কলকাতা: গত বছর প্রাথমিক টেট নিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। ১১ হাজার শূন্যপদের জন্য আবেদন করেছিলেন ৭ লক্ষ প্রার্থী। কিন্তু এক বছর পরই বদলে গেল ছবিটা। ২০২৩-এর টেট পরীক্ষায় আবেদন করেছেন মাত্র ৩ লক্ষ ১০ হাজার। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। কেন এমন হল? বছরের পর বছর চাকরিপ্রার্থীদের রাস্তায় বসে থাকতে দেখেই কি ভয় পাচ্ছেন প্রার্থীরা? এই অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তবে সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
২০২১ সালে এনআরএস-এ ডোমের চাকরিতে ৬ টি শূন্যপদের জন্য আবেদন জমা পড়েছিল ৬ হাজারের বেশি। আবেদন করেছিলেন স্নাতক, স্নাতকোত্তর থেকে ইঞ্জিনিয়ার ডিগ্রিধারীরাও। তাহলে টেট পরীক্ষার প্রতি আগ্রহ কম কেন?
এই প্রসঙ্গে কয়েকটি কারণের কথা বলছেন শিক্ষাবিদরা। ২০২২ সালের প্রাথমিক টেট হয় প্রায় ৫ বছর পর। তাই আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি ছিল। আর সেই পরীক্ষার ঠিক এক বছর পর আবারও টেট নেওয়া হচ্ছে। সে কারণে আবেদনকারীর সংখ্যা কম হতে পারে। দ্বিতীয়ত, ২০১৪ বা ২০১৭ সালে টেট পাশ করেও অনেকেই চাকরি না পেয়ে রাস্তায় বলে আন্দোলন করছেন। শিক্ষা মহলের একাংশ মনে করছে, প্রবণতা কমে যাওয়ার সেটাও অন্যতম কারণ।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল অবশ্য এই সব যুক্তি মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “চাকরি একটা পদ্ধতির মাধ্যমে হয় আর টেট একটা আলাদা পদ্ধতি।” তিনি উল্লেখ করেছেন, সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি রায় দিয়েছে বিএড ডিগ্রিকে প্রাথমিক নিয়োগের যোগ্যতা হিসেবে ধরা হবে না। শুধুমাত্র ডিএলএড ট্রেনিং থাকলে তবেই আবেদন করতে পারবেন না। ওই কারণেই সম্ভবত সংখ্যা কমেছে বলে মনে করছেন তিনি।
একই যুক্তি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুরও। তবে তিনি আরও মনে করেন, চাকরি আটকে থাকাটাও অন্যতম কারণ। তাঁর দাবি, সুপ্রিম কোর্টের মামলায় শেষ পর্যায়ে গিয়ে আটকে নিয়োগ। তাই এই প্রশ্ন উঠছে।
২০১৪-তে এক টেট উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থী বলছেন, প্রায় ৯ বছর হয়ে গিয়েছে এখনও নিয়োগ হয়নি। তিন বছর হতে চলল আন্দোলন চলছে। রাস্তায় বসে আছেন যোগ্য প্রার্থীরা। এসব দেখে মানুষ আশা হারাচ্ছে। ২ বছর ট্রেনিং নেওয়ার জন্য সময় নষ্ট করেও নিয়োগ না হলে প্রার্থীরা আগ্রহ হারাবে বলেই মনে করছেন তিনি।