কলকাতা: জামিন পেতে মরিয়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আপাতত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও ঝেড়ে ফেলতে চান তিনি। যদিও আদালত তাঁদের সম্পর্ককে খুব ‘সাধারণ’ বলে মানতে নারাজ। পার্থ জামিন মামলায় আবারও প্রভাবশালী প্রসঙ্গ উঠে এল। বৃহস্পতিবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে ছিল পার্থর জামিনের আবেদনের মামলার শুনানি। বিচারপতি মন্তব্য করেন, উভয়ের সম্পর্ক সাধারণ নয়।
এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায়। পার্থর বক্তব্য, ‘যার কাছে টাকা তিনি যদি অস্বীকার করেন তাহলে আমার কী করার আছে? অর্পিতা বাচ্চা দত্তক নিতে চেয়েছিলেন। তার খারাপ মানসিকতা কীভাবে জানব? একটা খামে আমার নাম লেখা ছিল মানে সেটাই দুর্নীতির প্রমাণ, এটা কীভাবে সম্ভব? যদি সব স্বীকারও করা হয় তার মানেও এটা নয় যাবতীয় জিনিসের মালিক আমি।’ প্রসঙ্গত, আগেই ইডির তরফে দাবি করা হয়, সন্তান দত্তক নিতে চেয়েছিলেন অর্পিতা। সে কথা জানিয়েছিলেন পার্থকে। পার্থ তাতে সম্মতিও জানিয়েছিলেন।
একইসঙ্গে পার্থর আইনজীবী বলেন, ‘জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্যের মামা কোনও স্কুল করে থাকলে কি আমার দোষ? মামা বলেছেন জামাইকে বলতে শুনেছেন যাবতীয় টাকা পার্থ দিয়েছে। সেটাই কি প্রমাণ হতে পারে?’
পার্থর আইনজীবীর দাবি, এই তদন্ত পক্ষপাতদুষ্ট। এটা কোনও স্বাধীন তদন্ত হতে পারে না। অর্পিতা প্রথমে বলেননি, সাতদিন পর ইডিকে জানান এটা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সম্পত্তি।
বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের প্রশ্ন, ‘যারা অভিযুক্ত, তাদের মধ্যে কে এত টাকার জোগান দিতে পারে?’ পার্থর আইনজীবী বলেন, ‘আমার কোনও ধারণা নেই।’ এদিন আদালতে প্রশ্ন ওঠে পার্থ-অর্পিতার সম্পর্কের গভীরতা নিয়ে। এত টাকা অর্পিতার বাড়ি থেকে পাওয়া গিয়েছে মানে তাঁর সঙ্গে শিক্ষা দফতরের সুসম্পর্ক ছিল, নয়ত পার্থ-অর্পিতার সম্পর্কের গভীরতা সাধারণ নয়।
বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বক্তব্য, ‘কোনও সাধারণ সম্পর্ক নয় এ থেকে স্পষ্ট। আপনি ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন। তাছাড়াও আপনি প্রভাবশালী। অনেকে আপনাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত ছিলেন।’ পার্থ বলেন, ‘এটা ভুল ধারণা। আমি প্রভাবশালী নই।’ এদিনও জামিন-জট রয়ে গেল পার্থর। পিছিনে গেল জামিনের সিদ্ধান্ত।