কলকাতা: জোড়াসাঁকোয় অনৈতিক নির্মাণে কড়া হাইকোর্ট। আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের যাবতীয় অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে নির্দেশ দেওয়া হল পুরসভাকে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনৈতিক দলের প্রতীক, পতাকা-সহ যাবতীয় জিনিস সরিয়ে ফেলতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত। মঙ্গলবারের শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম পুরসভাকে ভর্ৎসনা করে বলেন, “আগামীকালের মধ্যেই ভাঙুন। বিশ্ববিদ্যালয় বা কেউ বলেননি অনৈতিক নির্মাণ হয়নি।” এরপরই প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, এতদিন ধরে কেন ফেলে রেখেছেন? দ্রুত বেআইনি নির্মাণ সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি।
পুরসভা কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আপনি যদি চোখ বন্ধ করে থাকেন কী হবে? আপনি শহরের অবিভাবক। ইচ্ছে থাকলে ছ’ঘণ্টার মধ্যে কাজ শুরু করা যায়। এই কাজে যাবতীয় খরচ পুরসভা করবে।”
জোড়াসাঁকোর ওই ভবন থেকে তৃণমূলের লোগোও খুলে ফেলার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি। এই গোটা বিষয়টি একজন আর্কিটেক্ট যাবতীয় বিষয় দেখবেন। প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, “আশা করব সচেতনতার সঙ্গে সবাই কাজ করবে।”
প্রসঙ্গত, জোড়াসাঁকোয় হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়া ভবনের অব্যবহৃত ঘর ভেঙে বেআইনি ভাবে নির্মাণকাজ চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন জনৈক স্বদেশ মজুমদার। মামলাকারীর আইনজীবী শ্রীজিব চক্রবর্তী এদিন আদালতে উল্লেখ করেন, বলা হয়, জোড়াসাঁকো ‘গ্রেড ওয়ান হেরিটেজ’। অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের ‘শিক্ষাবন্ধু সমিতি’ নামে একটি সংগঠনের কার্যালয় তৈরি হয়েছে।তা হেরিটেজের অনুমতি ছাড়াই হয়েছে। এক্ষেত্রে ২১ নভেম্বরে হাইকোর্টের নির্দেশও উল্লেখ করেন তিনি। সেখানে অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলতে হবে। আইনজীবী উল্লেখ করেন, আদালতের নির্দেশের পরেও কাজ হয়নি। আগের পরিস্থিতিতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। হেরিটেজ কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে।
এদিন তিনি আদালতে উল্লেখ করেন, জোড়াসাঁকোর মার্বেল মেঝে ঠিক থাকলেও জানালা বদলানো হয়েছে। হেরিটেজ কমিটি অযথা দেরি করছে বলে অভিযোগ করেন।
কলকাতা পুরসভার তরফে অলোক ঘোষ বলেন, “আদালতের নির্দেশে কাজ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় বাকি কাজ করবে। আর্কিটেক্ট রিপোর্ট না দিলে এটা সম্ভব নয়।” এই মামলার রায়ে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে।