কলকাতা: বেশ কয়েকদিন ধরে দেওয়া হচ্ছে না খেতে, আসছে না ওষুধ, খাবার চাইলে জুটছে মারধর। রোগীদের সঙ্গে এই নির্মম ব্যবহার করার অভিযোগ উঠল মহেশতলার (Maheshtala) একটি নেশা মুক্তি কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। মহেশতলা পৌরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের নুঙ্গি কাছারিবাগান এলাকায় রয়েছে এই নেশামুক্তি কেন্দ্র (rehab center)। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রায় চার বছর ধরে চলছে এই নেশা মুক্তি কেন্দ্র। হঠাৎই শনিবার রাতে এখানে ভর্তি থাকা রোগীর পরিবারের লোকজন এসে নেশামুক্তি কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। শুরু ঘটনা দেখে এলাকার বাসিন্দারা কিছু বুঝতে না পারলেও খানিক পরেই স্পষ্ট হয়ে যায় ছবিটা।
জানা যায়, এখানে ভর্তি থাকা রোগীদের বিগত কয়েকদিন ধরে বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে। খেতে দেওয়াও হচ্ছে না। রোগীরাই তাঁদের পরিজনদের ফোন করে জানায় তাদেরকে প্রায় চার থেকে পাঁচ দিন ধরে খেতে দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি শারীরিকভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে। রোগীর পরিবারের লোকজনের অভিযোগ তাঁরা যখন নেশা মুক্তি কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তখন তাঁদের কর্তৃপক্ষের লোকজন হুমকি দেন বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় মহেশতলা থানার পুলিশ।নেশামুক্তি কেন্দ্রে থাকা রোগীদের তুলে দেওয়া হয় পরিবারের সদস্যদের হাতে। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে ওই নেশা মুক্তি কেন্দ্রতে বর্তমানে ১৭ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিল। ইতিমধ্যেই রোগীর পরিজনদের তরফে অভিযোগ পাওয়ার পর নেশমুক্তি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা লোকজনদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
ঘটনা প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী এক রোগীর দাদা বলেন, “আমার ভাই এখানে রয়েছে। গত চারদিন ধরে ওকে খেতে দিচ্ছে না। ওষুধও দিচ্ছে না। প্রচণ্ড মারধর করছিল। আজ কারও কাছ থেকে একটা ফোন পেয়ে আমাদের ফোন করে। ভয়ার্ত গলায় বলে নিয়ে যেতে। জানায় ওরা কয়েকজন মিলে কর্তৃপক্ষের লোকদের থেকে হাত থেকে কোনওক্রমে সাময়িক রেহাই পেয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই যেন ওকে নিয়ে যাই। আমাদের থেকে মাসে সাড়ে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা করে নেওয়া হত।” ভর্তি থাকা এক ব্যক্তির স্ত্রী বলেন, “আমার স্বামী এখানে রয়েছেন। আমাদের ফোন করে জানানো হয় এখানে ওদের মারধর করা হচ্ছে। তিন দিন ধরে মারধর করা হচ্ছে। আমরা টাকা দিয়ে ভর্তি করেছি আমাদের রোগীকে। সাত হাজার টাকা করে নিচ্ছে প্রতি মাসে। ওষুধের টাকা আলাদা। তারপরেও কেন এরকম হবে? কর্তৃপক্ষের কেউ কথা বলেলনি। আমি আর আমার স্বামীকে এখানে রাখব না। বাড়ি নিয়ে চলে যাব।”