কলকাতা: বঙ্গ রাজনীতিতে তিনি অপরিচিত। কিন্তু বাংলার কোটা থেকে তাঁকেই যুব মোর্চার কেন্দ্রীয় পদ দিয়ে বসেছেন উচ্চ নেতৃত্ব। ফলে ইতিউতি গোঁসার ছবি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। যা নিয়ে তৃণমূল ফের একবার সেই ‘বহিরাগত’ খোঁচাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। কিন্তু বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব এসব বিরুদ্ধ সুরকে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছে না। গোটা বিতর্ক নিয়ে যে তিনি বিন্দুমাত্র ভাবিত নন, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
যাঁকে নিয়ে যাবতীয় বিতর্কের সূত্রপাত সেই নেতার নাম অনিমেষ বিশ্বাস। তাঁকে যুব মোর্চার ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য করা হয়েছে। তিনি বাংলার বাইরের হলেও পশ্চিমবঙ্গের কোটায় তাঁকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে বিজেপির অন্দরমহলে শুরু হয়েছে দড়ি টানাটানি। বাংলায় বিজেপি নেতা নেই বলেই কি এমন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে? খোঁচার সুরে প্রশ্ন করেছেন তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “প্রার্থী না হয় পাওয়া যাচ্ছিল না যার জন্য এতজন দলবদলুকে নিতে হল। এখন কমিটি গড়তে গিয়েও বাংলার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই, বাংলার ভোটার নন, সেই নেতাকে বাংলার কোটায় নিতে হচ্ছে। আসলে বাংলায় নেতাও খুঁজে পাচ্ছে না বিজেপি।”
এক ঘোষকে জবাব দিতে আরেক ঘোষও এগিয়ে এসেছেন। তিনি অবশ্য সুকৌশলে কিছুটা এড়িয়েই গিয়েছেন গোটা বিতর্কটা। কুণালকে পাল্টা দিয়ে দিলীপকে বলতে শোনা যায়, “কুণাল ঘোষ তৃণমূল নিয়ে ভাবুন। তাঁদের নেতারা কবে জেলে যাবেন সেটা নিয়ে ভাবুন। আর আফগানিস্তানের বাঙালিদের বাঁচাতে ব্রাত্যকে নিয়ে উনি চলে যান।” পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, “কমিটিতে কাকে নেওয়া হবে সেটা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অধিকারের মধ্যে পড়ে। আমাদের রাজ্য থেকে অনুপ সাহা নামে একজনকে সহ-সভাপতি করা হয়েছে। তিনি বাংলার কোটাতে গিয়েছেন। এতজন সদস্য হয়। যারা সক্রিয় কর্মী আছেন, নতুন নেতা তৈরি হবেন তাঁদেরকে নেওয়া হয়েছে।”
বিজেপি সূত্রে খবর, বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা অনিমেষ নামক এই যুবা ‘সেভ ইন্ডিয়া’ নামক একটি সংগঠনের প্রধান। ঘটনাচক্রে, এই সংগঠনের পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন বিজেপি নেতা শিবপ্রকাশ, যিনি এ রাজ্যের পর্যবেক্ষক। এই সংগঠন মূলত বিদেশি ভারতীয় তথা হিন্দুদের নিয়ে তৈরি একটি সংগঠন। এ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও প্রচারের কাজে তা ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু দলের অন্দরেই একাংশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কারণ অনিমেষ এ রাজ্যের সংগঠন বা আন্দোলনের সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত নন। অনেকেই প্রকাশ্যে ফেসবুকে এই নিয়ে লেখা শুরু করেছেন। এতদিন এই কমিটিতে বাংলা থেকে তপন শিকদারের ভাইপো সৌরভ শিকদার ছিলেন, এখন তাঁকেও বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে এই বিতর্ক যে নতুন করে বিজেপির অন্দরে অন্তর্কলহের চোরা স্রোত বইয়ে দিচ্ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আরও পডুন: শিল্পায়নের স্বপ্ন দেখানো ভুল ছিল, সংযুক্ত মোর্চা আরও বড় ভুল, লিখিত স্বীকারোক্তি সিপিএম-র