কলকাতা: ডেঙ্গির আতঙ্ক আবারও জাঁকিয়ে বসছে কলকাতায়। কলকাতা পৌরনিগমের ৭৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহাদেব বস্তিতে বাড়ছে ডেঙ্গির ভয়। বিগত ১২ দিন ধরে নোংরা আবর্জনা ভর্তি জলের মধ্য়েই আটকে রয়েছে এলাকা প্রায় ৫০০ টি পরিবার। কার্যতই এলাকার মানুষের মধ্যে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার আতঙ্ক বাড়ছে।
করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে শহরে। কলকাতা পৌরনিগমের তরফে প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষদের সচেতন করা হচ্ছে। এলাকায় কোথায় জল জমে রয়েছে কি না, তাও সরজমিনে ঘুরে দেখতে পৌরনিগমের প্রতিনিধি দল। কিন্তু এরই মধ্যে এক বিচিত্র চিত্র দেখা গেল ডায়মন্ড হারবার রোড সংলগ্ন মহাদেব বস্তিতে।
এলাকার প্রায় ৫০০ পরিবার বিগত ১২ দিন ধরে নোংরা, আবর্জনা যুক্ত জলের মধ্যে আটকে রয়েছেন। ফলে ওই এলাকায় ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কায় ভুগছেন স্থানীয়রা। গোটা এলাকা মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিবাদীবাগ থেকে জোকা পর্যন্ত মেট্রো সংযোগের কাজ চলছে। সেই কাজ করতে গিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ড নিকাশি ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। আর সেই নিকাশি সমস্যার ফল ভুগতে হচ্ছে তাঁদের। কবে এখন এই জল যন্ত্রণা থেকে তাঁরা মুক্তি পাবেন, সেই ভেবেই দুশ্চিন্তা করছেন তাঁরা। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, বিগত ১২ দিন ধরে এই দুর্দশা চলতে থাকলেও কোনও হেলদোল নেই কলকাতা পৌরনিগমের।
এদিকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গির প্রকোপ। বিধাননগর পুর এলাকায় ইতিমধ্যেই অনেকে আক্রান্ত হয়েছে ডেঙ্গিতে। এলাকার বিভিন্ন জায়গায় পরিদর্শনে গিয়ে চোখ কপালে পুর কর্তাদের। করুনাময়ী বাস স্ট্যান্ডের মতো জায়গাতেও মিলেছে মশার লার্ভা। শুধু তাই নয়, বাস স্ট্যান্ডের চারপাশেই ভয় পাওয়ার মতো ছবি দেখা গিয়েছে। হোটেলগুলির ড্রামে রাখা জলে কিলবিল করতে দেখা গিয়েছে লার্ভা। সেই জলেই নাকি হয় হোটেলের রান্না!
দক্ষিণ দমদম পৌরসভা এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কমপক্ষে ২০, যার ফলে জরুরি বৈঠকে বসতে হয়েছিল দক্ষিণ দমদম পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যানসহ প্রসাশক মন্ডলী সদস্যরা। প্রত্যেক বছরই দেখা যায় দক্ষিণ দমদম পুরসভা এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সবথেকে বেশি। সেই কারণে আজ জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারম্যান পুর প্রশাসক পাঁচু রায়।
গত বছর করোনারা প্রকোপের মাঝে ডেঙ্গি জ্বর খুব বেশি ছড়ায়নি। সেই সঙ্গে মনে রাখতে হবে, গত বার এত বেশি বৃষ্টিও হয়নি। ডেঙ্গি মশাবাহিত রোগ হওয়ার কারণে জমা জলে ডেঙ্গির মশা জন্ম নেয় সবথেকে বেশি। ঠিক যে কারণে ডেঙ্গি থেকে বাঁচার জন্য জল যাতে কোথাও না জমে সে দিকে নজর দিতে বলা হয়। কিন্তু বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে গোটা দক্ষিণবঙ্গেই জল জমে একাকার পরিস্থিতি। তাই ডেঙ্গি নিয়ে বেড়েছে উদ্বেগ।
আরও পড়ুন : Dengue: শিয়রে করোনা কাঁটা, জেলায় দাপট ডেঙ্গুর, বিপদের সিদুঁরে মেঘ দেখছে প্রশাসন