কলকাতা: শোভন চট্টোপাধ্যায় কি ফিরে আসছেন? তিনি কি গাইলেন ঘরে ফেরার গান? দিন কয়েক আগেই তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন অরূপ বিশ্বাস ও কুণাল ঘোষ। একটাই সাফ প্রশ্ন, তৃণমূলে ফিরছেন নাকি? TV9 বাংলার প্রতিনিধি প্রশ্নটা করেই ফেলেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বললেন, “কোনও রাজনৈতিক বৈঠক নয়। কুণাল দা আমাদের বাড়িতে আগেও এসেছেন।” তাঁর বক্তব্য, তাঁকে নিয়ে যে জল্পনা চলছে, সেটাও যদি কারোর দেওয়া হয়, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।
সামনেই ২১ জুলাই। শোভন চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে যাবেন? তিনি বললেন, “দেখুন একুশে জুলাই বলে কথা। আমরা যাঁরা পুরনো কর্মী, একুশে জুলাই হলে তো যাওয়ার জন্য মন কাঁদবেই। যাওয়ার পরিস্থিতি হলে নিশ্চয়ই চলে যাব।” বর্তমানে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে, শোভন চট্টোপাধ্যায় অনেক আগেই দল ছেড়েছেন, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তাতে বেহালার সাংগঠনিক ভিত অনেকটাই নড়বড়ে হয়েছে তৃণমূলের। তাহলে কি শোভনের হাতে নতুন করে দায়িত্ব সঁপে দিতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? প্রশ্নটা রাখাই হয়েছিল তাঁর কাছে। শোভন বললেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময়ই তাঁর চোখ কান খোলা রাখেন। তিনি অত্যন্ত অভিজ্ঞ, দক্ষ নেত্রী। তিনি যদি মনে করে দায়িত্ব দেবেন, তিনি যদি কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন, তাহলে সেই নির্দেশ অমান্য করার জন্য আমার ঘাড়ে মাথা নেই।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ‘কানন’কে জল্পনার বীজ রয়েছে অনেক গভীর। পুরসভার কাজ নিয়ে সম্প্রতি ভীষণভাবে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নের সভাঘর থেকে একেবারে রণংদেহি মূর্তিতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। কলকাতা পৌরনিগমের কাজ নিয়েও অসন্তোষ ধরা পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে এটাও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘ওঁদের দিয়ে হচ্ছে না বলেই তো, আমাকে এখানে বসতে হল…’ এই পরিস্থিতি কলকাতার সৌন্দর্যায়ন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথা উঠে এসেছিলে ‘আগের মেয়রের’ কথাও। তারও আগে ‘মহারণের’ প্রাককালে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ের প্রচারে গিয়ে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী ‘কাননের’ প্রশংসা করছেন, আবার ‘দিদি নির্দেশ মানব না, ঘাড়ে কটা মাথা’ বলছেন শোভন, গোটা বিষয়টিতে দুয়ে দুয়ে চার হয় নাকি, এখন সেটাই দেখার।