কলকাতা : চাকরির দাবিতে কেউ দিনের পর দিন রাস্তায় বসে রয়েছেন, কেউ দিনের পর দিন আদালত থেকে কমিশনের দরজায় দরজায় ঘুরেছেন। সেই নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ যখন ক্রমশ আরও প্রকট হচ্ছে, তখন স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) তরফে প্রকাশ করা ওএমআর শিট (OMR Sheet) দেখে চোখ কপালে রাজ্যবাসীর। ১৮৩ জনের পর আরও ৪০ জনের নাম বেআইনিভাবে সুপারিশ করার কথা স্বীকার করেছে কমিশন। সে কথাই শুনে মঙ্গলবার দুপুরেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, যাতে এদিনই ৪০ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকা ও ৪০ জনের ওএমআর শিট এসএসসি-র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করল এসএসসি।
কিছুদিন আগেই আদালতের নির্দেশে এমন ১৮৩ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল এসএসসি-র তরফে। কমিশন দাবি করেছিল, নম্বর কম থাকা সত্ত্বেও ভুল করে সুপারিশ করা হয়েছিল ১৮৩ জনের নাম। তাঁদের মধ্যে ৮১ জন চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই সেই তালিকা নিয়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছে শিক্ষা মহলে। এবার সামনে এল আরও ৪০ জনের নাম। এবার ওএমআর শিটও প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। আর তাতে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ চাকরি প্রার্থীর ওএমআর শিটের উত্তরের জায়গা ফাঁকা, অর্থাৎ কোনও অপশনে দাগ নেই। সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পাওয়ার যে অভিযোগ বঞ্চিত প্রার্থীরা তুলেছেন, সেটাই আরও একবার স্পষ্ট হল বলে মনে করছেন শিক্ষা মহলের একাংশ। তবে এই ৪০ জনের মধ্যে কতজন এই মুহূর্তে চাকরি করছেন, তা স্পষ্ট নয়।
অভিযোগ উঠছে, এমন অনেক ওএমআর-ও রয়েছে, যাতে রোল নম্বরও ভুল লেখা আছে। বঞ্চিত প্রার্থীরা মজা করে বলে থাকেন, ‘সাদা খাতার মজাই আলাদা।’ আজ এসএসসি-র ওয়েবসাইটে প্রকাশ হওয়া খাতায় সেটাই দেখা যাচ্ছে।
নবম-দশমের এই মামলায় সিবিআই ৯৫২ জনের ভুয়ো চাকরির কথা বলেছিল। এই ৪০ জন তারই অংশ বলে সূত্রের খবর। শিক্ষা মহল ও আইনজীবী মহলের একাংশ মনে করছে, সিবিআই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দিলে সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
উল্লেখ্য, মোট ৫৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হয়। ৩৫ নম্বর থাকে বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ওপর। ১০ নম্বর থাকে ভাইভায়। সেই ওএমআরে কোনও উত্তর না দেওয়া সত্ত্বেও কী ভাবে চাকরি হল, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।