কলকাতা: দ্রুত বিধানসভার উপনির্বাচন চেয়ে তৃণমূল যখন সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন পুরভোট নিয়ে সরব হল বিজেপি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, আগে পুরভোট হোক। কারণ, পুরসভা থেকেই মানুষ রোজকার জীবনের প্রয়োজনীয় সমস্ত পরিষেবা পেয়ে থাকেন। তাই বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে বকেয়া পুরসভাগুলিতে ভোট করাতে হবে বলে দাবি তোলেন দিলীপ ঘোষ।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, গত ২ বছর ৩ বছর ধরে প্রশাসক নিয়োগ করে পুরবোর্ড চলছে বিভিন্ন জায়গায়। স্থানীয় এলাকার নির্বাচনই তাই আগে হওয়া দরকার। বিজেপির রাজ্য সভাপতির কথায়, “আগে মিউনিসিপ্যালিসিটি আর কর্পোরেশনের ভোট করিয়ে দিন। ওখানে তো মানুষের প্রতিনিধি নেই। লোকে একটা সার্টিফিকেট পর্যন্ত পাচ্ছে না। ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে, পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই যে ড্রেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, মাঠ দেখে মনে হচ্ছে ডোবা এগুলি কি সাংসদ-বিধায়ক দেখবেন নাকি পুরসভা, পুরনিগম দেখবে। মানুষ নিজের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চাইছেন। সেই অধিকারটুকু মানুষকে দেওয়া হচ্ছে না। যত চোর ডাকাতকে বসিয়ে লুঠপাট চালাচ্ছে। এটা তো গণতন্ত্রকে ক্ষতবিক্ষত করা হচ্ছে। খুবই অন্যায় এটা। শুধুমাত্র দিদিমণিকে মুখ্যমন্ত্রী রাখতে যাঁরা উপনির্বাচন চাইছেন লোকের প্রাণকে বলি রেখে, তাঁরাই ভোট চলার সময় চিৎকার করেছিলেন করোনা নিয়ে আসছে বাইরে থেকে।”
দিলীপ ঘোষের দাবি, “দু’ বছর তিন বছর হয়ে গিয়েছে এক একটা পুরসভাতে ভোট হয়নি। কে দিয়েছে এই অধিকার ওনাদের। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করার সাহস ওনারা পাচ্ছেন কী করে! সব জায়গায় ওনাদের লোক চাই। নৈতিক-অনৈতিক, সামনের দরজা দিয়ে, পিছনের দরজা দিয়ে লুঠ করে খাও। এটা ঠিক নয়। গণতান্ত্রিক দেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই ভোট হওয়া উচিৎ। প্রথম তো পুরভোটই হওয়া উচিৎ।”
যদিও এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য,”যে মানুষটার পুরসভা আর মুখ্যমন্ত্রীর বিধায়ক নির্বাচনের গুরুত্বই বোঝেন না সেই ধরনের নির্বোধের কোনও কথার জবাব দেওয়াও আমি সমীচীন বলে মনে করি না।” উল্লেখ্য, চলতি মাসেই উপনির্বাচনের বিষয়ে বিভিন্ন দলের মতামত জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই মতো তৃণমূলের পক্ষ থেকে দ্রুত উপনির্বাচন চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। বিজেপি অবশ্য নিজেদের অবস্থান আগে থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছে। বিধানসভার উপনির্বাচন সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সেরে ফেলতে চাইছে তৃণমূল। এ নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন দফতর থেকে দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের অফিস — সর্বত্রই গিয়েছেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। পাল্টা বিজেপির দাবি, যে রাজ্যে কোভিড সংক্রমণের কারণে লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সেখানেই ভোটের মতো জমায়েত-পর্বের এখনই কোনও দরকার নেই। আগে লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হোক, কোভিড বিধি নিষেধ আরও আলগা হোক তার পরই ভোটের আয়োজন করুক নির্বাচন কমিশন। আরও পড়ুন: ভোটের আগে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তিন মাসের মধ্যেই ‘ঘর ওয়াপসি’ বিষ্ণুপুরের বিধায়কের