কলকাতা: সরকারি কর্মী না হয়েও সন্দীপ ঘোষের দেহরক্ষী আফসার আলির অবাধ বিচরণ ছিল আরজি কর হাসপাতালে। সৌজন্যে ছিলেন সন্দীপ ঘোষ। আফসার আলির বেনামে থাকা সংস্থাকে হাসপাতালের সব উন্নয়নের কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিনিময়ে দেওয়া হত মোটা টাকা! আফসারকে ক্যাফে ও বাইক পার্কিং-এর বরাত পর্যন্ত পাইয়ে দেওয়া হত, আর তার জন্য ‘কাটমানি’ নিতেন খোদ সন্দীপ ঘোষ। আদালতে সন্দীপের দেহরক্ষী সম্পর্কে এমনই তথ্য তুলে দেওয়া হল বৃহস্পতিবার।
তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর আইনজীবী এদিন দাবি করেন, সন্দীপ ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্যই মেডিক্যাল কলেজে কার্যত রাজত্ব চালাতেন আফসার। আরজি কর মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল আফসার আলিকে। তাঁর ভূমিকা ঠিক কী ছিল, সেই ব্যাখ্যাও রয়েছে চার্জশিটে।
তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, নথি জাল করে টেন্ডার পেয়েছিল আফসার আলির বেনামি সংস্থা। সন্দীপের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ ওঠে। পার্কিং-এর টাকা যে সন্দীপ ও আফসারের কাছে যেত, সেটাও জানিয়েছেন মামলার এক সাক্ষী।
এদিকে, আফসার আলির আইনজীবী জামিনের আবেদন করে দাবি করেন, মামলা করা হয়েছে জালিয়াতির ধারায়, কিন্তু নথিতে তা দেখা যাচ্ছে না। জেলে গিয়ে জেরাও করা হয়নি বলে দাবি। আইনজীবী প্রশ্ন তুলেছেন, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাইক পার্কিং থেকে টাকা কামানোর। যদি তাই হয় তাহলে সেই টাকা কোথায় পাওয়া গেল? ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাওয়া গেল না?
দুটি সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া অভিযোগ করেছে সিবিআই। সেই নথি পাওয়া যায়নি বলে দাবি আফসারের। তাঁর আইনজীবী জানান, আফসারকে স্বাস্থ্যভবন নিয়োগ করেছিল অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে। সন্দীপ ঘোষের ব্যক্তিগত রক্ষী ছিলেন না তিনি। তবে কাজের সূত্রে যোগাযোগ ছিল। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার প্রমাণ সিবিআই-কে দিতে হবে বলে দাবি করেন তিনি।
আফসার আলিকে কে নিয়োগ করেছিল, তা জানতে চান বিচারক। তদন্তকারী অফিসার জানান, আর জি কর হাসপাতাল থেকে তিনজন স্থায়ী কর্মী পদত্যাগ করে চলে যান। তারপর আফসার আলি সহ তিনজনের নিয়োগ স্থানীয়ভাবে হয়েছিল। এই ব্যক্তিদের নিয়োগ সম্পর্কে স্বাস্থ্যভবনে চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। তার উত্তরে স্বাস্থ্যভবন জানিয়েছে, আফসার স্থায়ী কর্মী ছিলেন না। চুক্তিভিত্তিক কর্মী ছিলেন। সরকারি কর্মী নন।