কলকাতা : পেট্রোল বা গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে এমনতিতেই কালঘাম ছুটছে সাধারণ মানুষের। তার ওপর ভোজ্য তেল থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দামও বাড়ছে হু হু করে। বাঙালির পাতে যে আলু না থাকলে মেনু সম্পূর্ণ হয় না, সেই আলুর দামও বাড়ছে ক্রমশ। তবে এবার কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছেন আলুর দাম কমবে। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই দাম কমবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, আলুর উৎপাদন সময় মতো হয়নি বলেই এ ভাবে বেড়েছে দাম।
বাজারে জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা কেজি দরে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজার থেকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে আলু। তাই এই মূল্যবৃদ্ধি। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী আলুর দাম কমানোর ব্যাপারে আশ্বাস দেন। গত দু’বছরের তুলনায় এ বছর উৎপাদন বেশি হলেও দাম কেন বেশি? জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানান, এ বছর আলু উৎপাদিত হয়েছে ১৩০ লক্ষ মেট্রিক টন। কিন্তু আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় রাজ্যের সর্বত্র আলুর ফলন ভাল হয়নি। উত্তরবঙ্গ, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায় ফলন ভাল হলেও রাজ্যের বাকি অংশে আলু চাষ খারাপ হয়েছে বলে জানান তিনি। তাই মন্ত্রীর দাবি, সার্বিক ভাবে উৎপাদন ভাল হলেও বছরের যে সময়ে আলু হিমঘরে ঢোকে এবার তাতে দেরি হয়েছে অনেকটাই। ফলে হিমঘর থেকে আলু বেরোতেও দেরি হচ্ছে।
এ ছাড়া মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, আলুর মাপও এবার ঠিকমতো হয়নি। হিমঘর থেকে আলু বেরোলে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে দাম কমবে বলে আশাবাদী কৃষিমন্ত্রী। এ নিয়ে হিমঘর মালিকদের সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। এদিকে আলুর ফলন ভাল না হওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্ত আলু চাষীদের ক্ষতিপূরণ দিয়েছে রাজ্য সরকার। এদিন শোভনদেব বলেন, ‘আমাদের রাজ্যে যে সময় আলু চাষ হয় তখন আবহাওয়া বিরূপ ছিল। ফলে আলু চাষের ক্ষতি হয়েছে। উত্তরবঙ্গ, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায় ভাল চাষ হওয়ায় মোট উৎপাদন খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।’ মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, যাঁদের ক্ষতি হয়েছে তাঁরা যেন ক্ষতিপূরণ পান। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মধ্যে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন ৯৪ হাজার ৮৮৬ জন কৃষক। ১ লক্ষ ৪৩ হাজার কৃষককে ১১২.৮ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে বকেয়া ৪৯.১১ কোটি টাকা বাকিদের দেওয়া হবে।