কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বাংলা সাহিত্য আকাদেমির বিশেষ পুরস্কার পাওয়া নিয়ে মুখ খুললেন চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন (Subhaprasanna)। টিভি৯ নেটওয়ার্কে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায়, বিভিন্ন বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আগ্রহ ও কাজ করার উৎসাহের ভূয়সী প্রশংসা শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। মমতাকে এই স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে কোনও অন্যায় দেখছেন না তিনি। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ পুরস্কার পাওয়া নিয়ে সাহিত্যকদের একাংশের নেতিবাচক মনোভাব তাঁকে ‘লজ্জিত’ করে। এর পরই মমতার আক্রমণকারীদের ঈর্ষাকাতর বলে আক্রমণ করে শুভাপ্রসন্ন বলেছেন, “রবীন্দ্রনাথ থাকলে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ এসে মমতাকে সম্বর্ধনা দিতেন।”
মমতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ শুভাপ্রসন্ন বলেছেন, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী নানা বিষয়ে নানা প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। এবং তিনি নানা কারণেই এক অন্য ধরনের মানুষ। মনের আবেগ, উচ্ছ্বাস, ভালো লাগা, খারাপ লাগা নিয়ে কবিতা লিখেছেন। এবং তাঁকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।” এই কাজে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনার কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না এই চিত্রশিল্পী।
এরপরই পুরস্কার নিয়ে মমতাকে আক্রমণকারী কবি-সাহিত্যিকদের আক্রমণ শানিয়েছেন শুভাপ্রসন্ন। তাঁদেরকে বিনয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সঙ্গে তিনি বলেছেন, “জনগণের হয়ে কাজের পাশাপাশি কবিতা, গান লিখেছেন মমতা। সাহিত্যের প্রতি নিজের ভালবাসা ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা পুরস্কার পেয়েছেন এটা লোকে মনে রাখবে না। মমতার পাওয়া পুরস্কার তাঁরা পেয়েছেন, এটা তাঁদের শ্লাঘার বিষয় হওয়া উচিত।”
এরপরই আসে রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গ। রবীন্দ্রজয়ন্তীর দিন এই ঘটনায় কবিগুরুর অপমান হয়েছে বলে সুর তুলেছিলেন কেউ কেউ। তা নিয়েই বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন শুভাপ্রসন্ন। এ নিয়ে তিনি বলেছেন, “এরা রবীন্দ্রনাথকে বোঝেননি, আর পুরস্কারকেও বোঝেননি। রবীন্দ্রনাথ থাকলে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ এসে মমতাকে সম্বর্ধনা দিতে পারতেন। রবীন্দ্রনাথ এদের মতো ঈর্ষাকারত ছিলেন না।”
সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের পাশাপাশি ‘নিরলস সাহিত্য সাধনার’ জন্য পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির বিশেষ পুরস্কার পান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ‘কবিতা বিতান’ বইয়ের জন্য মুখ্য়মন্ত্রীকে এই পুরস্কার দেয় বাংলা আকাদেমি। সোমবার ২৫ বৈশাখ উপলক্ষে কবি প্রণাম অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রাজ্য়ের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। সেই অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা বাংলা আকাদেমির চেয়ারম্যান ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রে কাজের পাশাপাশি যাঁরা নিরলস সাহিত্য সাধনা তথা সারস্বত সাধনা করে চলেছেন, তাঁদের পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলা আকাদেমি। বাংলার সমস্ত শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিকের মতামত নিয়ে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই পুরস্কার দেওয়া হবে। তাঁর কবিতা বিতান কাব্যগ্রন্থকে মাথায় রেখে সার্বিক ভাবে তাঁর সাহিত্য কীর্তির জন্য এই পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অ্যাকাডেমি।
যদিও সোমবারের ওই অনুষ্ঠান মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি আকাদেমির বিশেষ পুরস্কার গ্রহণ করেননি। তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন ব্রাত্য বসুকে মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে এই পুরস্কার গ্রহণ করতে বলেন। ব্রাত্য মমতার হয়ে ওই পুরস্কার গ্রহণ করেন।