কলকাতা: দুর্নীতির নতুন কায়দা! সাদা খাতায় চাকরি সেটা দেখেছে বাংলা। ওএমআর শিটে সামান্য কয়েকটা আঁচড়, তার পরও নিয়োগ… তারও তথ্য সামনে এসেছে শেষ কয়েকদিনে। পরীক্ষা হলে না গিয়েই কি চাকরি? এসএসসি-র প্রকাশ করা ওএমআরই তুলে দিচ্ছে প্রশ্ন। দুর্নীতির বহর দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে বাংলার। এবার প্রকাশ্যে অঙ্কের স্যারের বেনিয়মের কীর্তি! পরীক্ষা দিয়েছেন, অথচ ওএমআর মানে উত্তরপত্রে পরিদর্শকের সই-ই নেই। পরীক্ষা দিতে হলে গিয়েছিলেন তো? এঁর অবশ্য সাদা খাতা নয়, ওএমআর শিটে কয়েকটা আঁচড় দিয়েছেন। তবে ৩৫ পাওয়া তো দূরের কথা, এঁর নম্বর ডবল ডিজিটে যাওয়ার কথা নয়, কিন্তু গিয়েছে। এমপ্যানেলডও হয়েছেন।
পূর্ব মেদিনীপুরের অরিন্দম সাঁতরা গ্র্যাজুয়েশনে কত পেয়েছেন, তার কোনও উল্লেখই নেই তাঁর আবেদনপত্রে। তার পরও এমপ্যানেলড? TV9 বাংলার তরফে ফোনে যোগাযোগ করা হয় অরিন্দমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ” সব বুঝতেই তো পারছেন, যা বলার কোর্টে বলব। আমার এই ব্যাপারে আপনাকে কিছু বলার নেই।”
কোন ম্যাজিকে অরিন্দম ৩৫ পেলেন? তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। এ প্রসঙ্গে এক বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী বলেন, “যখন পরীক্ষা হয়েছিল, পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষকের সই ছিল ওএমআর-এ। আমার নিজের ওএমআর-এ সই রয়েছে। ওঁ একে তো পাঁচ থেকে ছ’টা গোল করেছেন। দেওয়া হয়েছে অনেক বেশি নম্বর। আরও ভয়ঙ্কর ব্যাপার ওই ওএমআর শিটে কোনও পরীক্ষকের সই পর্যন্ত নেই। তার মানে এটা আরও একটা দুর্নীতি। তাহলে কি উনি পরীক্ষা কেন্দ্রেই যাননি?”
আর এক বঞ্চিত প্রার্থী বলেন, “ওঁর তো ইনভিজিলেটরের সই-ই নেই। মারাত্মক ঘটনা। কারোর আবার রোল নম্বর ভরাট করতে গিয়ে একই রো-এ করে গিয়েছে। সেটা তো সিস্টেমেই নেওয়ার কথা নয়। নিয়োগ হয় কীভাবে?”
এই নিয়ে সরব বিরোধীরাও। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস সকালে ভোরের ফুল ফুটিয়ে দিতে পারে না, বিকালে ফোটাতে পারে। সর্বত্র জল। এমন একটা নিয়োগ সামনে আনতে পারবেন না, ১১ বছরের মধ্যে, যার মধ্যে কোনও দুর্নীতি নেই।”
অন্যদিকে, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “চাকরি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অসভ্যতা হচ্ছে বাংলায়। সাদা খাতায় নম্বর, পরিদর্শকের সই নেই খাতায়, কীভাবে সম্ভব?” অন্যদিকে, মেয়র তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ঠিক করা উচিত। এটা ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন করিনা। “