‘পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে বললে তাই করব’, কাল ঠিক কী হয়েছিল ব্যাখ্যা মমতার

শুক্রবার মোদী-মমতা বৈঠক নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। প্রধানমন্ত্রীকে (PM Modi) কেন অপেক্ষা করালেন মমতা, এমন প্রশ্নের মুখেই ব্যাখ্যা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

'পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে বললে তাই করব', কাল ঠিক কী হয়েছিল ব্যাখ্যা মমতার
গ্রাফিক্স- অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Updated on: May 29, 2021 | 11:00 PM

কলকাতা: শুক্রবার ইয়াস বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে রাজ্যে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। কথা ছিল কলাইকুণ্ডায় মুখোমুখি হবেন মোদী মমতা (Mamata Banerjee)। কিন্তু শুক্রবার বেলা বাড়তেই তাল কাটল। সাইক্লোন ইয়াসের বিপর্যয়ের খতিয়ান দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা কলাইকুণ্ডা গেলেন বটে, তবে থাকলেন না বৈঠকে। এমনকি তাঁর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অপেক্ষা করতে হয়েছে বলেও উঠল অভিযোগ। তারপর দিনভর কেন্দ্রের সমালোচনার মুখে পড়তে হয় মমতা। ২৪ ঘণ্টা পরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পুরো ঘটনার বর্ণণা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কী হয়েছিল, সেই ব্যাখ্যা দিয়ে মমতা বললেন, ‘দোষটা আসলে কার?’ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বললেন, ‘পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে বললে তাই করব, যদি বাংলার মানুষের উপকার হয়।’ তাঁকে বিনা কারণে অপদস্থ করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

আজ, শনিবার নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ২৪ ঘণ্টা জুড়ে যে সমালোচনা চলছে, তার জবাব দিতেই এই বৈঠক বলে উল্লেখ করেন তিনি।

মমতার কথায় বৈঠক ঘিরে ঠিক কী কী হয়েছিল?

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বৃহস্পতিবার তাঁর নিজের কর্মসূচী ঠিক হয়ে গিয়েছিল। হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। ওই দিন সন্ধেয় তিনি জানতে পারেন নরেন্দ্র মোদীর আসার কথা। তিনি বলেন, ‘জানতে পারলাম উনি কলাইকুন্ডায় যাবেন। আমার প্রোগ্রাম তখন ঠিক করা হয়ে গিয়েছে। আমি সফরে কাটছাঁট করলাম। সাগরে গিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক, প্রশাসন ও এটিসি কন্ট্রোলের কাছ থেকে জানতে পারলাম আমাদের ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে সেখানে। প্রধানমন্ত্রীর বিমান নামলে তারপর আমরা ওড়ার অনুমতি পাব। ২০ মিনিট রাস্তায় অপেক্ষা করলাম। তারপর আরও ১০-১৫ মিনিট লাগল কলাইকুন্ডায় পৌঁছতে।’ মমতা আরও বলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষার প্রশ্ন। তাই আমি কিছু মনে করিনি।’ এরপরই মমতার প্রশ্ন, ‘দোষটা তাহলে কার?’

এরপর কুলাইকুণ্ডায় গিয়ে তিনি দেখেন ততক্ষণে প্রধানমন্ত্রী সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন। তাঁর বৈঠক চলছে। এসপিজির কাছে দেখার করার অনুমতি চাইলে যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, ‘বিবেক সহায় এসপিজিকে গিয়ে বলেন মুখ্যমন্ত্রীকে দেখার করার ব্যবস্থা করে দিতে। এসপিজি বলে, এখন হবে না। বৈঠকের ঘরে কয়েকটা চেয়ার ফাঁকা ছিল। আমি আর আমার মুখ্যসচিব সেখানে যাই। গিয়ে বলি, আমাদের আরও অনেক জায়গায় যেতে হবে। আবহাওয়া ঠিক ছিল না। কলাইকুন্ডায় আসতে সমস্যা হচ্ছিল। তাও এসেছি।’ এরপর ক্ষতির হিসেব দিয়ে অনুমতি নিয়েই বিদায় নেন বলে জানিয়েছেন মমতা।

পিএম-সিএম বৈঠক কেন হল না?

প্রথম থেকেই জানতাম প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হবে। কিন্তু পরে দেখলাম রাজনৈতিক দলের বৈঠক হয়ে যাচ্ছে। নবান্নে এমনই অভিযোগ তুললেন মমতা। গত কালের বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতি নিয়ে সকাল থেকেই বিতর্ক শুরু হয়। বিরোধী দলনেতার উপস্থিতি নিয়ে নাক সিঁটকোয় ঘাসফুল শিবির। এ দিন মমতা বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল পিএম-সিএম বৈঠক হবে। পরে পরিবর্তিত তালিকা আসে। সেখান দেখি গভর্নর আছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আছেন, বিধায়ক আছেন। বিজেপির সবাই আছেন আর আমি একা।’ মমতার দাবি, বিরোধী দলনেতাকে যদি সম্মান দেওয়া হয়, তাহলে গুজরাটে বিরোধী দলনেতাকে ডাকা হয় না কেন? লোকসভায় বিরোধী দলনেতাকে সম্মান দেওয়া হয় না কেন?