কলকাতা: সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীকে খুনের ইচ্ছা প্রকাশ করে মন্তব্য করেছিলেন এক অধ্যাপক। সোমবার তাঁকে হেয়ার স্ট্রিট থানায় তলব করল পুলিশ। এদিন দুপুরে থানায় হাজির হন ওই অধ্যাপক। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কলেজে জুওলজি পড়ান ওই অধ্যাপক। একইসঙ্গে তিনি ওয়েবকুার সদস্যও। অভিযোগকারী তমাল দত্ত জানান, “আমাদেরই পরিচিত একজন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর একটি পোস্ট দেখি। সেটি খুবই বিতর্কিত। সেখানে ওই অধ্যাপক লিখেছেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে হত্যা করার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর।”
তমাল দত্তের পাশাপাশি অপর অভিযোগতারী দেবর্ষি রায়ের দাবি, এই প্রথমবার নয়। এর আগেও ওই অধ্যাপক একাধিক বার এ ধরনের বিতর্কিত কথাবার্তা বলেছেন। ভোটের আগে এরকম একটি মন্তব্য হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপেও করেছিলেন তিনি। তবে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ যেহেতু একেবারে ব্যক্তিগত পরিসরে ছিল, তাই সে সমস্ত লেখা বাইরে আসেনি। কিন্তু এবার একেবারে প্রকাশ্যে লেখেন ওই অধ্যাপক। এরপরই শুরু হয় হইচই।
২৭ অগস্ট হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের হয় ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগপত্রের ভিত্তিতেই সোমবার তাঁকে তলব করে পুলিশ। অন্যদিকে এদিনই অধ্যাপকের বাড়িতে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে যায় পুলিশ। সূত্রের খবর, ওই অধ্যাপকের পরিবারের লোকজন তদন্তকারীদের জানান, মানসিক সমস্যায় ভুগছেন অভিযুক্ত। বাড়ি থেকে বেশ কয়েকটি প্রেসক্রিপশনও উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
ফেসবুকে এক ব্যক্তি একটি পোস্ট করেছিলেন। সেই পোস্টে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করেন ওই অধ্যাপক। বার বার অধ্যাপকের নিশানায় উঠে আসে রাজ্যের নানা বিষয়। এরপরই এক ব্যক্তি ওই অধ্যাপককে স্মরণ করিয়ে দেন, অতীতের একটি পোস্ট। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এরকম একটি মন্তব্য হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে ওই অধ্যাপক করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। ফেসবুক পোস্টে ওই অধ্যাপকের এক পরিচিত তাঁকে ভোটের আগে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে লেখা মেসেজটি স্মরণ করিয়ে দেন। জানতে চান, এখনও মানসিকতা একইরকম রয়ে গিয়েছে কি না। তারই প্রত্যুত্তরে অভিযুক্ত অধ্যাপক প্রকাশ্যে বিতর্কিত মন্তব্যটি লেখেন।
#BREAKING | সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীকে মারার হুমকি, অভিযোগ জনৈক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। ফেসবুকে তর্ক-বিতর্কের মাঝেই কমেন্টে হুমকি। ঘটনায় লালবাজারে এফআইআর কিছু ছাত্রের।
সব খবর: https://t.co/fAglENWOjO@MamataOfficial | #Threat | #SocialMedia pic.twitter.com/yQToxuKpPM
— TV9 Bangla (@Tv9_Bangla) August 27, 2021
অভিযোগকারীর বক্তব্য, একজন অধ্যাপক যদি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে এ ধরনের কুরুচিকর মন্তব্য করেন, তা হলে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তার অবকাশ থাকে। এরপরই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন লালবাজারে বিষয়টি জানাবেন। এখানে উল্লেখযোগ্য মূল অভিযোগকারী তমাল দত্ত নিজেও বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজেরই একজন স্কলার। সে ক্ষেত্রে এই ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। আরও পড়ুন: ‘মুখ্যমন্ত্রীর পদ ধরে রাখতে উপনির্বাচন নিয়ে লাফালাফি, আগে পুরভোট করাতে হবে’, দাবি দিলীপের