কলকাতা: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সওয়াল করল রাজ্য। মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টকে হাস্যকর বলে মঙ্গলবার আদালতে মন্তব্য করলেন অভিষেক মনুসিংভি।
ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে বিরোধীরা একাধিক অভিযোগ তুলেছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টই এ ক্ষেত্রে ছিল তাদের মূল হাতিয়ার। মঙ্গলবার রাজ্য ও ডিজির তরফে আইনজীবীরা বক্তব্য রাখেন এজলাসে। মূলত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে ভোট পরবর্তী হিংসার মামলা গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে।
এদিন আদালতে রাজ্যের ডিজির হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনুসিংভি। অভিষেক মনুসিংভি বলেন “জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট পূর্ব নির্ধারিত। কারণ রিপোর্টে ২৯ জুলাই ঘটেছে এমন ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়। নির্বাচনী ফলের আগের ঘটনার কি সম্পর্ক আছে? এমন ১০টি উদাহরণ দিতে পারি। ভোট পরবর্তী হিংসা বলতে কি আগের ঘটনা বোঝায়? বিশ্বাসযোগ্যতাই নেই এই রিপোর্টের।” পাল্টা ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল বলেন, “আপনি বলছেন এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। যদি ভোট পরবর্তী হিংসার সঙ্গে নাও যুক্ত হয়, তাও পুলিশের এফআইআর জরুরি ছিল।”
একই সঙ্গে রাজ্যের দাবি, অভিযোগগুলি দায়ের হয়েছিল বাংলায়। পরে তা হিন্দি বা ইংরাজিতে অনুবাদ করা হয়েছে। আর তাতেই মূল অভিযোগ বিকৃত হয়েছে বলেও দাবি রাজ্যের। এ প্রসঙ্গে মনুসিংভি বলেন, “রিপোর্ট সম্পূর্ণ ভুল বলিনি। কোর্ট কমিশনকে দায়িত্ব দিয়েছিল। সে সময় কিছু করা সম্ভব ছিল না। রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, অভিযোগ করছেন বাংলায়। পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে চাননি বলেছেন। রিপোর্টে পুলিশের ভয়ে রিপোর্ট করিনি বলা হয়েছে। এক অভিযোগে বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোনও কথা না বলা হলেও হিন্দিতে তৃণমূল বলা আছে।” পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে এই মামলায়। রাজ্যের পক্ষ থেকে এজি কিশোর দত্ত বলেন, রাজ্য ২৬৮ অভিযোগ স্বতঃপ্রনোদিত ভাবে গ্রহণ করেছে। পুলিশ কিছু করেনি এটা সত্যি নয়।
এদিন ডিজির পক্ষ থেকে আইনজীবী সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ১৯৭৯টি অভিযোগের মধ্যে ৮৬৪টি অভিযোগের তারিখ উল্লেখ নেই। ৫২টি খুনের অভিযোগের তারিখ উল্লেখ নেই। ৭ টি ধর্ষণের ঘটনার মধ্যে ৯টি কবে হয়েছে তারিখ নেই। চারটি ৫ই মের আগে হয়েছে। কী ভাবে সেগুলি এই মামলা যুক্ত হল? পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে এই মামলায়। রাজ্যের পক্ষ থেকে এজি কিশোর দত্ত বলেন, রাজ্য ২৬৮ অভিযোগ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে গ্রহণ করেছে। পুলিশ কিছু করেনি এটা সত্যি নয়।
এদিকে সেই সময় আবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, “প্রথম থেকে বলছিলেন কিছু অভিযোগ নেই। এখন এগুলি কী ভাবে হল? সুয়োমোটোতে কি রেপ, খুনের মতো কিছু বড় অপরাধ আছে? নাকি জমায়েতের মতো ছোট ঘটনা নেওয়া হয়েছে?” পাল্টা এজি বলেন, “আমরা তালিকা দেব। রিপোর্টে অপরাধীদের নির্যাতিত দেখানো হয়েছে।” এদিনের শুনানি পর্ব শেষ। রায়ের অপেক্ষা। আরও পড়ুন: ‘অসুস্থ’ শিশির কোন দলে রয়েছেন, অবস্থান জানাতে সময় চাইলেন লোকসভার অধ্যক্ষের কাছে