কলকাতা: শুক্রবার বিধানসভা অভিযান রয়েছে এসএফআইয়ের। শিয়ালদহ ও হাওড়া থেকে দুটি মিছিল করার কথা ছিল। কিন্তু সেই কর্মসূচিতে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। যদিও সৃজন ভট্টাচার্য গতকালই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, পুলিশি অনুমতিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না তাঁরা। হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মিছিল হবেই। পুলিশের তরফেও সেই মতো প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছিল। এদিন এসএফআই-এর মিছিল শুরু হতেই ধুন্ধুমার পরিস্থিতি শিয়ালদহ চত্বরে। সেখানে ইতিমধ্যেই মিছিল আটকে দিয়েছে পুলিশ। এসএফআই-এর কর্মী ও সমর্থকদের প্রিজন ভ্যানেও তুলে ফেলেছেন পুলিশকর্মীরা।
বিধানসভা চত্বর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছেন এসএফআই-এর কর্মী ও সমর্থকরা। বিধানসভার গেটে উঠে চলে বিক্ষোভ প্রদর্শন। এরই মধ্যে এসএফআই রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বচসা, ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন পুলিশকর্মীকে। বিধানসভার গেটে উঠে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন সৃজন। টানতে টানতে তাঁকে তোলা হয় পুলিশের গাড়িতে। পুলিশের গাড়ি থেকেই সৃজন বললেন, ‘আমরা বলেছিলাম বিধানসভায় আসব, এসে গিয়েছি। চ্যালেঞ্জ অ্যাকসেপ্টেড।’
শিয়ালদহ স্টেশন চত্বর থেকে হঠাৎ করে একটি বড় মিছিল করে বেরিয়ে আসেন এসএফআই কর্মী ও সমর্থকরা। পুলিশি বাধা অতিক্রম করে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ পার করে এমজি রোড ধরে অনেকটাই এগিয়ে আসেন বাম ছাত্র যুবরা। মিছিল করে তাঁরা এগিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, ‘বিধানসভায় আমরা যাবই, কীভাবে যাব পুলিশ ঘরে বসে দেখুক।’
হাওড়াতেও ধুন্ধুমার পরিস্থিতি এসএফআই-এর মিছিল ঘিরে। মিছিল শুরুর আগেই প্রিজন ভ্যানে তোলা হল এসএফআই নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের। একটি মিছিল হাওড়া স্টেশন চত্বর অতিক্রম করে বেরিয়ে যেতেই, পরের মিছিলগুলিকে আটকে দেয় পুলিশ। প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়েছে দীপ্সিতাদেরও।
হাওড়া স্টেশন চত্বরে রয়েছেন এসএফআই নেত্রী দীপ্সিতা ধরও। পুলিশের এই ধরনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র অসন্তোষের কথা শোনালেন তিনি। বললেন, ‘সরকার ও সরকারের পোষা পুলিশ ভয় পাচ্ছে। তারা ভাবছে, সাধারণ মানুষ প্রশ্ন করলেই তৃণমূল সরকারের মুখোশ খুলে পড়ে যাবে। আমরা কোনও সংঘাতে যেতে চাই না। আমরা আমাদের দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা বলার অধিকার রয়েছে। বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে লড়াই হবে।’
হাওড়া স্টেশন চত্বরের বাইরেও কড়া পুলিশি নজরদারি। স্টেশন চত্বরের ভিতরে প্রচুর এসএফআই কর্মী ও সমর্থক ভিড় করতে শুরু করেছেন। জমায়েত হতে শুরু করেছে হাওড়া স্টেশন চত্বরে।
শিয়ালদহ স্টেশন চত্বর ছেড়ে যাতে এসএফআই-এর মিছিল বেরোতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে চাইছে পুলিশ। কোনও জমায়েত যাতে না হয়, তার জন্য কলকাতা পুলিশের বিশেষ বাহিনী সেখানে মোতায়েন রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছেন উইনার্স টিমের মহিলা পুলিশকর্মীরাও। কাউকে এসএফআই কর্মী ও সমর্থক বলে সন্দেহ হলেই তাঁদের আটক করা হচ্ছে।
শিয়ালদহ চত্বর থেকে মিছিল শুরু হওয়ার আগেই তা আটকে দিল পুলিশ। অনুমতি না থাকা এই কর্মসূচি রুখতে তৎপর পুলিশ প্রশাসন। একেবারে শিয়ালদহ স্টেশনের সামনে পৌঁছে গিয়ে পুলিশ টহলদারি চালাচ্ছে। সঙ্গে রয়েছেন মহিলা পুলিশকর্মীরাও। মিছিল শুরুর আগে শিয়ালদহ চত্বরে কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক দেবাঞ্জন দে ও আসিফ নিসার দাঁড়িয়েছিলেন, তখনই তাঁদের কার্যত চ্যাংদোলা করে, কাঁধে তুলে প্রিজন ভ্যানে করে থানার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।