কলকাতা: ভাঙড় থানা কি এবার কলকাতা পুলিশের অধীনে চলে আসবে? এমন প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাঙড় থানাকে কলকাতা পুলিশের আওতায় আনার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল ও রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যের সঙ্গে এই নিয়ে তাঁর কথাও হয়েছে। উল্লেখ্য, বুধবার আলিপুর বডিগার্ডস লাইনে পুলিশের একটি অভ্যন্তরীণ অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেই সময়েই তিনি ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের অধীনে নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি ভাঙড়ের জন্য একটি আলাদা ডিভিশন করতেও বলা হয়েছে। সেই ডিভিশনের জন্য একজন আইপিএস বা ডিসি পদমর্যাদার অফিসার রাখার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রস্তাবের পরই ব্যস্ততা শুরু হয়ে গিয়েছে লালবাজারে। কীভাবে ভাঙড়কে নিয়ে আলাদা ডিভিশন তৈরি করা যায়, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসেছেন পুলিশের পদস্থ কর্তারা। উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে রাজ্যের মন্ত্রিসভায় বিষয়টি পাশ হওয়ার পরে ভূমি দফতর, জুডিশিয়াল দফতর, স্বরাষ্ট্র দফতর ও অর্থ দফতরের অনুমতির পরই কাজ শুরু হবে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর আজকের প্রস্তাবের পরে পুলিশের পদস্থ কর্তারা আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী এই প্রস্তাবের পর খুশি এলাকার সাধারণ মানুষজনও। তাঁদের আশা, এবার হয়ত এলাকায় ঝামেলা-অশান্তি কমবে। কোনও ঘটনা ঘটলে তদন্তের গতিও আরও দ্রুত হবে বলে আশা করছেন ভাঙড়ের আমজনতা। উল্লেখ্য, ভাঙড়, কাশীপুর ও কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা নিয়ে ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্র। এর মধ্যে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা আগে থেকেই কলকাতা পুলিশের অন্তর্গত।
উল্লেখ্য, সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে বার বার উত্তপ্ত হয়েছে ভাঙড়। রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটেছে। মৃত্যু হয়েছে। তা নিয়ে বেশ অস্বস্তিতেও পড়তে হয় রাজ্য সরকার ও পুলিশ প্রশাসনকে। আর এসবের মধ্যেই ভাঙড় থানাকে কলকাতা পুলিশের অধীনে আনার প্রস্তাব দেওয়া হল বলে জানা যাচ্ছে।
ভাঙড় থানা প্রসঙ্গে মমতার এই প্রস্তাবের বিষয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলছেন, তার কী মানে আছে! ভাঙড়ের একটি অংশ, কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের অধীনে রয়েছে। তাতে কী সেখানকার ভোট লুঠ আটকেছে? কলকাতা পুরনিগম নির্বাচনেও তো ভোট লুঠ হয়ে গিয়েছে। কলকাতা পুলিশের এলাকা হওয়ায় কি সমাধান হয়েছে? এটা কোনও সমাধান নয়। আসল সমাধান হবে তৃণমূলকে বাংলা থেকে সরালে।’