কলকাতা: রাজ্যে শিশুদের টিকাকরণের ক্ষেত্রে সুখবর। আজ থেকে শিশুদের টিকাকরণ কর্মসূচিতে নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন (pneumococcal vaccine) দেওয়া শুরু হল। এতদিন খোলাবাজার থেকে চড়া দামে কিনতে হত এই ভ্যাকসিন।
আজ, শুক্রবার থেকে নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন রাজ্যে টিকাকরণ কর্মসূচিতে যুক্ত হল। এই ভ্যাকসিনটি শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর। নিউমোনিয়ায় প্রতি বছরই রাজ্যে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটত। শিশু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন বাজারে বিনা মূ্ল্যে পাওয়া যায়, তাহলে রাজ্যে শিশু মৃত্যুর হার আরও কমে যাবে।
এই ভ্যাকসিনটা আগে বাইরে থেকে চড়া দামে কিনতে হত। চিকিত্সকদের পরামর্শের পরও আর্থিক কারণে অনেক বাবা-মা সেই ভ্যাকসিন শিশুদের দিতে পারতেন না। এক-একটা ভ্যাকসিনের ডোজ়ের নাম ২৪০০-৩৮০০টাকা। তিন থেকে চারটি ভ্যাকসিন নিতে হত।
কেন্দ্রের তরফে এক লক্ষ ভ্যাকসিন প্রাথমিকভাবে এসেছে। ট্রেনিংও শুরু হয়ে গিয়েছে। আজ থেকে টিকাকেন্দ্রে নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত অগাস্টেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সদ্যোজাত থেকে এক বছরের শিশুদের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। শিশুদের রুটিন ইমিউনাইজেশন পিসিভি এতদিন ছিল না। নিউমোনিয়া রোধে এই টিকা বাইরে থেকে কিনতে হত। দাম বেশি হওয়ায় অনেকেই তা কিনতে পারতেন না।
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, “নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন পাইলট প্রজেক্টে ছোট ছোট ভাবে দেওয়া হত। সবাইকে দেওয়া হত না। পশ্চিমবঙ্গের সরকারি সেন্টারগুলি থেকে শিশুরা এই ভ্যাকসিন পায় না। বেসরকারিভাবে এই ভ্যাকসিন নেওয়ার শতাংশ অনেকটাই কম। ফলে নিউমোকক্কাল ইনফেকশনটাও বেশি হয়।”
প্রসঙ্গত, রাজ্যে কিছুদিন আগেই অজানা জ্বরের প্রকোপ মারাত্মক আকার নিয়েছিল। উত্তরবঙ্গে শিশু মৃত্যুর হার নজিরবিহীন। দক্ষিণেও তা বিস্তার লাভ করছিল। প্রশ্ন হচ্ছে, এই ভ্যাকসিন আগে থেকে কি শিশু মৃত্যুর হার কমানো যেত?
এ প্রসঙ্গে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ দীব্যেন্দু রায় চৌধুরি বলেন, “জ্বরের কারণ বিবিধ আছে। আগে যে শিশু মৃত্যুর কারণ ঘটছিল, সেটা ভাইরাল ফিভার ছিল। তার সঙ্গে কিছু ডেঙ্গি ছিল, ম্যালেরিয়া ছিল। সেই কারণেই ভাইরাসের জন্য নিউমোনিয়া হয়েছিল। ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়ার সংখ্যা ওত ছিল না।”
এই ভ্যাকসিন কীভাবে কাজ করবে? উত্তরে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ জানান, “এই নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন মূলত নিউমোকক্কাল অর্গানিজমের বিরুদ্ধে কাজ করবে। এই ভ্যাকসিন বাজারে এলেও, অজানা জ্বরের প্রকোপ যে এখনই কমে যাবে, তা কিন্তু নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।” তবে এই ভ্যাকসিন নিয়ে আশাবাদী চিকিত্সকরা।
আরও পড়ুন: R G Kar Hospital: স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে বৈঠক! আজই কি অনশন তুলে নেবেন জুনিয়র ডাক্তাররা?
আরও পড়ুন: নতুন ভোরের আশ্বাস নিয়ে তাঁর সফর-গোয়া, দিনভর ঠাসা কর্মসূচি মমতার