কলকাতা: দুর্গোৎসব শেষ। দশমীতে উমার বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে আসন্ন লোকসভার ঢাকেও কাঠি পড়ে গেল। বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে এবারের পুজোর মধ্য দিয়ে জনসংযোগে আরও বেশি করে শান দিয়ে নিলেন রাজনীতিকরা। সুরুচি থেকে শুরু করে চেতলা, শ্রীভূমি… বিভিন্ন পুজো মণ্ডপগুলিতে মানুষকে আরও কাছে টানার চেষ্টা দেখা গেল অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, সুজিত বসুদের। একইভাবে মধ্য কলকাতার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজোতে বিজেপি নেতা সজল ঘোষকে অনেকটা সময় দিতে দেখা গেল।
কাতারে কাতারে মানুষের ভিড় নেমেছিল লেবুতলা পার্কের ‘রামমন্দির’ দেখতে। ভিড় সামাল দিতে কার্যত হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশকে। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে লেবুতলা পার্কের মণ্ডপে যাওয়ার একাধিক রাস্তাও সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছিল। আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক টানাপোড়েন। সজল ঘোষ সেই রাতেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিজেপির অনেক নেতাই এই ইস্যুটিকে হাতিয়ার করতে শুরু করেছেন।
যদিও রাজ্যের মন্ত্রী তথা চেতলা অগ্রণীর পুজোর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ফিরহাদ হাকিম বলছেন, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। তাঁর বক্তব্য, “পুলিশকে পুলিশের কাজ করতে দিতে হবে। আমার চেতলা অগ্রণীর পুজোতেও একবার মাত্রাতিরিক্ত ভিড় হয়ে গিয়েছিল। ব্যারিকেড ভেঙে পড়ে গিয়েছিলেন জাভেদ শামিম। কিছুক্ষণের জন্য আমাদের পুজোয় দর্শনার্থীদের ঢোকা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পুলিশকে পুলিশের কাজ করতে দিতে হবে। যদি কেউ পদপিষ্ট হয়ে যায়, তখন তো পুলিশের দোষ হয়ে যাবে।”
উল্লেখ্য, পুজোর মরশুমকে সামনে রেখে আমজনতার আরও কাছে পৌঁছে যেতে কোনও খামতি রাখেনি বিজেপি ও তৃণমূল। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজোর উদ্বোধন করে গিয়েছেন অমিত শাহ। পরে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাও শহরে এসেছেন। ঠাকুর দেখেছেন। কলকাতার পুজো দেখে গিয়েছেন ধর্মেন্দ্র প্রধান, তেজস্বী সূর্যরাও।
এদিকে তৃণমূলের আবার পুজোর জনসংযোগে বড় চমক ছিল রোনাল্ডিনহো। শ্রীভূমির পুজো থেকে শুরু করে শুরু করে পুজোর মরশুমে কয়েকটা দিন সব নজর ছিল রোনাল্ডিনহোর দিকে। ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাবের সঙ্গে শ্রীভূমির ফ্রেন্ডলি ম্যাচ দেখতেও অভিষেকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা।
আবার পুজো মিটতেই শহরে পুজোর কার্নিভাল। শুক্রবার রেড রোডে পুজোর কার্নিভালে অংশ নেবে শহর ও শহরতলির শতাধিক পুজো কমিটি। পুজোর উদ্বোধন ভার্চুয়ালি করলেও কার্নিভালে থাকার কথা রয়েছে মমতার।
এদিকে বিজেপিও বিজয়া উপলক্ষ্যে জনসংযোগে জোর দিয়েছে। বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার বলছেন, “বিজয়া দশমী নিয়ে বিজেপি কখনও রাজনীতি করেনি। কিন্তু বিজয়া দশমী নিশ্চয়ই জনসংযোগের একটা মাধ্যম।”