কলকাতা: এসএসসি ভবনের সামনে আন্দোলনে চাকরিহারা শিক্ষকরা। সোমবার যোগ্য অযোগ্য লিস্ট বেরনোর কথা ছিল এসএসসি-র তরফে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত (সন্ধে সাড়ে ছ’টা) তা বের হয়নি। এদিন বিকালের পর আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে ময়দানে চাকরিহারারা। চলছে স্লোগানিং। ইতিমধ্যেই তেরো জনের প্রতিনিধি দল আচার্য সদনে পৌঁছে গিয়েছেন আলোচনার জন্য।
২২ এপ্রিল প্যানেল বাতিল হয়েছিল। একবছর হয়ে গেল। প্রতীকী হিসেবে বিশেষ কেক আনেন চাকরিহারারা। আর সেই কেক না কেটে,উৎসর্গ করা হল এসএসসি চেয়ারম্যানকে। পুলিশের হাত থেকে কেক পাঠানো হয় চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের কাছে। তবে তিনি তা প্রত্যাখান করেন। এরপর সেই কেক ফিরিয়ে আনা হয়। প্রতিবাদীদের বক্তব্য এই কেক তাঁরা বাঁধিয়ে রাখবেন।
আচার্য ভবনের পেট্রোল পাম্পের কাছে West Bengal Junior Doctors Front ( WBJDF ) এর মেডিকেল ক্যাম্প।
কারা কাজ করবেন তাঁদের লিস্ট
যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা চাই। সেই দাবি তুলে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চাকরিহারারা। এর মধ্যেই জানা যাচ্ছে ‘যোগ্যদের’ তালিকা দিয়ে ডিআই (DI)-দের চিঠি পাঠাল স্কুল শিক্ষা-দফতর। ‘যোগ্যদের’ আপাতত কাজ চালানোর নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ শিক্ষা-দফতরের।
সোমবার চাকরিহারাদের সঙ্গে SSC চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে বৈঠক ছিল। তবে সেই বৈঠক নিষ্ফলা হয়। এরপর আজ জানা যাচ্ছে ফের একটি বৈঠক হবে SSC চেয়ারম্যানের সঙ্গে চাকরিহারাদের। সূত্রের খবর, সেই বৈঠক হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই একটা তালিকা শিক্ষা-দফতরে পাঠাবে এসএসসি। সংশ্লিষ্ট বৈঠকে কারা যাবেন, তা নিয়ে একটি প্রতিনিধি দল তৈরি শুরু করেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে বৈঠক হবে। তারপর চেয়ারম্যান নিজে কথা বলবেন চাকরিহারাদের সঙ্গে। তারপরই তালিকা পাঠাবেন বিকাশভবনে
স্থানীয় কয়েকটি বাড়ির এক তলার শৌচালয় দিয়েই চলছিল চাকরিহারা মহিলা আন্দোলনকারীদের। গত রাত থেকেই বারংবার বায়ো-টয়লেটের দাবি জানিয়েছিলেন তারা। পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। কিন্তু তাদের জন্য় অবস্থানস্থলে কেউ বায়ো-টয়লেট আনেননি। অবশেষে মঙ্গলবার মহিলা আন্দোলনকারীদের জন্য ৪টি বায়ো-টয়লেট নিয়ে এলেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ।
এই আন্দোলন অর্থহীন, বললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর দাবি, সুপ্রিম কোর্ট বলেই দিয়েছে, কারা স্কুলে ফিরে যেতে পারবেন, কারা বেতন পাবেন। আর কী বললেন ব্রাত্য বসু, দেখে নিন একনজরে
সুপ্রিম কোর্ট আমাদের তালিকা প্রকাশ করতে বলেনি: ব্রাত্য বসু
বেলা বাড়ার পর দেখা গেল এক অন্য ছবি। স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরে আটকে থাকা কর্মী ও কমিশনের চেয়ারম্যানের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। হাতে তরমুজ ও বিস্কুটের প্যাকেট নিয়ে তাঁরা চলে যান এসএসসি অফিসের দরজায়। প্রশ্ন করলে তাঁরা বলেন, “চেয়ারম্যান স্যর ও বাকিদের জন্য খাবার পাঠাচ্ছি। গরমের সময় কষ্ট হয়, তা আমরা জানি। তাই তরমুজ দিচ্ছি। মানবিকতার খাতিরে আমরা এই সব খাবার দিচ্ছি।”
বেলার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরম বাড়ছে। অসুস্থ হয়ে পড়লেন এক আন্দোলনকারী মহিলা। তাঁকে দেখতে গেলেন চিকিৎসক তমোনাশ ঘোষ। চিকিৎসক জানান, শরীর থেকে জল বেরিয়ে গিয়েছে প্রচুর।
বিস্তারিত পড়ুন: ‘আমাদের শরীরটাই রয়ে গিয়েছে, আত্মা মরে গিয়েছে…’ , নাছোড় আন্দোলনে নেমে অসুস্থ হতে শুরু করেছেন চাকরিহারারা
চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার সহ কোনও কর্মীকেই এসএসসি-র অফিস থেকে বেরতে দেওয়া হয়নি। সকালে দেখা গেল, ওআরএস-এর প্যাকেট হাতে দাঁড়িয়ে আছেন চাকরিহারারা।
বিস্তারিত পড়ুন: ‘ওরআএস খান, সুস্থ থাকুন… তাই বলে বারবার বিরিয়ানি আনবেন আর আমরা দেখব!’ বিস্কুট খেয়েই রাত কাটল চেয়ারম্যানের
সকালে চাকরিহারা আন্দোলনকারীরা বলেন, “আমরা রাত জেগে রাস্তায় বসে আছি, আর চেয়ারম্যান ভিতরে আরামে ঘুমোচ্ছেন। আমাদের দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না কেউ।”
এই পরিস্থিতির মধ্যে সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ হঠাৎ দেখা যায়, এক ব্যক্তি চায়ের ফ্লাস্ক ও মাটির ভাঁড় নিয়ে এসএসসি ভবনের দিকে যাচ্ছেন।
বিস্তারিত পড়ুন: রাতভর রাস্তায় চাকরিহারারা, সাত সকালে SSC চেয়ারম্যানের জন্য চা আসতেই ভাঁড় ভেঙে ফেললেন ওরা
ভাঙা হল চায়ের ভাঁড়
রাতভর দফায় দফায় উত্তাল হয়েছে করুণাময়ী চত্বর। স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসের সামনে রাতভর বসে রইলেন চাকরিহারারা। যোগ্য-অযোগ্য তালিকা প্রকাশের দাবিতে অনড় তাঁরা। মঙ্গলবার ভোরের আলো ফুটলেও থামল না স্লোগান। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘হোক কলরব’-এর মতো স্লোগান শোনা যাচ্ছে বিক্ষোভকারীদের মুখ থেকে। সকালেও তাঁরা জানালেন, রাস্তা থেকে সরবেন না তাঁরা।
এক চাকরি প্রার্থী বলেন, “আমরা সারা রাত রাস্তায় বসে আছি, আর এসএসসি-র চেয়ারম্যান ভিতরে আরাম করে ঘুমোচ্ছে।”
চাকরিহারা মহিলাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি পুলিশের। এক শিক্ষিকা বলেন, “পুলিশ আমাদের গুঁতো মারছে। আমরা পড়াশোনা করে এখানে এসেছি। মারামারি করতে শিখিনি।” পাল্টা পুলিশ আধিকারিক বলেন, “আমাদের মহিলা পুলিশ আছে। আপনারা যা করার আন্দোলন করুন। আমরা আছি।”
এসএসসি ভবন থেকে পুলিশ কর্মী বেরচ্ছিলেন। সেই সময় চাকরিহারারা আটকানোর চেষ্টা করেন। হয় ধস্তাধস্তি। সিভিল পোশাকে থাকা পুলিশকর্মীকে এসএসসি ভবনের কর্মী ভেবে উত্তেজনা।
কাঁদানে গ্যাস নিয়ে হাজির RAF। তবুও অন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা ভয় পেলেন না। মাটি আঁকড়ে পড়ে আছেন তাঁরা। চাকরিহারারা বলছেন, “আমরা সরব না। কাউকে বেরতে দেব না। আমাদের তো ওরাই রাস্তায় নামিয়ে এনেছে। অযোগ্যের তালিকা দিতেই হবে। স্বচ্ছ লিস্ট দিতেই হবে।”
কার্যত গা বাঁচিয়ে SSC সিদ্ধান্ত নিল, সুপ্রিম নির্দেশ মেনেই কাজ করবে তারা। কী বললেন শিক্ষামন্ত্রী? বিস্তারিত পড়ুন: আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি, আস্থা রাখুন, এত অধৈর্য হলে চলবে না: ব্রাত্য
যতক্ষণ না যোগ্য-অযোগ্য বাছাই হবে ততক্ষণ চলবে আন্দোলন। সেই হুঙ্কার দিয়েই সোমবার এসএসসি ভবনে ঘেরাও করেন প্রতিবাদী শিক্ষকরা। এরপর রাত বারোটার পর মুখ খুলল এসএসসি। বিস্তারিত পড়ুন: যোগ্য-অযোগ্যে তরজাতেই গেল না, ‘গা বাঁচিয়ে’ SSC নিল বড় সিদ্ধান্ত
হাতে লাঠি। সঙ্গে কাঁদানে গ্যাস। চাকরিহারাদের ঘিরতে শুরু করেছে র্যাফ। কিন্তু এরপরও অনড় চাকরিহারারা। নড়বেন না কিছুতেই। পরিষ্কার জানালেন চাকরিহারারা। এক শিক্ষিকা বলেন, “আমরা তো মরেই গেছি। আর আমাদের কী মারবে।”
তিলোত্তমা আন্দোলনের মুখ অনিকেত মাহাত পৌঁছলেন করুণাময়ীতে। কেন শৌচালয় খোলা হবে না?প্রশ্ন অনিকেতের। এবার শিক্ষকদের পাশে ডাক্তাররাও। অনিকেত বলেন, “যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা দিয়ে দিলেই হল। শিক্ষকদের কোনও শখ হয়নি রাতে এখানে বসে থাকার। আমরাই জল দিয়ে সাহায্য করব।”
রাত বারোটা বাজতে যায়। এখনও আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। গরমের মধ্যেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। জ্বলছে মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট। দেওয়া হচ্ছে চোর স্লোগান।
একে গরম। তারপর খাবার নেই। জল শেষ। এমনকী শৌচালয়ে পর্যন্ত তালা পড়ে গিয়েছে। সেই সব প্রতিকূলতাকে সঙ্গী করেই রাতভর আন্দোলন করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। দাবি একটাই, SSC-কে যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা দিতে হবে। প্রতিবাদীদের দাবি, পুলিশ আজ নিশ্চুপ। বায়ো টয়লেটেরও ব্যবস্থা করে দিচ্ছে না। খাবারের দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় তাঁদের হুঁশিয়ারি, “এবার SSC ভবনের ভিতরে ঢুকে টয়লেট ব্যবহার করব।”
বিস্তারিত পড়ুন: SSC Protest: ‘আর আধঘণ্টা দেখব, নয়ত SSC ভবনের ভিতরে ঢুকে টয়লেট ব্যবহার করব’
গরমের মধ্যেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তবে অভিযোগ, শৌচালয় ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। যেখান থেকে জল পান করছিলেন সেটাও বন্ধ। এক শিক্ষিকা বলেন, “শৌচালয় ব্যবহার করে দিতে বাধ্য ওরা। সেটা দিচ্ছে না। পুলিশ আজ কোনও কথা বলছে না। আমাদের মান-সম্মান চলে গেল। কী ভাবছে কুকুর ছাগল?”
রাত সাড়ে দশটাতেও এসএসসি ভবনের সামনে বাঁধ ভাঙা বিক্ষোভ। তালিকা এখনও প্রকাশিত হয়নি।
খাবার ঢুকতে দেওয়া হল না
প্রায় সাড়ে আট-ন’ঘণ্টা অতিক্রান্ত। অবস্থান বিক্ষোভ করছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। যতক্ষণ না ‘যোগ্য-অযোগ্যদের’ তালিকা বেরবে সেই সময় পর্যন্ত তাঁরা এভাবেই রাতভর আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এমনকী, এসএসসি ভবনের দু’টো গেট বন্ধেরও নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিবাদীরা।
সবিস্তারে পড়ুন: Teachers Protest: ‘আমাদের পেটে লাথি মেরে ওরা খাবার খাবে? খাওয়াচ্ছি…’, SSC ভবনে পিৎজা-বিরিয়ানির অর্ডার ঢোকার আগেই নষ্ট করলেন প্রতিবাদীরা
ক্ষুব্ধ চাকরিহারা
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আশ্বাস দিয়েছিলেন যোগ্য-অযোগ্য তালিকা প্রকাশ হবে। সোমবার সন্ধে ছ’টায় সেই তালিকা প্রকাশ করবে বলেছিল এসএসসি। তবে তা হয়নি। আর তাতেই ক্ষুব্ধ চাকরিহারারা। এ দিন তেরো জনের প্রতিনিধি দল পৌঁছয় এসএসসি ভবনে। চেয়ারম্যানের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে বৈঠক। পরে চাকরিহারা যে সকল শিক্ষক বৈঠক করেন তাঁরা বেরিয়ে জানান যে বৈঠক কার্যত নিষ্ফলা।
বিস্তারিত পড়ুন: Teacher’s Protest: ‘মাথাপিছু ২ কোটি ক্ষতিপূরণ দিন! CM-শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করে বলুন, দোষ আমাদের, বলি হল ওরা’
শিক্ষকদের বক্তব্য অনুযায়ী
“আমরা যোগ্য। এই দুর্নীতি করেছে সরকার, পর্ষদ, যাঁরা উপরতলায় আছে তাঁরা। আমরা যোগ্য হয়ে রাস্তায় পড়ে আছি। ওরা ঠান্ডা ঘরে বসে আছে। আজ এক এক রকম বার্তা দেওয়া হচ্ছে।”
এক চাকরি হারা শিক্ষিকা বলেন, “আমাদের প্রতিনিধিরা ভিতরে গিয়েছিল। ওদের বলা হয়েছে, প্রথম থেকে তৃতীয় কাউন্সিলিংয়ের নাম দেবে। বাকিদের অযোগ্যদের প্রমাণের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের যোগ্যদের পার্সসেন্টটেজ কম করার চেষ্টা হচ্ছে। এটা আমরা মানব না। হকের চাকরি। কষ্ট করে চাকরি পেয়েছি। নয়ত এখানেই থাকব’
এক চাকরিহারা বলেন, “এরা চোর। এদের কথা বিশ্বাস করে ভুল হয়েছে। তবে তালিকা প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত যাব না। এরা ইচ্ছে করে তালিকা দিচ্ছে না।”
যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ এখনও হচ্ছে না কেন? এই নিয়ে উত্তপ্ত করুণাময়ী চত্বর। চাকরিহারাদের স্লোগানিং চলছে। এরই মধ্যে অসুস্থ এক শিক্ষিকা। তাঁর মাথায় জল ঢলা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে গরমের জন্য এই পরিস্থিতি।
সময় যত বাড়ছে বিক্ষোভ তত বাড়ছে। সন্ধে ছ’টায় তালিকা প্রকাশের কথা ছিল। এখনও কেন বেরল না? করুণাময়ীর সামনে তুমুল ধস্তাধস্তি
কলকাতা: এসএসসি ভবনের সামনে আন্দোলনে চাকরিহারা শিক্ষকরা। সোমবার যোগ্য অযোগ্য লিস্ট বেরনোর কথা ছিল এসএসসি-র তরফে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত (সন্ধে সাড়ে ছ’টা) তা বের হয়নি। এদিন বিকালের পর আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে ময়দানে চাকরিহারারা। চলছে স্লোগানিং। ইতিমধ্যেই তেরো জনের প্রতিনিধি দল আচার্য সদনে পৌঁছে গিয়েছেন আলোচনার জন্য।
২২ এপ্রিল প্যানেল বাতিল হয়েছিল। একবছর হয়ে গেল। প্রতীকী হিসেবে বিশেষ কেক আনেন চাকরিহারারা। আর সেই কেক না কেটে,উৎসর্গ করা হল এসএসসি চেয়ারম্যানকে। পুলিশের হাত থেকে কেক পাঠানো হয় চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের কাছে। তবে তিনি তা প্রত্যাখান করেন। এরপর সেই কেক ফিরিয়ে আনা হয়। প্রতিবাদীদের বক্তব্য এই কেক তাঁরা বাঁধিয়ে রাখবেন।
আচার্য ভবনের পেট্রোল পাম্পের কাছে West Bengal Junior Doctors Front ( WBJDF ) এর মেডিকেল ক্যাম্প।
কারা কাজ করবেন তাঁদের লিস্ট
যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা চাই। সেই দাবি তুলে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চাকরিহারারা। এর মধ্যেই জানা যাচ্ছে ‘যোগ্যদের’ তালিকা দিয়ে ডিআই (DI)-দের চিঠি পাঠাল স্কুল শিক্ষা-দফতর। ‘যোগ্যদের’ আপাতত কাজ চালানোর নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ শিক্ষা-দফতরের।
সোমবার চাকরিহারাদের সঙ্গে SSC চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে বৈঠক ছিল। তবে সেই বৈঠক নিষ্ফলা হয়। এরপর আজ জানা যাচ্ছে ফের একটি বৈঠক হবে SSC চেয়ারম্যানের সঙ্গে চাকরিহারাদের। সূত্রের খবর, সেই বৈঠক হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই একটা তালিকা শিক্ষা-দফতরে পাঠাবে এসএসসি। সংশ্লিষ্ট বৈঠকে কারা যাবেন, তা নিয়ে একটি প্রতিনিধি দল তৈরি শুরু করেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে বৈঠক হবে। তারপর চেয়ারম্যান নিজে কথা বলবেন চাকরিহারাদের সঙ্গে। তারপরই তালিকা পাঠাবেন বিকাশভবনে
স্থানীয় কয়েকটি বাড়ির এক তলার শৌচালয় দিয়েই চলছিল চাকরিহারা মহিলা আন্দোলনকারীদের। গত রাত থেকেই বারংবার বায়ো-টয়লেটের দাবি জানিয়েছিলেন তারা। পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। কিন্তু তাদের জন্য় অবস্থানস্থলে কেউ বায়ো-টয়লেট আনেননি। অবশেষে মঙ্গলবার মহিলা আন্দোলনকারীদের জন্য ৪টি বায়ো-টয়লেট নিয়ে এলেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ।
এই আন্দোলন অর্থহীন, বললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর দাবি, সুপ্রিম কোর্ট বলেই দিয়েছে, কারা স্কুলে ফিরে যেতে পারবেন, কারা বেতন পাবেন। আর কী বললেন ব্রাত্য বসু, দেখে নিন একনজরে
সুপ্রিম কোর্ট আমাদের তালিকা প্রকাশ করতে বলেনি: ব্রাত্য বসু
বেলা বাড়ার পর দেখা গেল এক অন্য ছবি। স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরে আটকে থাকা কর্মী ও কমিশনের চেয়ারম্যানের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। হাতে তরমুজ ও বিস্কুটের প্যাকেট নিয়ে তাঁরা চলে যান এসএসসি অফিসের দরজায়। প্রশ্ন করলে তাঁরা বলেন, “চেয়ারম্যান স্যর ও বাকিদের জন্য খাবার পাঠাচ্ছি। গরমের সময় কষ্ট হয়, তা আমরা জানি। তাই তরমুজ দিচ্ছি। মানবিকতার খাতিরে আমরা এই সব খাবার দিচ্ছি।”
বেলার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরম বাড়ছে। অসুস্থ হয়ে পড়লেন এক আন্দোলনকারী মহিলা। তাঁকে দেখতে গেলেন চিকিৎসক তমোনাশ ঘোষ। চিকিৎসক জানান, শরীর থেকে জল বেরিয়ে গিয়েছে প্রচুর।
বিস্তারিত পড়ুন: ‘আমাদের শরীরটাই রয়ে গিয়েছে, আত্মা মরে গিয়েছে…’ , নাছোড় আন্দোলনে নেমে অসুস্থ হতে শুরু করেছেন চাকরিহারারা
চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার সহ কোনও কর্মীকেই এসএসসি-র অফিস থেকে বেরতে দেওয়া হয়নি। সকালে দেখা গেল, ওআরএস-এর প্যাকেট হাতে দাঁড়িয়ে আছেন চাকরিহারারা।
বিস্তারিত পড়ুন: ‘ওরআএস খান, সুস্থ থাকুন… তাই বলে বারবার বিরিয়ানি আনবেন আর আমরা দেখব!’ বিস্কুট খেয়েই রাত কাটল চেয়ারম্যানের
সকালে চাকরিহারা আন্দোলনকারীরা বলেন, “আমরা রাত জেগে রাস্তায় বসে আছি, আর চেয়ারম্যান ভিতরে আরামে ঘুমোচ্ছেন। আমাদের দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না কেউ।”
এই পরিস্থিতির মধ্যে সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ হঠাৎ দেখা যায়, এক ব্যক্তি চায়ের ফ্লাস্ক ও মাটির ভাঁড় নিয়ে এসএসসি ভবনের দিকে যাচ্ছেন।
বিস্তারিত পড়ুন: রাতভর রাস্তায় চাকরিহারারা, সাত সকালে SSC চেয়ারম্যানের জন্য চা আসতেই ভাঁড় ভেঙে ফেললেন ওরা
ভাঙা হল চায়ের ভাঁড়
রাতভর দফায় দফায় উত্তাল হয়েছে করুণাময়ী চত্বর। স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসের সামনে রাতভর বসে রইলেন চাকরিহারারা। যোগ্য-অযোগ্য তালিকা প্রকাশের দাবিতে অনড় তাঁরা। মঙ্গলবার ভোরের আলো ফুটলেও থামল না স্লোগান। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘হোক কলরব’-এর মতো স্লোগান শোনা যাচ্ছে বিক্ষোভকারীদের মুখ থেকে। সকালেও তাঁরা জানালেন, রাস্তা থেকে সরবেন না তাঁরা।
এক চাকরি প্রার্থী বলেন, “আমরা সারা রাত রাস্তায় বসে আছি, আর এসএসসি-র চেয়ারম্যান ভিতরে আরাম করে ঘুমোচ্ছে।”
চাকরিহারা মহিলাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি পুলিশের। এক শিক্ষিকা বলেন, “পুলিশ আমাদের গুঁতো মারছে। আমরা পড়াশোনা করে এখানে এসেছি। মারামারি করতে শিখিনি।” পাল্টা পুলিশ আধিকারিক বলেন, “আমাদের মহিলা পুলিশ আছে। আপনারা যা করার আন্দোলন করুন। আমরা আছি।”
এসএসসি ভবন থেকে পুলিশ কর্মী বেরচ্ছিলেন। সেই সময় চাকরিহারারা আটকানোর চেষ্টা করেন। হয় ধস্তাধস্তি। সিভিল পোশাকে থাকা পুলিশকর্মীকে এসএসসি ভবনের কর্মী ভেবে উত্তেজনা।
কাঁদানে গ্যাস নিয়ে হাজির RAF। তবুও অন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা ভয় পেলেন না। মাটি আঁকড়ে পড়ে আছেন তাঁরা। চাকরিহারারা বলছেন, “আমরা সরব না। কাউকে বেরতে দেব না। আমাদের তো ওরাই রাস্তায় নামিয়ে এনেছে। অযোগ্যের তালিকা দিতেই হবে। স্বচ্ছ লিস্ট দিতেই হবে।”
কার্যত গা বাঁচিয়ে SSC সিদ্ধান্ত নিল, সুপ্রিম নির্দেশ মেনেই কাজ করবে তারা। কী বললেন শিক্ষামন্ত্রী? বিস্তারিত পড়ুন: আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি, আস্থা রাখুন, এত অধৈর্য হলে চলবে না: ব্রাত্য
যতক্ষণ না যোগ্য-অযোগ্য বাছাই হবে ততক্ষণ চলবে আন্দোলন। সেই হুঙ্কার দিয়েই সোমবার এসএসসি ভবনে ঘেরাও করেন প্রতিবাদী শিক্ষকরা। এরপর রাত বারোটার পর মুখ খুলল এসএসসি। বিস্তারিত পড়ুন: যোগ্য-অযোগ্যে তরজাতেই গেল না, ‘গা বাঁচিয়ে’ SSC নিল বড় সিদ্ধান্ত
হাতে লাঠি। সঙ্গে কাঁদানে গ্যাস। চাকরিহারাদের ঘিরতে শুরু করেছে র্যাফ। কিন্তু এরপরও অনড় চাকরিহারারা। নড়বেন না কিছুতেই। পরিষ্কার জানালেন চাকরিহারারা। এক শিক্ষিকা বলেন, “আমরা তো মরেই গেছি। আর আমাদের কী মারবে।”
তিলোত্তমা আন্দোলনের মুখ অনিকেত মাহাত পৌঁছলেন করুণাময়ীতে। কেন শৌচালয় খোলা হবে না?প্রশ্ন অনিকেতের। এবার শিক্ষকদের পাশে ডাক্তাররাও। অনিকেত বলেন, “যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা দিয়ে দিলেই হল। শিক্ষকদের কোনও শখ হয়নি রাতে এখানে বসে থাকার। আমরাই জল দিয়ে সাহায্য করব।”
রাত বারোটা বাজতে যায়। এখনও আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। গরমের মধ্যেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। জ্বলছে মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট। দেওয়া হচ্ছে চোর স্লোগান।
একে গরম। তারপর খাবার নেই। জল শেষ। এমনকী শৌচালয়ে পর্যন্ত তালা পড়ে গিয়েছে। সেই সব প্রতিকূলতাকে সঙ্গী করেই রাতভর আন্দোলন করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। দাবি একটাই, SSC-কে যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা দিতে হবে। প্রতিবাদীদের দাবি, পুলিশ আজ নিশ্চুপ। বায়ো টয়লেটেরও ব্যবস্থা করে দিচ্ছে না। খাবারের দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় তাঁদের হুঁশিয়ারি, “এবার SSC ভবনের ভিতরে ঢুকে টয়লেট ব্যবহার করব।”
বিস্তারিত পড়ুন: SSC Protest: ‘আর আধঘণ্টা দেখব, নয়ত SSC ভবনের ভিতরে ঢুকে টয়লেট ব্যবহার করব’
গরমের মধ্যেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তবে অভিযোগ, শৌচালয় ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। যেখান থেকে জল পান করছিলেন সেটাও বন্ধ। এক শিক্ষিকা বলেন, “শৌচালয় ব্যবহার করে দিতে বাধ্য ওরা। সেটা দিচ্ছে না। পুলিশ আজ কোনও কথা বলছে না। আমাদের মান-সম্মান চলে গেল। কী ভাবছে কুকুর ছাগল?”
রাত সাড়ে দশটাতেও এসএসসি ভবনের সামনে বাঁধ ভাঙা বিক্ষোভ। তালিকা এখনও প্রকাশিত হয়নি।
খাবার ঢুকতে দেওয়া হল না
প্রায় সাড়ে আট-ন’ঘণ্টা অতিক্রান্ত। অবস্থান বিক্ষোভ করছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। যতক্ষণ না ‘যোগ্য-অযোগ্যদের’ তালিকা বেরবে সেই সময় পর্যন্ত তাঁরা এভাবেই রাতভর আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এমনকী, এসএসসি ভবনের দু’টো গেট বন্ধেরও নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিবাদীরা।
সবিস্তারে পড়ুন: Teachers Protest: ‘আমাদের পেটে লাথি মেরে ওরা খাবার খাবে? খাওয়াচ্ছি…’, SSC ভবনে পিৎজা-বিরিয়ানির অর্ডার ঢোকার আগেই নষ্ট করলেন প্রতিবাদীরা
ক্ষুব্ধ চাকরিহারা
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আশ্বাস দিয়েছিলেন যোগ্য-অযোগ্য তালিকা প্রকাশ হবে। সোমবার সন্ধে ছ’টায় সেই তালিকা প্রকাশ করবে বলেছিল এসএসসি। তবে তা হয়নি। আর তাতেই ক্ষুব্ধ চাকরিহারারা। এ দিন তেরো জনের প্রতিনিধি দল পৌঁছয় এসএসসি ভবনে। চেয়ারম্যানের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে বৈঠক। পরে চাকরিহারা যে সকল শিক্ষক বৈঠক করেন তাঁরা বেরিয়ে জানান যে বৈঠক কার্যত নিষ্ফলা।
বিস্তারিত পড়ুন: Teacher’s Protest: ‘মাথাপিছু ২ কোটি ক্ষতিপূরণ দিন! CM-শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করে বলুন, দোষ আমাদের, বলি হল ওরা’
শিক্ষকদের বক্তব্য অনুযায়ী
“আমরা যোগ্য। এই দুর্নীতি করেছে সরকার, পর্ষদ, যাঁরা উপরতলায় আছে তাঁরা। আমরা যোগ্য হয়ে রাস্তায় পড়ে আছি। ওরা ঠান্ডা ঘরে বসে আছে। আজ এক এক রকম বার্তা দেওয়া হচ্ছে।”
এক চাকরি হারা শিক্ষিকা বলেন, “আমাদের প্রতিনিধিরা ভিতরে গিয়েছিল। ওদের বলা হয়েছে, প্রথম থেকে তৃতীয় কাউন্সিলিংয়ের নাম দেবে। বাকিদের অযোগ্যদের প্রমাণের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের যোগ্যদের পার্সসেন্টটেজ কম করার চেষ্টা হচ্ছে। এটা আমরা মানব না। হকের চাকরি। কষ্ট করে চাকরি পেয়েছি। নয়ত এখানেই থাকব’
এক চাকরিহারা বলেন, “এরা চোর। এদের কথা বিশ্বাস করে ভুল হয়েছে। তবে তালিকা প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত যাব না। এরা ইচ্ছে করে তালিকা দিচ্ছে না।”
যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ এখনও হচ্ছে না কেন? এই নিয়ে উত্তপ্ত করুণাময়ী চত্বর। চাকরিহারাদের স্লোগানিং চলছে। এরই মধ্যে অসুস্থ এক শিক্ষিকা। তাঁর মাথায় জল ঢলা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে গরমের জন্য এই পরিস্থিতি।
সময় যত বাড়ছে বিক্ষোভ তত বাড়ছে। সন্ধে ছ’টায় তালিকা প্রকাশের কথা ছিল। এখনও কেন বেরল না? করুণাময়ীর সামনে তুমুল ধস্তাধস্তি