কলকাতা: বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরএমও বা শিক্ষক-চিকিত্সক নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠল। স্বাস্থ্যশিক্ষার ৪৭টি বিভাগে ৬৪৭ পদে শিক্ষক-চিকিৎসক নিয়োগ হয়েছে। এমডি-এমএস থাকা সত্ত্বেও নিয়োগে এমবিবিএসরা প্রাধান্য পাওয়ায় এই অনিয়মের অভিযোগ। প্রশ্নের মুখে পড়েছে হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড।
এমডি-এমএস থাকা সত্ত্বেও এতগুলি পদে এমবিবিএস নিয়োগ কীভাবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষক-চিকিৎসকদের একটি বড় অংশ। সেই সূত্রে শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত এক প্রভাবশালী চিকিৎসক নেতার এমবিবিএস পুত্র কীভাবে এমডি মেডিসিন পাশ না করে বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে নিউরো মেডিসিনে আরএমও পদে নিযুক্ত হলেন তা নিয়েও শুরু হয়েছে সমালোচনা।
আরও পড়ুন: আদিগঙ্গার বিক্ষোভকারীরা ‘পার্শ্বশিক্ষক নন’, চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছে পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চ
শিক্ষক-চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, মেডিক্যাল কলেজগুলিতে আরএমওরা রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি পঠনপাঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকেন। সেখানে এমবিবিএসদের সংখ্যাধিক্য কেন? বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এমবিবিএসদের আবেদনে কোনও বাধা ছিল না। কিন্তু নিয়োগ পদ্ধতিতে যেভাবে মার্কস ডিস্ট্রিবিউশন করা হয়েছিল তাতে এমডি-এমএসদের এড়িয়ে এত সংখ্যক এমবিবিএসের করতে আরএমও পদে নিয়োগ সম্ভব নয়।
বাস্তবে পর্যাপ্ত সংখ্যায় এমডি-এমএস থাকা সত্ত্বেও একাধিক বিষয়ে এমবিবিএসদের নিয়োগের নজির রয়েছে বলে অভিযোগ। অনিয়মের অভিযোগ আরও রয়েছে। নিয়োগ-বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, একজন আবেদনকারী একটির বেশি বিষয়ে নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। এমন হলে সর্বশেষ আবেদন ছাড়া বাকি সবক’টি আবেদন বাতিল হয়ে যাবে। বাস্তবে তা হয়নি। একই ব্যক্তি একাধিক বিষয়ে নিয়োগ পেয়েছেন এমন উদাহরণ প্রচুর রয়েছে বলে অভিযোগ। এক মহিলা চিকিৎসকের ১১টি বিষয়ে নাম রয়েছে!
অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, “এটা স্বজনপোষণ ছাড়া আর কিছু নয়। আমরা স্বাস্থ্য দফতরকে এ নিয়ে স্মারকলিপি দেব। আরটিআই করে গোটা বিষয়টি জানতে চাইব।” যদিও হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের সদস্য তথা তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা শান্তনু সেনের বক্তব্য, এখন বোর্ড যেভাবে নিয়োগ করে তাতে কোনও অস্বচ্ছতার জায়গাই নেই। যে কেউ চাইলে তথ্যের অধিকার আইনের দ্বারস্থ হতে পারেন। তবে একই ব্যক্তি একাধিক পদে নিয়োগ কেন পেয়েছেন তা চেয়ারম্যানই বলতে পারবেন।