কলকাতা: ‘ষাটের দশকের বোমা এখনও রয়ে গিয়েছে, আধুনিক বোমা এখানে তৈরি হয়নি।’ রবিবার এমনই মন্তব্য করলেন বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই তপ্ত হচ্ছে রাজনীতির বাতাবরণ। জেলায় জেলায় বোমা উদ্ধারের ঘটনা ঘটছে। কিছুদিন আগে ভাটপাড়া এলাকায় বোমা বিস্ফোরণে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। এক শিশু বল ভেবে খেলতে গিয়ে আহত হয়েছিল। বোমাবাজি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য জুয়ার ঠেকগুলিকেই দায়ী করেছিলেন অর্জুন সিং। শুধু ভাটপাড়াই নয়, মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গাতেও সম্প্রতি বোমা ফেটেছে। সিউ়ড়ি, দেগঙ্গা, দত্তপুকুর, মাটিয়াতেও বোমা ফাটার অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যে একের পর এক বোমা উদ্ধারের ঘটনায় বেশ অস্বস্তিতে রাজ্যের প্রশাসন। এবার এই নিয়ে মুখ খুললেন বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।
সৌগত রায় বলেন, “এটা এমন কোনও ব্যাপার নয়। পশ্চিমবঙ্গে কি এর আগে বোম পড়ত না? বোমা পাওয়া যেত না সিপিএম বা কংগ্রেসের আমলে? আমাদের মুশকিল হল বিজ্ঞানের অগ্রগতি হয়েছে। আমরা ষাটের দশকে যে বোমা দেখেছি, সেই একই বোমা রয়ে গিয়েছে। ওই একটি কৌটার মধ্যে নারকেলের দড়ি পেঁচিয়ে পটাশিয়াম ক্লোরেট, পটাস আর আর্সেনিক ট্রাই সালফাইড দিয়ে বোমা তৈরি হয়। আধুনিক বোমা পর্যন্ত এখানে তৈরি হয়নি। বরাবরই এই ছিল। ষাটের দশকে দেখেছি। তার আগেও নিশ্চয়ই পঞ্চাশের দশকেও ছিল।”
বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদের গলায় বোমা নিয়ে এমন বিস্তারিত ব্যাখ্যার কথা শুনে পাল্টা খোঁচা দিয়েছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও। বলেন, “সৌগত রায় দেখা যাচ্ছে বোমার ফর্মুলার ব্যাপারে খুব এক্সপার্ট। বোমার ফর্মুলা কী হবে, কীভাবে হবে, আগে কী হত, এখন কী হচ্ছে, ভবিষ্যতে কী হবে… এই সব জানেন। উনি অধ্যাপক। হাতে হাতে টাকা নেওয়ার জন্য এক্সপার্ট এটা সবাই জানত। কিন্তু তিনি যে বোমা তৈরির ফর্মুলা দিতেও এক্সপার্ট হয়ে গিয়েছেন, এটা সবাই হয়ত জানত না। বোমা যদি এতই সহজলভ্য হয়, ওটি যদি কোনও বিষয়ই না হয়… এই কথাই তো প্রশ্রয় দিচ্ছে সর্বত্র বোমা, বারুদ আর মৃত্যুতে।”
বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই বিষয়ে পাল্টা খোঁচা দিয়ে বলেন, “বাংলাতে বিপ্লবীরা বোমা বানিয়ে ইংরেজদের উপরে হামলা করত। আজ সেই বাংলার ঘরে ঘরে বোমা পাওয়া যাচ্ছে, যা ভোট লুঠ করতে, গ্রামের মানুষকে ভয় দেখাতে ব্যবহার হচ্ছে। ওনার মতো একজন বরিষ্ঠ সাংসদের মুখে কীভাবে বোমা বানাতে হবে এই শিক্ষা বাংলার যুবক পাচ্ছে। আমার মনে হয় আগামী দিনে দুয়ারে বোমা প্রকল্প তৃণমূল চালু করবে। যদি উনি বোমা বিশেষজ্ঞ হন, তাহলে এনআইএ-তে ওনাকে চাকরি দেওয়া উচিত। অবসর তো খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো আর টিকিট দেবে বলে মনে হচ্ছে না।”