কলকাতা: চিকিৎসকদের আন্দোলনের জেরে কার্যত থমকে গিয়েছে দিল্লির চিকিৎসা পরিষেবা। নিট-পিজিটিদের কাউন্সেলিংয়ে দেরি হওয়ার জন্য দিল্লিতে পথে নেমেছিলেন রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা। সেই মিছিলে চিকিৎসকদের উপরে বিনা প্ররোচনায় লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। দিল্লির সেই আন্দোলনের আঁচ এবার কলকাতাতেও। প্রতিবাদে কর্মবিরতি শুরু করেছেন এসএসকেএমের পিজিটিরা।
দিল্লির ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি প্রতিবাদে এসএসকেএমে কর্মবিরতি শুরু করেছেন পিজিটিরা। বৃহস্পতিবার মঞ্চ তৈরি করে শুরু হল অবস্থান বিক্ষোভ। জুনিয়র চিকিৎসকদের বক্তব্য, দাবি না মেটা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। এদিকে এভাবে কর্মবিরতি দীর্ঘদিন ধরে চললে রোগী পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের।
বিশেষ করে এই মুহূর্তে করোনা-ওমিক্রমের জেরে জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যেভাবে আশঙ্কার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেখানে চিকিৎসকরা যদি কোনওভাবে মুখ ফেরান তাহলে তা যে আরও ভয়ঙ্কর ছবি দেখাবে তা এক কথায় বলাই যায়। কিন্তু এসএসকেএমের পিজিটিদের দাবি, এইভাবে বিনা বিচারে দিনের পর দিন চিকিৎসকদের উপর যে অন্যায় হচ্ছে তারও একটা জোরাল প্রতিবাদ প্রয়োজন। চিকিৎসকদেরও কিছু প্রাপ্য আছে, কিছু দাবিদাওয়া আছে। সেগুলির দিকেও কর্তৃপক্ষ নজর দিক দাবি পিজিটি, ইন্টার্নদের। ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজেও চলছে কর্মবিরতি।
সেপ্টেম্বরে পরীক্ষার পর তিন মাস পার হয়ে গিয়েছে। এখনও নিট-পিজিটিদের কাউন্সেলিং শুরু হয়নি। কাউন্সেলিং দ্রুত শুরু করার দাবিতে মিছিল করছিলেন দিল্লির রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা। দিল্লিতে সফদরজং হাসপাতালের আন্দোলনরত চিকিৎসকদের উপর পুলিশি লাঠিচার্জ ও ধস্তাধস্তির অভিযোগ ওঠে। ঘটনার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরাও বিক্ষোভ-ধরনায় বসেন।
দিল্লি পুলিশের তরফে রাজধানীতে বিক্ষোভ চলাকালীন আবাসিক চিকিৎসকদের হেনস্থার যে অভিযোগ উঠেছে, তা অস্বীকার করা হয়েছে দিল্লি পুলিশের তরফে। চিকিৎসকদের অভিযোগ, প্রতিবাদ মিছিলের সময় তাঁদের উপর অন্যায় ভাবে হামলা চালিয়েছে পুলিশ। মহিলা চিকিৎসকদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করা হয়েছে। তাদের দাবি, বিক্ষোভকারীদের ওপর কোনও লাঠিচার্জ হয়নি। অতিরিক্ত কমিশনার (সেন্ট্রাল রেঞ্জ) সুমন গয়াল বলেছেন, বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের আটকাতে গিয়ে বরং কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন এবং পুলিশের কিছু গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাংলায় এসএসকেএমের পিজিটিরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন। অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন। এক আন্দোলনকারী পড়ুয়া বলেন, “প্রায় দু’ বছর ধরে খেটে এত ভাল ফল করেছে যাঁরা, তাঁদের ভবিষ্যৎকে এভাবে অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেওয়ার অধিকার কারও নেই। অথচ তা এক বছর ধরে অনিশ্চিত হয়ে আছে। এর জন্য শান্তিপূর্ণ মিছিল হওয়ার কথা ছিল নয়াদিল্লিতে। সেখানে মিছিলে পুলিশের যে বর্বরতা, যে নৃশংসতা তা মানা যায় না। আমরা অপরাধী নই। আমরা শুধু আমাদের ন্যায্য দাবিটাই চেয়েছি। যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি নিট-পিজিটির কাউন্সেলিংটা যাতে করা যায়, চিকিৎসক পড়ুয়াদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করা যায়। এই দাবিগুলি মিটলে আমরাও সঙ্গে সঙ্গে আবার কাজে যোগ দেব।”
আরও পড়ুন: Saltlake Blast: বিধাননগর ভোটের আগে বিস্ফোরণে কাঁপল সল্টলেক! জখম দুই শিশু