কলকাতা : আরজি করে ফের কেলেঙ্কারি। মায়েদের প্রাপ্য টাকা থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠল। গত কয়েক মাস ধরে দেওয়া হচ্ছে না কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা। অন্তত সাড়ে ৫ হাজার প্রসূতি সেই প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ‘কেন্দ্রীয় জননী সুরক্ষা যোজনা’ প্রকল্পের ১০ লক্ষের বেশি টাকা বিলি করা হয়নি। গত মে মাস থেকেই চেক মায়েদের হাতে পৌঁছচ্ছে না বলে অভিযোগ। TV9 বাংলার খবরের জেরে দিনের শেষে নড়েচড়ে বসল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কী ভাবে দ্রুত মায়েদের হাতে সেই চেক পৌঁছে দেওয়া যায়, সে ব্যাপারে নির্দেশিকা প্রকাশ করা হল হাসপাতালের তরফে।
দরিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী মায়েদের আর্থিক সাহায্যের জন্যই এই প্রকল্প চালু করে কেন্দ্র। সেই প্রকল্পেও এবার সামনে এল কেলেঙ্কারি। ইতিমধ্যেই প্রকল্পের নাম নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপোড়েনের জেরে বাংলার মায়েদের প্রাপ্য ৩২৩ কোটি টাকা কী ভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে সেই খবর সামনে এনেছে TV9 বাংলা। এরই মধ্যে আরও এক কেলেঙ্কারি।
মূলত দরিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী মায়েদের কথা ভেবেই ‘জননী সুরক্ষা যোজনা’ প্রকল্প শুরু করে কেন্দ্র। ২০০৫ থেকে সেই প্রকল্প চালু রয়েছে। এই প্রকল্পে নিয়ম অনুযায়ী, কোনও মা যখন সন্তানের জন্মের পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন, তখন তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় চেক, টাকা পড়ে যায় সোজা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। শহরাঞ্চলে বসবাসকারী মায়েদের ১০০০ টাকা ও গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী মায়েদের ৯০০ টাকা করে দেওয়া হয়।
মূলত মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্যই এই প্রকল্পের সূচনা হয়েছিল। দরিদ্র মায়েরাও যাতে প্রসবের জন্য হাসপাতালমুখী হন, সেই কথা মাথায় রেখেই এই টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। প্রসবকালী মৃত্যু আটকাতেই এই উদ্যেগ। এবার সেই টাকা নিয়েও কেলেঙ্কারি।
মে মাস থেকে আরজি করে যাঁরা প্রসব করেছেন, তাঁদের হাতে চেক দেওয়া হয়নি। হাসপাতাল থেকে ছুটি হওয়ার সময় তাঁদের বলা হয়, পরে এসে চেক নিয়ে যেতে। দিনের পর দিন সেই চেক পড়ে রয়েছে হাসপাতালেই। এমনকি অনেকের হাতে চেক দেওয়ার পরও তাঁদের অ্য়াকাউন্টে টাকা পৌঁছয়নি।
স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকরা জানান, প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে বাড়ি যাওয়ার সময় মায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা জমা পড়ার কথা। ওই হাসপাতালের পিপি ইউনিটের টাকা দেওয়ার কথা চেকের মাধ্যমে। কিন্তু ছুটি পাওয়ার সময় চেক মায়েদের হাতে তুলে দেওয়া হত না। পরে চেক নিয়ে যেতে বলা হত। খাতায় কলমে দেখানো হত চেক বিলি হয়েছে। মে মাসের আগে ১০ লক্ষ টাকা মায়েদের হাতে পৌঁছয়নি।কেলেঙ্কারির কথা অস্বীকার করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আরজি করের ডেপুটি সুপার জানান, হাসপাতালের তরফে এই প্রকল্প নিয়ে সচেতন করা হয়। দ্রুত চেক পোঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়।
আজই সেই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর হাসপাতালের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, যাতে দ্রুত মায়েদের হাতে চেক তুলে দেওয়া হয়। তার জন্য কী করতে হবে, সেই ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : Corporation Election: সম্ভবত আগামিকালই কলকাতা, হাওড়ার পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, জল্পনা তুঙ্গে