কলকাতা: আরজি করে পিজিটিকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে, ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট ও আনুষঙ্গিক তথ্যপ্রমাণের নিরিখে উঠে এসেছে একাধিক প্রশ্ন। যার মধ্যে অন্যতম এই ঘটনায় সত্যিই কি কোনও একজন জড়িত? সাধারণ মানুষ তো বটেই, এ প্রশ্ন খোদ চিকিৎসকদের মনেও এসেছে। দেহের আঘাত, মৃত্যুর ধরন, পারিপার্শ্বিক তথ্য়প্রমাণ দেখে অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা, চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে যাঁরা পড়াশোনা করেছেন সেই চিকিৎসকরা। যদিও রবিবার সন্ধ্যায় আরজি করে দাঁড়িয়ে কলকাতার সিপি বিনীত গোয়েল বলেন, “অভিযুক্ত একজনই। আমাদের লুকনোর কিছু নেই।”
চিকিৎসক সুমন পোদ্দার স্পষ্ট বলছেন, “আমার হাতে একটা ইনকোয়েস্ট রিপোর্ট এসেছে। তাতে লেখা যিনি নির্যাতিতা, তাঁর ডেডবডির পাশে গোলাপি রঙের জামা ছিল, অন্তর্বাস ছিল সাদা। প্যান্ট ও লোয়ার ইনার গারমেন্ট বাঁদিকে পড়েছিল। কিছু আঘাতের চিহ্ন আছে। আমি ফরেন্সিকের ছাত্র নই। তবে ক’টা জিনিস ভাবাচ্ছে।”
সুমন পোদ্দার বলছেন, ইনকোয়েস্ট রিপোর্ট যা বলছে সেই অনুযায়ী ঘটনাক্রম অনেকটা এমন হতেও পারে, “ওই ছাত্রী ওই ব্যক্তি পরিচিত ছিল বা ছিল না। কোনও কিছু নিয়ে বচসা হওয়ায় চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলা হয়। চারদিকে প্রচুর চুল পাওয়া গিয়েছে। সেই অত্যাচারের শুরু। মেয়েটিও নিশ্চয়ই ছেড়ে দেবে না। সে কিন্তু তা প্রতিহতের চেষ্টা নিশ্চয়ই করেছে। যদি করেছে মেয়েটির নখে এই রিপোর্ট অনুযায়ী ব্লাড সেলস পাওয়া যাচ্ছে। তার মানে অভিযুক্তের গায়ের কোথাও আঁচড়ের দাগ থাকবে। আবার যে অভিযুক্ত সেও নিশ্চয়ই ছেড়ে কথা বলবে না। পাল্টা নির্যাতিতার উপরে কোনও অ্যাটেম্পট নেয়। তাঁর শ্বাসরোধের চেষ্টা করে। নির্যাতিতার মুখে কিন্তু প্রচুর আঁচড়ের দাগ আছে। ঠোঁটে আঘাত আছে। ধস্তাধস্তির সময় মেয়েটির উপর হয়ত অ্যাটাক করা হয়। তাতেই কিন্তু কলার বোন ভেঙে যায়। কলার বোন সহজে ভাঙার নয়। হয়ত বা এই আক্রমণে সে সংজ্ঞা হারায় বা তার মৃত্যু হয়।”
কেন এই কথাগুলি বলছেন চিকিৎসক পোদ্দার, নিজেই ব্যাখ্যা দিলেন, “যদি তাকে সজ্ঞানে ধর্ষণ করা হতো তাহলে শরীরের উপরের ভাগে ছেঁড়া কিছু থাকবে। তা হয়নি। নিম্নাঙ্গে কাপড় ছিল না। ইনকোয়েস্ট রিপোর্ট বলছে হাফ নেকেড। সেমি কনশাস আনকনশাস বা ডেড, সেই অবস্থায় মেয়েটির উপর অত্যাচার হয়। পেলভিক বোন হয়ত ভেঙে গিয়েছে। ইনকোয়েস্ট রিপোর্টে যদিও তা নেই। অন্য জায়গায় শুনছি। ফলে তাঁর প্রতিরোধের আর কোনও ক্ষমতাও নেই।”
সুমন পোদ্দার বলেন, কমন ক্রিমিনাল সাইকোলজি বলে, ঊর্ধ্বাঙ্গেও আক্রমণ হওয়ার কথা। কিন্তু ইনকোয়েস্ট রিপোর্ট বলছে ঊর্ধ্বাঙ্গের জামাকাপড় একদম ঠিক ছিল। এখানেই প্রশ্ন সুমন পোদ্দারের, “তাহলে কি ব্যাপারটা এরকম, পেরিমর্টামে তাঁর উপর অত্যাচার হল? প্রশ্ন উঠছে, শুধু কি এ কারণেই গিয়েছিল? কোনও কনফ্রন্টেশন হয়নি তো?”
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)