কলকাতা: ফের একবার সিবিআই দফতরে হাজিরা এড়ালেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chattejee)। গত সপ্তাহেই তাঁকে নোটিশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI)। সেই নোটিস অনুযায়ী, আজ সোমবার তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি এ দিন সিবিআই দফতরে যাননি। ভবানীপুরের উপ নির্বাচন ও বয়সজনিত কারণ দেখিয়ে সিবিআই-কে একটি চিঠি দিয়েছেন পার্থ। এর আগে পরপর দু’বার তাঁকে নোটিস দিয়েছিল সিবিআই। একবারও হাজিরা দেননি তিনি। আইকোর মামলা সংক্রান্ত জিজ্ঞসাবাদ করার জন্যই তলব করা হয়েছিল তাঁকে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় চিঠিতে জানিয়েছেন, চাইলে তাঁর বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন সিবিআই আধিকারিকরা।
অর্থলগ্নিকারী সংস্থা আইকোর সংক্রান্ত মামলার তদন্তে তৃণমূলের মহাসচিবকে আগেও তলব করেছে সিবিআই। কলকাতায় সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল এবার। এর আগেও পরপর দু’বার তাঁকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের আগে ব্যস্ত থাকার কারণ দেখিয়ে সেই হাজিরা এড়িয়ে যান তিনি। ভোট মিটে গেলে হাজিরা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন পার্থ। তাই ফের একবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে তলব করা হয় এ বার। কিন্তু এবারও সেই একই কারণ দেখিয়েছেন তিনি। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরে উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়েছে। সেই নির্বাচনে বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। তাই এই পরিস্থিতিতে তিনি কি হাজিরা দিতে চাইবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল আগেই।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, চিঠিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, একদিকে নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত আছেন তিনি। পাশাপাশি, বয়সজনিত কারণেও যেতে পারছেন না। সিবিআই যদি চায়, তাহলে তাঁর বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। সিবিআই সেই প্রস্তাবে রাজি হবে কি না, তা জানা যায়নি।
ভুঁইফোড় অর্থলগ্নিকারী সংস্থা আইকোর-এর একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, ওই সংস্থার কর্তাদের ভূয়ষী প্রশংসাও করতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। কেন রাজ্যের একজন বিধায়ক তথা প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে এরকম একটি অনুষ্ঠানে হাজির হলেন তিনি, তা নিয়েই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সিবিআই।
কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, আইকোরের ওই অনুষ্ঠানে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরকারি সাহায্যের কথা বলতে শোনা গিয়েছিল। একটি বেসরকারি চিটফান্ড সংস্থাকে কী ভাবে অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে একজন মন্ত্রী সাহায্যের কথা বলতে পারেন? আইকোর সংস্থার সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক? তাঁর সঙ্গে ওই সংস্থার কোনও ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়েছিল কি? এই সংক্রান্ত প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পারেন তিনি। সূত্রের খবর, তাঁর বয়ান রেকর্ডও করতে চায় সিবিআই। আইকোর সংস্থার কর্ণধার অনুকূল মাইতিকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এই অনুকূল মাইতির প্রশংসাও শোনা গিয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। তাঁর সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোনও রকম যোগাযোগ রয়েছে কি না সেটার জানার চেষ্টা করছে সিবিআই। অন্যদিকে কয়লা কেলেঙ্কারিতে বারবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস দিচ্ছে ইডি। ইতিমধ্যেই দিল্লিতে ইডির দফতরে তাঁকে টানা ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় একদিন।
আরও পড়ুন: Bhabanipur By-Election: ‘ইতিহাস ঘুরে ফিরে আসে’, ফিরহাদকে বার্তা দিলীপের