কলকাতা: দফায় দফায় বৈঠক, বহু অনুনয়-আর্তি! কাজ হয়নি কোনও কিছুতেই। আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (RG Kar Medical College) অব্যবস্থা এখনও চূড়ান্ত। কাটেনি অচলাবস্থা। এবার অচলাবস্থা কাটাতে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা।
হবু ও জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান বিক্ষোভ, অনশনের কারণে হাসপাতালে পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন নন্দলাল তিওয়ারি নামে জনৈক এক ব্যক্তি। অবিলম্বে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে এই মামলা দায়ের করেন নন্দলাল। আগামী সোমবার প্রধান বিচারপতি বা অন্য কোনও বিচারপতি এই মামলা শুনতে পারেন।
হাসপাতালের অচলাবস্থা কাটাতে যেমন আদালতের হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই মামলাকারীর আবেদন, পড়ুয়ারা কী বলতে চাইছেন, কোনও পথে এর সমাধান সম্ভব সেদিকেও যদি আদালত আলোকপাত করেন। তাঁর আর্জি, ভবিষ্যতে যেন এরকম পরিস্থিতি তৈরি না হয় তার একটা স্থায়ী সমাধান হওয়া দরকার।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এখন কলকাতা হাইকোর্টে ছুটি চলছে। অবসরকালীন বেঞ্চ শুরু হবে ২৫ অক্টোবর থেকে। তার মধ্যে শনিবার হাইকোর্টে শুধুমাত্র এই মামলাটি দায়ের করার জন্য আলাদা করে বিশেষ অনুমতি নিয়ে আদালত খোলানো হয়। অর্থাৎ কলকাতা হাইকোর্টও যে আলাদা করে এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে, এদিনের মামলা গ্রহণের প্রক্রিয়া থেকেই তা স্পষ্ট। আগামী সোমবার এই মামলাটি প্রধান বিচারপতি শুনতে পারেন। আবার সেদিন এক বিচারপতির শপথগ্রহণও রয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি মামলাটি না শুনতে পারলে অন্য কোনও বিচারপতি এই মামলাটি শুনতে পারেন।
গত কয়েকদিন ধরে আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে। একদিকে অধ্যক্ষকে পদচ্যুত করতে চেয়ে হবু ডাক্তারদের অনশন চলছে। অন্যদিকে কর্তৃপক্ষও কঠোর ভাবে জানিয়েছে, কাজে যোগ না দিলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই দুই পক্ষের দাবির বৈপরিত্য সব থেকে বেশি বিপাকে ফেলেছে সাধারণ মানুষকে। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, তাঁদের ভিলেন বানানো হচ্ছে। আসলে সমস্ত দায় কর্তৃপক্ষেরই।
যদিও শনিবার কালো ব্যাজ পরে ওয়ার্ডে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার কাজ শুরু করলেন আরজিকরের পিজিটি-হাউসস্টাফরা। বিভিন্ন বিভাগের সিনিয়র চিকিৎসকদের সমর্থনে তাঁদের স্যারদেরও ব্যাজ পরালেন আন্দোলনকারীরা। ডিউটিতে না থাকলে অ্যাবসেন্ট করা হবে, এ কথা বলার পরই কাজে যোগ দেন পিজিটিরা। কাজে যোগ দিলেও আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন যে পিজিটি, হাউসস্টাফ-সহ সিনিয়র চিকিৎসকদের রয়েছে তা বোঝাতেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সরকারি চিকিৎসকদের একাংশ।
প্রসঙ্গত, এ সপ্তাহের শুরুতেই পিজিটিদের উদ্দেশে একটি নোটিস জারি করে কর্তৃপক্ষ। তাতে বলা হয়, যদি তাঁরা কাজে যোগ না দেন, তাহলে তাঁদের নামের পাশে অনুপস্থিত বলে উল্লেখ করা হবে। অর্থাৎ ডিউটি রোস্টারে তাঁদের অনুপস্থিত বলে ধরা হবে। এরপরই দেখা যায় পিজিটি চিকিৎসকরা আন্দোলন মঞ্চ থেকে সরে যান।
আরও পড়ুন: CM Mamata Banerjee: গোয়া সফরের জন্য মুখিয়ে মমতা, সাগরতীরে ‘নতুন ভোর’ই লক্ষ্য