কোনও ‘গদ্দারের’ দলে স্থান নেই, নাম না করেই সব্যসাচী দত্তের এলাকায় পড়ল পোস্টার

সব্যসাচীকে 'অশুভ' বলে আগেই কটাক্ষ করেছেন বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু (Sujit Bose)।

কোনও 'গদ্দারের' দলে স্থান নেই, নাম না করেই সব্যসাচী দত্তের এলাকায় পড়ল পোস্টার
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Jun 15, 2021 | 6:44 PM

কলকাতা: এবার ‘মীরজাফর’, ‘গদ্দার’কে দলে না ফেরানোর দাবিতে পোস্টার পড়ল বিধাননগরে। নাম না করেই হোর্ডিং লাগানো হল সল্টলেকের চার নম্বর আইল্যান্ড, লাবনী, এফডি ব্লক, সিএ ব্লক-সহ বিভিন্ন জায়গায়। প্রসঙ্গত এই এলাকাগুলি বিধাননগর বিধানসভার আওতাধীন। এই বিধাননগরে এবার তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন সুজিত বসু। বিজেপি মুখ করেছিল সব্যসাচী দত্তকে। সম্প্রতি দলের বিরুদ্ধে ‘বেসুর’ শোনা যায় সব্যসাচীকে। এরপরই মুকুল-ঘনিষ্ঠ সব্যসাচীর তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। এরইমধ্যে এই পোস্টার।

রাস্তার ধারে টাঙানো বিরাট পোস্টারগুলিতে লেখা রয়েছে, ‘তৃণমূলের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোংরা ভাষা প্রয়োগ করে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা ও বিধাননগর বিধানসভা কেন্দ্রের মানুষের রায় দ্বারা পরাজিত, প্রত্যাখিত ও প্রমাণিত গদ্দার তথা প্রকৃত মীরজাফরের তৃণমূলে কোনও স্থান নেই। সৌজন্যে বিধাননগর বিধানসভা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীবৃন্দ।’

বিধাননগরে সুজিত বসু-সব্যসাচী দত্তর অম্লমধুর সম্পর্ক সকলেরই জানা। একইদলে থাকাকালীনও কোনও দিনই দু’জনের মধ্যে ব্যক্তিগত সমীকরণ ভাল ছিল না। প্রকাশ্যে তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বহুবার। নিন্দুকেরা বলেন, এক সময় সুজিত বসু নাকি বিজেপিতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সব্যসাচীই সেখানে কাঁচি চালান। যদিও এ ধরনের অভিযোগের কোনও হাতে গরম প্রমাণ কেউই পায়নি।

এরইমধ্যে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যান সব্যসাচী দত্ত। মুকুল রায়ের অত্যন্ত প্রিয় ‘সব্য’। মূলত বিজেপিতে মুকুল-কৈলাসদের সঙ্গেই থাকতেন তিনি। বর্তমানে পটে বদল আসতেই সব্যসাচীও যেন কেমন একটা অন্য সুর ধরছেন। যদিও বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র তা মানতে নারাজ। বরং সব্যসাচীর দাবি, তিনি বিজেপিতেই আছেন। আর তিনি চাইলেও সুজিত বসু যে খুব সহজে সে পথ ছাড়বেন না, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন। সুজিত বসু স্পষ্ট জানিয়েছেন, “অশুভ লোকের হাত থেকে সাধারণ মানুষ বিধাননগরকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।” তাই সব্যসাচী নিয়ে তাঁর কাছে কোনও মত যদি দল চায়, তিনি কখনওই সম্মতি দেবেন না।

অর্থাৎ বিজেপি থেকে সব্যসাচী চাইলেও তৃণমূলে যে সহজে ফিরতে পারবেন না তা এক প্রকার নিশ্চিত। দিকে দিকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষালদের মত দলবদলুদের তৃণমূলে না ফেরানোর দাবিতে তৃণমূল কর্মীরা যখন সরব হচ্ছেন, সেই তালিকায় সংযোজন হল বিধাননগরের নামও। যদিও এই পোস্টার প্রসঙ্গে সুজিত বসু বা সব্যসাচী দত্ত কারও কোনও বক্তব্যই পাওয়া যায়নি।

তবে মঙ্গলবারই তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্যের দলীয় সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, তৃণমূল কর্মীদের আবেগকে মর্যাদা দিয়েই সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এক সময় যাঁরা দলের বিরুদ্ধে কুৎসা করেছে, চাইলেও ফেরানো হবে না তাঁদের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।