‘পরীক্ষা হয়নি, তো ফেল কিসের?’ উচ্চ মাধ্যমিকে অকৃতকার্যদের বিক্ষোভ জেলায় জেলায়

HS: কোথাও ৮০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭২ জন পড়ুয়া অকৃতকার্য হয়েছে। কোথাও আবার ১২০ জন ছাত্রীর মধ্যে পাশ করেছে মাত্র ১০ জন। ফল নিয়ে অসন্তুষ্ট পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিক্ষোভ জেলায় জেলায়।

'পরীক্ষা হয়নি, তো ফেল কিসের?' উচ্চ মাধ্যমিকে অকৃতকার্যদের বিক্ষোভ জেলায় জেলায়
অলংকরণ: অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 23, 2021 | 4:30 PM

পশ্চিমবঙ্গ: ‘পরীক্ষাই হয়নি। তবে কেন আমাদের ফেল করানো হল?’ শুক্রবার পাশের দাবিতে জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন স্কুলে বিক্ষোভে সামিল হল উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য ছাত্র ছাত্রীরা। শুধু জলপাইগুড়িই নয়, কলকাতা থেকে জেলায় জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকে অকৃতকার্য ও তাদের অভিভাবকদের বিক্ষোভ ও অবরোধে চাঞ্চল্য দেখা গেল জেলায় জেলায়।

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফেল করায় কোথাও পথ অবরোধ, কোথাও আবার স্কুলে গিয়ে দিদিমণিকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের। ঘটনায় চাঞ্চল্য জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে। একই রকমের ঘটনার সাক্ষী হয়েছে মধ্যমগ্রাম এপিসি গার্লস স্কুল থেকে নদিয়ার শান্তিপুর। হাওড়া থেকে মেদিনীপুর।

কলকাতার বড়িশা জনকল্যাণ বিদ্যাপীঠের ১২০ জন ছাত্রীর মধ্যে পাশ করেছে মাত্র ১০ জন। ছাত্রীদের অভিযোগ, এটা হতে পারে না। প্রজেক্টের নম্বরও কারও কারও মার্কশিটে নেই। যা নিয়ে ব্যাপক অশান্তি বেঁধেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শর্মিলা সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। আমি কাউন্সিলের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।

উচ্চমাধ্যমিকের অকৃতকার্য হওয়ার কারণে শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখা যায় শান্তিপুর বাগ আঁচড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। রাস্তার উপর আগুন জ্বেলে প্রতিবাদ করতে দেখা যায় এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীোক্ষার্থীদের। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় শান্তিপুর থানার পুলিশ।

এবছর মাধ্যমিকে শান্তিপুরের মধ্যে সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়েছে এই বাগআঁচড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এক পড়ুয়া। কিন্তু এই বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ১৮০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭২ জন পড়ুয়া অকৃতকার্য হয়েছে। এত সংখ্যক অকৃতকার্যের ঘটনা বিগত দিনে স্কুলের ইতিহাসে নেই। যখন রাজ্যজুড়ে পাশের হার ৯৭ শতাংশের ঊর্ধ্বে সেখানে একটি মাত্র স্কুলে ৭২ জন পড়ুয়া কী ভাবে অকৃতকার্য হল, এই নিয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন পড়ুয়া এবং অভিভাবকেরা।

অন্যদিকে মধ্য মধ্যমগ্রাম এপিসি গার্লস হাইস্কুলের সামনে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, হয় সবার পরীক্ষা নিতে হবে, নয়ত সবাইকেই পাশ করাতে হবে। একই ছবি জলপাইগুড়িতেও।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল। কিন্তু সেই ফলাফল আশানুরূপ না হওয়ায় শুক্রবার থেকে পথ অবরোধে নেমেছে ছাত্র-ছাত্রীরা। ময়নাগুড়ির ভোট পট্টি স্কুল মোড় এলাকা থেকে জলপাইগুড়ি শহরের কদমতলা বালিকা বিদ্যালয়। এবারে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করতে না পারা পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়েছে এলাকা।

হাওড়ার উলুবেড়িয়ার কাছে বনিবনের কল্যাণব্রত সংঘ উচ্চ বিদ্যালয়। এখানকার ১৮৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৫০ জন ফেল করেছে। তার পর এদিন সকাল থেকেই মার্কশিট নিতে আসা ছাত্রছাত্রীরা কল্যানব্রত স্কুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ, তাদের এগারো ক্লাসের পরীক্ষার নম্বর স্কুল থেকেই ভুলভাল পাঠানো হয়েছে। নাহলে ১৮৮ পরীক্ষার্থীর মধ্যে কীভাবে ১৫০ জন ফেল করে !

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রবিন মান্না অবশ্য জানাচ্ছেন, এগারো ক্লাসের পরীক্ষার যে তথ্য ওনার কাছে ছিল সেই তথ্যই বোর্ড অফিস পাঠিয়েছেন। এই তথ্যের ভিত্তিতেই রেজাল্ট হয়েছে। তার পর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। স্কুলের প্রধান ফটকে ছাত্রছাত্রীরা তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। আরও পড়ুন: ‘রেফার’ করাতেই বিপত্তি! শক্তিপুরে চিকিত্সক-নার্স নিগ্রহকাণ্ডে গ্রেফতার ৪