কলকাতা: রাজ্যের সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি কি পড়ুয়াদের অনীহা দেখা দিচ্ছে? স্কুলস্তরে এমন কথা আগেও বার বার শোনা গিয়েছে। তা নিয়ে চর্চাও হয়েছে। বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলির প্রতি ঝোঁক বেড়েছে অনেকটা। আর এবার কি সরকারি উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাতেও একই ধরনের ছবি উঠে আসছে? কলেজে কলেজে আসন ফাঁকা রয়ে যাচ্ছে। বার বার অনলাইন ভর্তি পোর্টাল খুলেও স্নাতক স্তরের পড়ুয়া পাওয়া যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় সোমবার আবার পোর্টাল খোলার নির্দেশ দিল শিক্ষা দফতর। আজ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্নাতক স্তরে ভর্তির পোর্টাল খোলার জন্য নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর।
বিভিন্ন কলেজে সিট ফাঁকা যাচ্ছে। স্নাতক স্তরের পড়ুয়াদের ভর্তির জন্য তাই এবার সময়সীমা আরও বাড়ানো হয়েছে। রাজ্যের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থার দিকে তাকালেই পরিস্থিতির কিছুটা আঁচ পাওয়া যাবে। যেমন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের আসনের প্রায় ৪০ শতাংশই ফাঁকা পড়ে রয়েছে। আবার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে দর্শন, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সংস্কৃতে প্রায় ৫০ শতাংশ আসন ফাঁকা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রেডিসেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো রাজ্যের প্রথম সারির উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষেত্রেও স্নাতক স্তরে সংরক্ষিত আসনে সেভাবে পড়ুয়া পাওয়া যায়নি। তাই সেগুলিকেও অসংরক্ষিতের আওতায় আনা হচ্ছে।
রাজ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলি মিলিয়ে প্রায় ৩৫ শতাংশ আসন ফাঁকা রয়ে গিয়েছে। স্নাতক স্তরের আসনের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৮০ হাজারের আশপাশে। তার মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ আসন ফাঁকা রয়ে গিয়েছে বলে খবর। কেন এই অবস্থা তৈরি হচ্ছে? শিক্ষা মহলের একাংশের মতে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যেভাবে বাড়ছে, তাতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের দিকে ঝোঁক বাড়ছে পড়ুয়াদের। অনেকক্ষেত্রেই আবার পড়ুয়ারা প্রথাগত শিক্ষার বাইরে গিয়ে অন্য কিছু নিয়ে পড়াশোনার দিকে আগ্রহী হচ্ছে। অনেক পড়ুয়া আবার ভিনরাজ্যে পড়তে চলে যাচ্ছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমনকল্যাণ লাহিড়ির মতে, কোথায় সমস্যা হচ্ছে তা খুঁজে বের করে সরকারের উচিত সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো। সরকারি উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা যাতে ভালভাবে টিকে থাকে, সেই দিকে নজর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করছেন তিনি।