কলকাতা: আরজি কর কাণ্ডে গত কয়েকদিনে বারবার শিরোনামে উঠে এসেছে চিকিৎসক অভীক দে-এর নাম। ঘটনার দিন আরজি করের সেমিনার রুমে লাল জামা পরা এক ব্যক্তিকে দেখা যায়। লালবাজারের তরফে বলা হয়েছিল, তিনি ফিঙ্গার প্রিন্ট এক্সপার্ট। যদিও ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্য়াসোসিয়েশন বেঙ্গল বা আইএমএ বেঙ্গল তা মানতে চায়নি। বরং তারা জানিয়েছিল, ইনি অভীক দে। এসএসকেএমের সার্জারি বিভাগের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রথম বর্ষের ট্রেনি। এরপর ঘটনাক্রম যত এগিয়েছে, একাধিক অভিযোগ উঠেছে তাঁর নামে। চর্চা শুরু হয়েছে তাঁর ‘দাপট’ নিয়েও। কিন্তু কে এই অভীক দে? তাঁর এত প্রভাবই বা কিভাবে?
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)
বর্ধমান শহরের বাসিন্দা অভীক দে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার তিনি। অভিযোগ, বর্ধমান মেডিক্যালের যাবতীয় প্রশাসন থেকে পরীক্ষা, টেন্ডার থেকে ক্যান্টিন সবেতেই অভীকই নাকি শেষ কথা। অভিযোগ উঠছে, মেধাবীকে ফেল করানো কিংবা ফেল করা ছাত্রকে পাশ করানো, বাড়তি নম্বর দিয়ে অনার্স পাইয়ে দেওয়া, পরীক্ষার হলে গণ টোকাটুকি, পরীক্ষা হলে মোবাইল ফোন, বই নিয়ে প্রবেশ, সব ‘জালিয়াতি’রই মুশকিল আসানের নাম অভীক দে ও বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। অন্তত বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের একাংশ চিকিৎসকের এমনটাই দাবি।
বর্ধমান মেডিক্য়াল কলেজ সূত্রে খবর, একসময় এখানে অধ্যক্ষ করা হয় সুহৃতা পালকে। আর তা হয়েছিল অভীকের ইচ্ছাতেই। পরে এই সুহৃতা পালকে সরিয়ে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করা কিংবা কৌস্তভ নায়েককে অধ্যক্ষ করতে স্বাস্থ্য ভবনকে বাধ্য করা, সবেতেই নাকি অভীক দে’রই হাত ছিল বলে অভিযোগ।
এমনও অভিযোগ ওঠে, আইন ভেঙে কৌস্তভ নায়েক অভীককে অনাময় হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক হিসাবে সার্টিফিকেট দেন। সেই বেআইনি সার্টিফিকেট দেখিয়ে সার্ভিস কোটায় মাস্টার ডিগ্রিতেও সুযোগ পান অভীক।
মাস তিনেক আগে এসএসকেএমের সার্জারিতে পিজিটি হিসাবে যোগ দেন অভীক দে। কিন্তু অভিযোগ, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের গেস্ট রুম নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতেন অভীক। রাজ্য়ের কোন শিক্ষক কোন হাসপাতালে বদলি হবেন, কে কোথায় অধ্যক্ষ বা সুপার হবেন, কে ডিরেক্টর অব মেডিক্যাল এডুকেশন বা ডিএমই (স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা) বা ডিএইচএস বা ডিরেক্টর অব হেলথ সার্ভিস (স্বাস্থ্য অধিকর্তা প্রশাসন) হবেন, তাও অভীকই ঠিক করতেন।
এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ আছে আরও। সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষায় পাশ করানোর নামে টাকা তোলা, বদলির জন্য় টাকা তোলা, যাবতীয় টেন্ডার অভীক ‘সিন্ডিকেট’-এর মাধ্যমেই হতো বলে অভিযোগ। সেই অভীক গত ১১ অগস্ট বর্ধমান মেডিক্যালের লেকচার থিয়েটার হলে গিয়েছিলেন রাতে। চিকিৎসক গৌরাঙ্গ প্রামাণিক সোমবারই অভিযোগ করেন, “১১ অগস্ট থেকে বিভিন্ন সময়ে এই মেডিক্যালের ছাত্র ছাত্রী, ট্রেনিদের সঙ্গে মিটিং করে স্বীকারও করেছেন উনি ঘটনাস্থলে ছিলেন। মৃতদেহ উনি দেখে এসেছেন। অভিযোগকে উনি লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করেন।”