কলকাতা: পদাধিকার বলে তিনি ডিজি (EB DG)। তাও আবার এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের (EB)। অথচ সেই ডিজিকেও প্রতারণার ফাঁদে পড়তে হল। রাজ্যের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের ডিজির ফেসবুক প্রোফাইল ক্লোন করে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে মথুরা থেকে এক যুবককে গ্রেফতার করল সিআইডি সাইবার শাখা। ধৃত যুবকের নাম তৌফিক। রাজস্থানের কুখ্যাত ভরতপুর গ্যাং-এর সদস্য তিনি। ধৃত যুবকের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
সিআইডি সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়ায় মোবাইল ফোনটি থেকেই ওই আইপিএসের ফেসবুক প্রোফাইল ক্লোন করা হয়েছিল। তারপর আইপিএসের প্রোফাইলে থাকা একাধিক বন্ধুর থেকে বিভিন্ন বাহানায় টাকা হাতিয়ে নেন ওই যুবক। এরপরই বিষয়টি জানতে পেরে সিআইডি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে। আইপি অ্যাড্রেস ট্র্যাক করে গ্রেফতার করা হয় ওই যুবককে। ট্রানজিট রিমান্ডে ধৃতকে কলকাতায় এনে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে তোলা হবে।
চলতি বছরের জুলাই মাসে এরকমই এক ঘটনার শিকার হয়েছিলেন রাজ্যের নিরাপত্তা এক অধিকর্তা। সাইবার ক্রাইমের শিকার হয়েছিলেন তিনি। নিজেই ফেসবুকে পোস্ট করে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্লোন করে পরিচিতদের কাছে টাকা চাওয়া হচ্ছে। ফেসবুকে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্লোন করা হয়েছে। একটি ভুয়ো মেসেঞ্জার বক্স বানানো হয়েছে। সেই মেসেঞ্জারের মাধ্যমে আমার পরিচিতদের কাছে টাকা চাওয়া হচ্ছে।’
সেই সময়ই ওই অধিকর্তা জানিয়েছিলেন, মূলত গাজিয়াবাদ বা পটনায় এরকম একটি চক্র কাজ করে। এই ঘটনার তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এরপর নিজের অ্যাকাউন্টে ‘প্রোফাইল পিকচার’ও বদলে ফেলেন তিনি। তাঁর নামে অন্য কোনও অ্যাকাউন্ট থেকে বন্ধুত্বের অনুরোধ আসলে তা যেন গ্রহণ না করা হয়, তার জন্য আগাম সতর্কও করেন। প্রসঙ্গত, আগেও পুলিশের বেশ কয়েক জন আধিকারিক এবং শীর্ষ কর্তা সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছিলেন।
কারা এই ভরতপুর গ্যাং…
মরুরাজ্য রাজস্থানের নাম বার বারই বিভিন্ন অপরাধপ্রবণতার সঙ্গে জড়ায়। প্রায়শই খুন,লুঠপাটের অভিযোগ ওঠে এ রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে। ভরতপুর গ্যাং সেখানে নামকরা। দিনের পর দিন মানুষকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করাই এদের কাজ। কারও কারও কাছ থেকে তো লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত আদায় করে ছাড়ে ওই গ্যাং-এর সদস্যরা। রাজস্থানের ভরতপুর থেকে অনলাইনে এই কার্যকলাপ চলে।
শুধু প্রোফাইল ক্লোনই নয়, ফেক প্রোফাইল থেকে মহিলার নামে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েও পুরুষদের ফাঁদে ফেলে এই গ্যাং। প্রথমে টুকটাক কথাবার্তা, ক্রমেই ঘনিষ্ঠতা তৈরি, চ্যাট বক্সে নানা রকম অশ্লীল ভিডিয়ো আদান-প্রদান। এর কিছুদিন পরই সেই ভিডিয়োগুলো নিয়েই ব্ল্যাকমেলিং শুরু। টাকা না দিলে ভিডিয়ো চ্যাট রেকর্ড করে প্রকাশ্যে আনা হবে বলেও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আছে এই গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: Price Hike: মা লক্ষ্মীকে খাওয়াবে কী! কুমড়ো-বেগুন কিনতে গিয়েই তো হাত পুড়ছে মধ্যবিত্ত বাঙালির