীতে মূলত কলকাতার সাবেকিয়ানা, ফেলে আসা রাজবাড়ি, উত্তর কলকাতার সংস্কৃতির পরিমণ্ডলকেই ফুটিয়ে তুলেছেন চিত্র শিল্পীরা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও এসেছিলেন শহরের এক ঝাঁক খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব। ছিলেন বিচার বিভাগের প্রধান সচিব সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলাল। ছিলেন বিধায়ক সুপ্তি পান্ডে। ছিলেন তাঁর মেয়ে শ্রেয়া পাণ্ডেও। ছিলেন স্বামী জ্ঞানলোকানন্দ মহারাজও। প্রায় ৩০ জন চিত্রশিল্পীর ছবি এই প্রদর্শনীতে আলো করে ছিল। জায়গা পেয়েছিল রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দদের মতো মনীষীদের ছবি।
‘হিজিবিজবিজ সোসাইটি’-র অন্যতম উদ্যোক্তা তথা সংস্থার কোষাধ্যক্ষ সিদ্ধার্থ সরকার বলেন, “উত্তর কলকাতা আসলে গোটা কলকাতার সাংস্কৃতিক জগতের প্রাণকেন্দ্র, হাব বলা যায়। তা এখানেই এই অভিনব ভাবনা। যাঁরা অর্থাভাব বা যোগাযোগের অভাবে বড় কোনও জায়গা পায়নি, তাঁদেরই আমরা এই প্রদর্শনীতে জায়গা দেওয়ার চেষ্টা দিয়েছিলাম। আমরা শুরু করেছিলাম ২০ জন শিল্পী নিয়ে। একসময় ১১০ জনও হয়ে গিয়েছিল। উত্তর কলকাতায় ভাল কোনও প্রদর্শনী শালা নেই। তাই প্রদর্শনীর জন্য আমরা পুরনো রাজবাড়িগুলিকেই মূলত বেছে নিই। আগের বছর স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ির ঠাকুর দালানে হয়েছিল। এবারে ২০০ বছরের পুরনো ছাতুবাবু-লাটুবাবুর বাড়ি রামবিলাস নিবাসে আমাদের প্রদর্শনী হল।”