কলকাতা: কোনও প্রত্যন্ত এলাকা নয়। খাস মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরে ইন্টারনেট লিঙ্ক পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার জন্য মঙ্গলবার চরম দুর্ভোগের শিকার হলেন বহির্বিভাগের রোগীরা। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের বহির্বিভাগের বাইরে এসএসকেএমের অ্যানেক্স হাসপাতালে রোগীদের লাইন পড়ে যায়। অর্থো, ইএনটি, মেডিসিন, ডেন্টাল, ফিভার ক্লিনিকের ওপিডি’তে দেখাতে এসেছিলেন রোগীরা। সেই তালিকায় ভাঙা কোমর-লাঠি হাতে ইএনটি’র চিকিৎসককে দেখাতে আসা প্রৌঢ়া যেমন ছিলেন, তেমনই ছিলেন হাওড়ার বাসিন্দা অমর দাস। নাকে নল লাগানো অবস্থায় স্ট্রেচারে শুয়ে রয়েছেন মাঝবয়সী অমর।
শারীরিক যন্ত্রণায় কাতর রোগীকে নিয়ে শম্ভুনাথের বহির্বিভাগের বাইরে অসহায় পরিজনেরা। বহির্বিভাগের চিকিৎসককে দেখিয়ে অমরকে হাসপাতালে ভর্তি করানো প্রয়োজন। সকাল ন’টা থেকে চার ঘণ্টা হাসপাতালের দরজায় অপেক্ষা করার পরও লিঙ্ক বিভ্রাটে যন্ত্রণায় কাতর হওয়ায় ভবিতব্য হয়ে দাঁড়ায় হাওড়ার বাসিন্দা অনীলের। টালিগঞ্জের বাসিন্দা আলোরানি প্রামাণিকের দুর্ঘটনায় পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছে।
লিঙ্ক না থাকার জন্য এক্স-রে না করিয়েই রোগিণীকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন তাঁর পরিজনেরা। সকাল থেকে দুর্ভোগের শিকারের ছবিতে শ্বাসকষ্টের রোগী বৃদ্ধার পাশাপাশি কোভিড সন্দেহভাজন রোগীও রয়েছেন। এদিন দুপুর ১২টা নাগাদ ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে রোগীর পরিজনদের। তাঁরা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতাল চত্বরে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন।
এ বিষয়ে সুপার নীলাঞ্জনা সেনের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “যা জানার স্বাস্থ্য ভবনকে জিজ্ঞাসা করুন।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্রে অবস্থিত হাসপাতালে রোগীদের দুর্ভোগ কাহিনি TV9 নাইন বাংলায় সম্প্রচারিত হওয়া মাত্র তৎপর হয় স্বাস্থ্য ভবন।
স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের নির্দেশে বিকল্প পদ্ধতিতে রোগীদের বহির্বিভাগ টিকিট দেওয়ার ব্যবস্থা হয়। পরে তিনি হোয়াটসঅ্যাপে জানান, ম্যানুয়ালি রোগীদের ওপিডি টিকিট করার ব্যবস্থা হচ্ছে। বস্তুত, দু’ভাবে সমস্যার সমাধান করা হয়। স্মার্টফোন যে সকল রোগীর রয়েছে তাঁদের ওয়াইফাইয়ের সাহায্যে স্বাস্থ্য ভবনের অনলাইন ওপিডি টিকিট ব্যবস্থার মাধ্যমে টিকিট দেওয়া হয়। বাকিদের পুরনো পদ্ধতিতেই হাতে লিখে টিকিট দেওয়া হয়।
প্রশ্ন হল, দুপুর ১টার পরে সংবাদমাধ্যমে খবর হওয়ার পরে বিকল্প যে পদ্ধতির ব্যবস্থা করা গেল তা আগে কেন সম্ভব হল না। কেন রোগীদের পত্রপাঠ ঘুরিয়ে দেওয়া হল, সেটাই প্রশ্ন।