Recruitment Scam: আদালতে ‘প্রিভিলেজড’ পার্থর পাশে বসে সুবীরেশরা, কেন দাঁড়িয়ে প্রদীপ-প্রসন্ন? প্রশ্ন বিচারকের
Recruitment Scam: এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন সদস্য শান্তি প্রসাদ সিনহা, অশোক সাহা সহ প্রত্যেকেই জামিনের আর্জি জানান। কিন্তু তাঁদের আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে আলিপুরে সিবিআই বিশেষ আদালতে।
কলকাতা : একসময় শাসক দলের প্রথম সারিতে থাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এখন দিন কাটাচ্ছেন জেলে। নির্দিষ্ট দিনে গিয়ে আদালতে বসে থাকতে হয় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে। গত বছরের অগস্ট মাস থেকে এমনই ‘রুটিন’ তাঁর। বৃহস্পতিবারও সেভাবেই আদালত কক্ষে বসেছিলেন তিনি। পাশে বসেছিলেন তাঁর একসময়ের সতীর্থরা। হঠাৎই তাঁদের দিকে চোখ পড়ে যায় বিচারকের। তিনি দেখেন, পাশাপাশি বসে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিনহা, অশোক সাহা। এরা প্রত্যেকেই একসময় শিক্ষক নিয়োগের সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে যুক্ত ছিলেন। বিচারক খেয়াল করেন, তাঁদের পিছনে দাঁড়িয়ে আছেন প্রদীপ সিং ও প্রসন্ন রায়। এই দুর্নীতিতে যাঁরা মিডলম্যানের ভূমিকা নিয়েছিলেন বলেই অভিযোগ। এই দৃশ্য দেখেই বিচারক প্রশ্ন তোলেন, বাকিরা বসে থাকলে প্রদীপ, প্রসন্ন কেন দাঁড়িয়ে?
নিয়োগ মামলার শুনানি যখন চলছে, তার মধ্যেই বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘ওঁরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন কেন?’ তারপর বলেন, ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রিভিলেজড। উনি বসে আছেন ঠিক আছে। বাকিরাও যদি বসে থাকতে পারেন, তাহলে প্রদীপ, প্রসন্ন কেন দাঁড়িয়ে? এটা তো দৃষ্টিকটু! সকলের একই অধিকার থাকার কথা।’ তাঁদেরও বসার জায়গা করে দেওয়ার কথা বলেন আলিপুর সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারক অর্পণ কুমার চট্টোপাধ্যায়।
প্রতিদিনের মতোই এদিন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রসন্ন। তিনি বিচারকের কথা শুনে বলেন, আমরা এখানেই ঠিক আছি স্যার। আমরা ওঁদের থেকে ইয়ং, এখানে অসুবিধা নেই। উল্লেখ্য, পার্থর জামিনের বিরোধিতায় সওয়াল করতে গিয়ে সিবিআই বারবার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে প্রভাবশালী বলে উল্লেখ করেছে। আর এদিন বিচারকও তাঁকে প্রিভিলেজড বলেই উল্লেখ করলেন।
এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন সদস্য শান্তি প্রসাদ সিনহা, অশোক সাহা সহ প্রত্যেকেই জামিনের আর্জি জানান। কিন্তু তাঁদের আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে আলিপুরে সিবিআই বিশেষ আদালতে। ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁদের। এসপি সিনহার বক্তব্য, তাঁকে ছেড়ে দিলেও তিনি তদন্তে প্রভাব খাটাতে পারবেন না, এসএসসি অফিসেও যাবেন না। পাশাপাশি, তিনি যে প্রথম থেকেই তদন্তে সহযোগিতা করেছেন, সেই দাবিও করেছেন এসপি সিনহা।
অন্যদিকে, বিচারক এদিন কেন্দ্রীয় সংস্থার সিবিআই-এর কাছে জানতে চান, যে সব চাকরি প্রার্থীরা প্রতারণা করেছেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ, বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে কি না। উত্তরে সিবিআই জানিয়েছে, বেশ কয়েকজন প্রার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
পরবর্তীতে বিচারক আরও বলেন, ‘আপনারা তো একটা চেন পেয়েছেন। ওটা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা যায় কি না দেখুন।’ উত্তরে সিবিআই বলে, ‘দেখছি স্যার।’ তদন্তে গতি নিয়ে আসার বিষয়ে তৎপর হওয়ার কথাও বলেছেন বিচারক।