কলকাতা : উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই বর্ষা ঢুকে গিয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের দোড়গোড়ায় এসে দাঁড়িয়ে রয়েছে। দক্ষিণের জেলাগুলিতে বর্ষা ঢোকা শুধু সময়ের অপেক্ষা। প্রায় এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টি হচ্ছে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী তিন – চার দিনের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু এলাকায় বর্ষা ঢুকে যাবে। শুধু তাই নয়, আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর থেকে গরমও অনেকটা কমবে। প্রায় ২-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমবে তাপমাত্রা। বর্ষা যখন কয়েকদিনের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ঢুকে যাওয়ার কথা, তখন কেন আবার বাড়ানো হল গরমের ছুটি? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে শিক্ষক মহলে।
এই বিষয়ে নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি জানিয়েছেন, “১১ দিনে ভয়ঙ্কর কোনও ক্ষতি হয়ে যাবে, তা আমি মনে করি না। কিন্তু এটা ঠিক, যে ছাত্রাবস্থায় অধ্যয়ন করার সময় তপস্যাই তাদের ব্রত হওয়া উচিত। তপস্যার অর্থ কৃচ্ছসাধন।” তাঁর মতে, শীত – গ্রীষ্ম, সুখে – দুঃখে এটা সবসময় একই রকম হওয়া উচিত। এই তপস্যা না করতে পারলে পড়াশোনা হয় না। যেহেতু করোনা কালে এবং করোনা পরবর্তী সময়েও অনেকদিন ধরেই বিষয়টি বেশ নড়বড়ে ছিল। স্কুল খোলার পর বিষয়টি আস্তে আস্তে আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এখন বৃষ্টিও শুরু হয়ে যাচ্ছে। সামনেই বর্ষা এসে যাচ্ছে। এই সময় বোধহয় স্কুল চললেই ভাল হত বলে মত তাঁর। তবে পড়ুয়াদের স্কুলে না যাওয়ার অভ্যেস, অনলাইনের অভ্যেস যাতে কিছুটা কমে, সে জন্য ছুটি এখন কিছুটা কম দেওয়াই ভাল বলে মনে করছেন তিনি।
শিক্ষাবিদ সিদ্ধার্থ দত্ত আবার ‘লার্নিং গ্যাপ’-এর কথা তুলে ধরেছেন। তাঁর বক্তব্য, “বিভিন্ন রাজ্যে কোভিড কালে শিক্ষা ব্যবস্থায় কোথায় কোথায় ক্ষতি হল, সেটিকে পূরণ করার জন্য চিন্তাভাবনা চলছে। সেখানে আমাদের রাজ্যে আরও ছুটি বাড়িয়ে দেওয়া, ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যতের পক্ষে খুবই খারাপ। বছরে অন্তত ১৮০ দিন ক্লাস চালু রাখার কথা। বিভিন্ন রাজ্য সরকার ভাবছে, এই দিনসংখ্যা কীভাবে আরও বাড়ানো যায়, যাতে যে ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ করা যায়। কিন্তু আমাদের রাজ্য সরকার ১৮০ থেকে আরও পিছিয়ে পড়ছে। ফলে, অন্যান্য রাজ্য থেকে আমাদের রাজ্যের পড়ুয়ারা পিছিয়ে পড়বে।”