কলকাতা: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় দ্বিতীয় চার্জশিট পেশ করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বা সিবিআই। বিজেপি কর্মী জয়প্রকাশ যাদব খুনে ব্যারাকপুর আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে তারা। চার্জশিটে নাম রয়েছে টুনটুন চৌধুরী নামে একজনের। এ ছাড়াও আরও তিনজনের নাম রয়েছে সেখানে। তদন্ত ভার গ্রহণের দু’ সপ্তাহের মধ্যেই দু’টি চার্জশিট জমা দিল গোয়েন্দারা। বৃহস্পতিবার নদিয়ার একটি খুনের ঘটনায় চার্জশিট জমা পড়ে। শুক্রবার ভাটপাড়া থানা এলাকার একটি খুনের ঘটনায় জমা পড়ল চার্জশিট।
গত ৬ জুন, ভাটপাড়া এক নম্বর ওয়ার্ডের মুক্তারপুর এলাকায় বিজেপি কর্মী জয়প্রকাশ যাদবকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ ওঠে। হেঁটে বাড়িতে এসে তাঁকে বোমা ছুড়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ। চার-চারটি বোমা মারা হয় বলে অভিযোগ। বোমার স্প্লিন্টারে় মাথা ফেটে যায় জয়প্রকাশের। তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন বলে পরিবার দাবি তোলে।
এই ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। তিনি বলেন, “দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন জয়প্রকাশ যাদব। একজন কার্যকর্তা, গরিব মানুষ। তাঁকেই তিন জন তৃণমূলের লোক মাথার ওপর বোমা মেরে চলে যায়। বাংলার যে কী হাল হয়েছে তা তৃণমূল দেখাচ্ছে। যে অবস্থা চলছে মানুষ আর বাঁচতে পারবে না। মুখ্যমন্ত্রী ভাষণ দিচ্ছেন শান্তি ফিরবে। আর তাঁর দলের নেতারা প্রকাশ্যে খুন করে বেড়াচ্ছে।” নিহত জয়প্রকাশের বাবা ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, “সেদিন আমাদের বাঁচাতে গিয়ে ও মরল। প্রথমে ওকে কিছুজন ডাকতে আসে। আমরা কথা বলতে গেলে দেয়নি। নিজেই এগিয়ে গেল। কিছু একটা গোলমাল হচ্ছে বুঝতে পেরে ডাক দিলাম। ‘ও কিছু না’ বলে যেই ও ঘুরল অমনি বোমা মেরে দিল। আমার ছেলেটা শেষ হয়ে গেল।”
ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগের তদন্তে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে গঠিত হয় সিট। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এই ভোট পরবর্তী হিংসা বিষয়ক অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে গঠন করা হয় সিটও। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন এক বিচারপতি এই সিটের তদন্তের গতিতে নজর রাখবেন বলেও নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট।
শুক্রবার যেদিন ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার দ্বিতীয় চার্জশিট পেশ করা হল, সেদিনই সিটের চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত করা হল কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরকে। বিশেষ তদন্তকারী দল বা এই সিটে ১০ জন দক্ষ আইপিএস আধিকারিক রয়েছেন। যারা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তাঁরা মূলত সিটের সদস্য। সেই দলের চেয়ারম্যান কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। আরও পড়ুন: উদ্বেগ বাড়িয়ে বাংলায় খাতা খুলল কোভিডের ‘ডেল্টা প্লাস’, দুই জেলায় আক্রান্ত ২