কলকাতা : স্কুল সার্ভিস কমিশনে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। এসএসসিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বারবার বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কখনও প্রাথমিক, কখনও উচ্চ প্রাথমিক, গ্রুপ সি অথবা গ্রুপ ডি প্রায় সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন চাকরি প্রার্থীরা। অভিযোগের জেরেই আদালতে বিচারপতির মন্তব্যের পর বদল হয়েছে এসএসসির চেয়ারম্যান। আর চেয়ার ছাড়ার পরই সেই দুর্নীতির অভিযোগে কার্যত সিলমোহর দিলেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান শুভ শঙ্কর সরকার। তাঁর কথায়, নিয়োগ আরও স্বচ্ছ হওয়া দরকার ছিল।
সদ্য বদল হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান। নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে পদে এসেছেন সিদ্ধার্থ মজুমদার। আর তারপরই প্রাক্তন চেয়ারম্যান শুভ শঙ্কর সরকার কার্যত স্বীকার করে নিলেন নিয়োগের ক্ষেত্রে অস্বচ্ছতা রয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনে। যদিও তিনি দাবি করেছেন, তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালীন কোনও বেনিয়ম হয়নি। তবে তিনি বলেন, ‘নিয়োগের সুপারিশ আরও স্বচ্ছ হওয়া দরকার।’
তিনি উল্লেখ করেছেন উচ্চ প্রাথমিকের ক্ষেত্রে নিয়োগে স্বচ্ছতা ছিল। সেই উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘উচ্চ প্রাথমিকে হাইকোর্টের নির্দেশের পর স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ হয়েছে। আগে থেকে হলে আরও ভালো হত।’ এ কথা বলে কার্যত তিনি অস্বচ্ছতার অভিযোগ মেনে নিলেন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই সমস্যা সমাধানের কথা বলেছেন সিদ্ধার্থ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘যদি কোনও ভুল আগে হয়ে থাকে, তার দায় নেব না, এ কথা চেয়ারে বসে বলা যায় না। বাইরে বলা গেলেও চেয়ারে বসে বলা যায় না। আগেই বলব দায়িত্ব নিতে হবে, দায় নেওয়ার প্রশ্ন পরে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে কোনও নিয়োগের এজেন্সিতে সমস্যা থাকবেই। মানুষের মধ্যে ক্ষেভ থাকতেই পারে। সব সময় সেটা নায্য হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। তাই চেষ্টা করব, সে সব যতটা কম হয়।’
স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের নবম ও দশম শ্রেণির সহশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নিয়ে একটি অভিযোগ সামনে আসে। এক প্রার্থী দাবি করেছিলেন, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ডাক পাননি তিনি। চেয়ারম্যান জানিয়েছিলেন এসএমএস করে ডাকা হয়েছিল ওই প্রার্থীকে। আদালতে হলফনামায় প্রার্থীর মোবাইল নম্বর দিলেও, কোন নম্বর থেকে এসএমএস করা হয়েছিল, তা জানাতে পারেননি চেয়ারম্যান। শুধু তাই নয়, মোবাইলে এসএমএস করেই কেন ডাকা হল, কেন স্পিড পোস্টের মাধ্যমে হল না, তা জানতে চান তিনি।
এরপরই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেছিলেন, “এত অনিয়মের অভিযোগ কেন? ইনি কেমন চেয়ারম্যান? কোন যোগ্যতামানের চেয়ারম্যান কাজ করছেন কমিশনে?” এরকম কাউকে কমিশনের চেয়ারম্যান হিসাবে রাখা সঠিক সিদ্ধান্ত কি না তা বিবেচনা করার কথাও বলা হয় আদালতের তরফে। এরপরই মঙ্গলবার নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি হয়।
আরও পড়ুন : Remdesivir Expired: ৯ লক্ষ টাকার রেমডেজিভির পড়ে পড়ে নষ্ট শম্ভূনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে, দায় কার?