কলকাতা : করোনায় (COVID -19) আক্রান্ত পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। বুধবার তাঁর শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। কিছু মৃদু উপসর্গ অনুভব করছেন তিনি। হালকা সর্দি-কাশি রয়েছে, জ্বর-জ্বর অনুভবও করছেন। উল্লেখ্য, প্রথমে তাঁর ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়। পরে আরটিপিসিআর পরীক্ষায় করা হলে রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। বুধবারও দফতরে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।
এই নিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশনে ১৩৫ জনের মধ্যে কোভিড পজিটিভ ৮৭। ৬৬ থেকে বেড়ে সংখ্যাটা হল ৮৭। পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যাচ্ছে, স্বাস্থ্যভবনে কার্যত থাবা বসিয়ে দিয়েছে করোনা। স্বাস্থ্য ভবনের মূল প্রশাসনিক কার্যালয়ে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্ত হয়েছেনে অনেকেই। স্বাস্থ্য ভবনে মোট কতজন আক্রান্ত, সেই পরিসংখ্যান এখনই নির্দিষ্টভাবে বলতে পারছেন না দফতরের কেউই।
করোনার সংক্রমণের থাবা থেকে বাদ যাননি রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীও। বুধবার তাঁর ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আরটিপিসিআর পরীক্ষার রিপোর্টে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর পাশাপাশি আরও চার জন স্বাস্থ্য দফতরের পদস্থ আধিকারিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর।
বিগত কিছুদিন ধরেই রাজ্যের একাধিক হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছিল। এবার স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরাও সেই সংক্রমণের ঘেরাটোপে।
উল্লেখ্য, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মেয়ে সানা বুধবার করোনা আক্রান্ত হয়েছে। সংক্রমণ ধরা পড়েছে প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা ময়নার বিধায়ক অশোক দিন্দার শরীরেও। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বন্ধ কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবও আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। করোনাকে বশে আনতে ফের তৎপর হয়েছে রাজ্য সরকার। আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত রাজ্যে কড়া বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। রাত ১০টা পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চলাচল করবে। সব লোকাল ট্রেন ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বন্ধ রয়েছে সুইমিং পুল, স্পা, জিম, বিউটি পার্লার। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ট্যুরিস্ট স্পট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে শপিং মল, মার্কেট কমপ্লেক্স খোলা থাকবে ৫০ শতাংশ মানুষ নিয়ে। রাত দশটার পর বন্ধ থাকবে শপিং মল, সিনেমা হল। দোকানে বাজারে বেরলে মুখে মাস্ক থাকতেই হবে। না হলে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন।
হু হু করে রাজ্যে সংক্রমণ বাড়ছে বটে, তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন – সতর্ক থাকতে হবে, তবে ভয় পেলে চলবে না। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান থেকে দেখা গিয়েছে, যেমন সুনামির মতো করে সংক্রমণ বেড়েছে, ততটাই দ্রুত হারে সংক্রমণ কমবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ইতিমধ্যেই সংক্রমণের গ্রাফ নিম্নমুখী হয়ে গিয়েছে। আমাদের দেশে তথা রাজ্যেও করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট ততটা ভয়ঙ্কর এখনও হয়নি। হাসপাতালে ভর্তির হার তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। অক্সিজেনের চাহিদা দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় যেমনভাবে দেখা গিয়েছিল, তেমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: নেতাইয়ে ‘শহীদ স্মরণে’ শুভেন্দুর থাকায় কোনও বাধা নেই, জানাল হাইকোর্ট