কলকাতা : ভবানীপুরের উপনির্বাচনে রেকর্ড ব্যবধানে জিতেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের থেকে তাঁর প্রাপ্ত ভোটের ব্যবধানে প্রায় ৬০ হাজারের কাছাকাছি। কিন্তু তাতে কী! মমতার নাকি গ্রহণযোগ্যতা কমে গিয়েছে। এমনটাই মনে করছেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য।
টুইটারে অমিত মালব্য লিখেছেন, “এই জয় (ভবানীপুর) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য একটি অপমানজনক জয়। রাজ্যে অবস্থা ভয়ঙ্কর, ভোট পরবর্তী হিংসার আতঙ্ক , রাজ্যজুড়ে ভয়ভীতি এবং অন্ধকারের ছায়া ক্রমেই বাড়ছে বাংলায়।” তিনি আরও লিখেছেন, “২০১১ সালের তুলনায় তাঁর (মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের) প্রাপ্ত ভোটের হার কমেছে। ৭৭.৪৬ শতাংশ থেকে তা নেমে এসেচে ৭১.৯০ শতাংশে। নন্দীগ্রামে যা হয়েছে, তা মমতার জনপ্রিয়তাকে থমকে দিয়েছে।”
ভবানীপুরে বিজেপিকে বড় ধাক্কা দিয়েছে ৬৩ নম্বর, ৭৪ নম্বর ও ৭১ নম্বর ওয়ার্ড। ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডে অবাঙালি আধিপত্য বেশি। মোট ভোটারদের মধ্যে ৫০ শতাংশ এই ওয়ার্ডে অবাঙালি। কিন্তু এই তিন ওয়ার্ডেও লিড টানতে পারেননি প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। কিন্তু তাতে হাল ছাড়তে চাইছেন না বিজেপি নেতারা। যেমন, অমিত মালব্যর বক্তব্য, এই ভবানীপুরের ভোট নাকি ইঙ্গিত দিচ্ছে মমতার গ্রহণযোগ্যতা কমে গিয়েছে।
এদিকে ভোটের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পরই ক্ষোভে রীতিমতো ফেটে পড়েন বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। তাঁর হতাশার অন্যতম কারণ যে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা থেকেও লিড না পাওয়া, সেটাও চেপে রাখেননি তিনি। ফল ঘোষণা হওয়ার পরই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রিয়াঙ্কা বলেন, “ভোটের দিন কী ভাবে রিগিং করতে হয় সেটা আপনাদের মাধ্যমেই দেখেছি। তাই ওঁদের রিগিং করে জেতার জন্য, ছাপ্পা ভোট মেরে জেতার জন্য শুভেচ্ছা জানাই।” কোথায় কোথায় রিগিং হয়েছে? প্রশ্ন করায় প্রিয়াঙ্কা বলেন, “সবকটা ওয়ার্ডে ছাপ্পা ভোট পড়েছে।”
এর আগে তৃণমূল সুপ্রিমোকে আক্রমণ শানিয়ে বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য আরও এক টুুইট করেছিলেন। টুইটে তিনি দাবি করেছিলেন, নন্দীগ্রামের হারের পর ভুয়ো ভোটে নির্ভর করেই জিততে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন ছিল, ‘একজন মুখ্যমন্ত্রীর কি ভু্য়ো ভোটের রায় মানায়?’ তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘ভুয়ো ভোটের অতিমারি থাবা বসিয়েছে ভবানীপুরে।
উল্লেখ্য়ে সম্প্রতি ভবানীপুর উপনির্বাচনকে কেন্দ্র আরও এক টুইট করেছিলেন মালব্য। সেখানে তিনি লিখেছিলেন ‘৭৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোট চাইতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৬ আনা মসজিদে গিয়েছিলেন।’ ইমামদের সঙ্গে বৈঠকের সময় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ দিন হাজির ছিলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও।
বিশেষত, যেভাবে সংখ্যালঘুরা লাগাতার রাজ্যের শাসকদল ও নেত্রীর প্রতি আস্থা দেখিয়েছেন, সেই ভোটে ভর করেই তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরা। তবে এবার যে যে এলাকায় অবাঙালি ভোটারের সংখ্যা বেশি, সেখানেও কোনওরকম সাহায্য পাননি বিজেপি প্রার্থী।
আরও পড়ুন : Bhabanipur Bypoll Results 2021: ভবানীপুরে বিপুল জয় মমতার, বদলে নেত্রীর কাছে কী চাইলেন ‘ভোট সেনাপতি’ ফিরহাদ?