৩ মাস ধরে লাশকাটা ঘরে রাখা দেহ! বিজেপি কর্মীর মেডিক্যাল-নথি চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন সিবিআইয়ের

Post Poll Clash: সোমবারই অভিজিতের দাদাকে ডেকে পাঠানো হয় নিজাম প্যালেসে। সূত্রের খবর, এদিন অভিজিৎ সরকারের মোবাইল ফোনে থাকা বেশ কিছু ভিডিয়ো নিয়ে তদন্তকারীদের সঙ্গে কথা বলেন বিশ্বজিৎ।

৩ মাস ধরে লাশকাটা ঘরে রাখা দেহ! বিজেপি কর্মীর মেডিক্যাল-নথি চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন সিবিআইয়ের
নিজস্ব চিত্র।

| Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Aug 31, 2021 | 5:23 PM

কলকাতা: অভিজিৎ সরকারের মৃত্যুর মেডিকেল রিপোর্ট সংক্রান্ত নথি চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানাল সিবিআই। রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে আবেদন জানিয়েছে সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। এখনও অভিজিৎ সরকারের দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাইকোর্টে রয়েছে। সেই রিপোর্ট দেখতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এই সংস্থা। মঙ্গলবার সেই আর্জি নিয়ে হাইকোর্টে যায় তারা।

একুশের বিধানসভা ভোটের আবহে একাধিক বিজেপি কর্মীকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বার বার। সেই তালিকায় প্রথম নামই কাঁকুরগাছির অভিজিত সরকারের ভোটের দিন গলায় তার পেঁচানো মৃতদেহ উদ্ধার হয় অভিজিৎ সরকারের। তাঁর পরিবারের প্রথম থেকেই দাবি ছিল, বিজেপি করার অপরাধেই অভিজিৎকে খুন করা হয়েছে। এই নিয়ে মামলাও হয়। একই সঙ্গে অভিজিৎ সরকারের মৃতদেহ এখনও অবধি মর্গে রাখা। পরিবারের এমনও সংশয় রয়েছে, এই দেহ আদৌ অভিজিৎ সরকারের কি না।

সম্প্রতি সিবিআই দফতরে গিয়েছিলেন আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল। তাঁর বক্তব্য ছিল, “রাজ্যজুড়ে বিজেপি কর্মীদের উপর অত্যাচার চলছে। অভিজিৎ সরকারকে খুনের পর এখন অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ সরকার ও তাঁর মাকে ভয় দেখানো হচ্ছে। চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। তৃণমূলের গুণ্ডাবাহিনী তো ভয় দেখাচ্ছেই। ওখানকার নেতারাও দেখাচ্ছে।” সেদিনই প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল জানিয়েছিলেন, “যেহেতু সোমবার ছুটি, মঙ্গলবার সিবিআই হাইকোর্টের কাছে আবেদন জানাবে যাতে ডিএনএ ও অটোপসির রিপোর্ট পেতে পারে।” সেই মতোই এদিন দেখা গেল সিবিআই আদালতে গিয়ে অভিজিৎ সরকারের মৃত্যুর মেডিকেল রিপোর্ট সংক্রান্ত নথি চেয়ে আবেদন জানায়।

সোমবারই অভিজিতের দাদাকে ডেকে পাঠানো হয় নিজাম প্যালেসে। সূত্রের খবর, এদিন অভিজিৎ সরকারের মোবাইল ফোনে থাকা বেশ কিছু ভিডিয়ো নিয়ে তদন্তকারীদের সঙ্গে কথা বলেন বিশ্বজিৎ। তাঁর বক্তব্য, অভিজিৎ সম্ভবত আগেই বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি খুন হতে পারেন। সেই জন্যই নিজের মোবাইল ফোন লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে মনে করছেন বিশ্বজিৎ। সূত্রের খবর, মোবাইল ফোনে অভিজিতের মৃত্য়ুর আগের মুহূর্তের বেশ কিছু ভিডিয়ো রয়েছে। সেগুলি তদন্তকারীদের কাজে লাগতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্বজিৎ। সেই ভিডিয়ো নিয়েই সোমবার সিবিআই দফতরে হাজির হন তিনি।

বিজেপির অভিযোগ- লাগাতার খুন, ধর্ষণ, মারধর, লুঠপাট, হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের নেতা-কর্মীদের। পুলিশের ভূমিকাও এ ক্ষেত্রে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীরা। এরপরই আদালতে একের পর এক মামলা দায়ের হতে থাকে। সব ক্ষেত্রেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলা হয়। সে সব মামলার শুনানি যত এগিয়েছে, ততই রাজ্যকে আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে। রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও রিপোর্টে কোণঠাসা করেছে বাংলার আইনশৃঙ্খলাকে। সবদিক নজরে রেখে গত ১৯ অগস্ট এই মামলার তদন্তের ভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আরও পড়ুন: বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরলেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, ৬ মাসের জল্পনা মিটিয়ে বললেন ‘ঘরের ছেলে, ঘরে ফিরে এসেছি’