কলকাতা: নবম-দশমের নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ওএমআর শিট প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশ মেনে গত বুধবার ৯৫২ জনের ওএমআর শিট প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। সেই উত্তরপত্র কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখেই কাঁদতে কাঁদতে এসএসসি-র অফিসে ছুটলেন চাকরি প্রার্থী সুমনা ভাণ্ডারী। প্রতিবন্ধী প্রার্থী সুমনা নবম-দশমের ইংরেজি শিক্ষিকা পদের জন্য আবেদন করেছিলেন। লিখিত পরীক্ষায় ৪৪ পেয়েছিলেন তিনি, মৌখিকে ৭.৩। মোট প্রাপ্ত নম্বর ৮৪ শতাংশ। তাঁর দাবি, তিনি একজন যোগ্য প্রার্থী। তা সত্ত্বেও কেন এই তালিকায় তাঁর নাম এল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শুক্রবার কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে একটি আবেদনপত্র জমা দিয়ছেন তিনি।
বিশ্বভারতীর পড়ুয়া সুমনা দুটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ। নিয়োগের পরীক্ষায় তার মোট প্রাপ্তি ৮৪ শতাংশ নম্বর। তাঁর দাবি, প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের তালিকায় প্রথম দিকেই নাম ছিল তাঁর। নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনের মঞ্চেও যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বুধবার কমিশনে ওয়েবসাইটে তালিকা দেখেই রামপুরহাট থেকে কলকাতায় ছুটে এসেছেন তিনি।
কমিশনের ওয়েবসাইটে মূলত তাঁদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, যাঁদের ওএমআর শিটের প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে এসএসসি-র সার্ভারে থাকা নম্বরের মিল নেই। সুমনা জানান, কমিশনের তরফে যে ‘আনসার কি’ প্রকাশ করা হয়েছিল, তা আগেই মিলিয়ে দেখেছিলেন তিনি। সেটা ছিল প্রাথমিক মডেল উত্তরপত্র। পরে চূড়ান্ত ‘আনসার কি’ প্রকাশ করা হয়। বুধবার ওএমআর শিট প্রকাশের পর মেলাতে গিয়ে সুমনা দেখেন ৯ নম্বর প্রশ্নের সি অপশনের বদলে বি অপশন গৃহীত হয়েছে। ফলে তাঁর ১ নম্বর কমে গিয়েছে। সুমনার দাবি সে কারণেই সিবিআই তদন্তে নম্বর গরমিলের বিষয়টি উঠে এসেছে। সুমনার প্রশ্ন, এতে আমার কী করার আছে?
শুধু সুমনা নয়, ইতিহাসেও প্রশ্ন ভুল মামলায় ১ নম্বর বেড়েছে অনেকের। সে ক্ষেত্রে তাঁদেরও নম্বর বদলে গিয়েছে। কিন্তু সিবিআই-এর চোখে সবটাই নম্বর ‘গরমিল’। তাঁদের মধ্যে অনেকেই বর্তমানের আন্দোলনকারী। ইলিয়াস, আবু নাসের নামে আন্দোলনকারীদের নামও রয়েছে ৯৫২ জনের তালিকায়।
এ প্রসঙ্গে এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার জানান, আদালতের নির্দেশে নম্বর বেড়েছে এই প্রার্থীদের। ওএমআর-এর নম্বরের সঙ্গে মিল না পেয়েই ওই তালিকায় নাম ঢুকিয়েছে সিবিআই। এতে চিন্তার কোনও কারণ নেই বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।