কলকাতা: কোভিড বিপদের মধ্যেই পড়ুয়া জমায়েতের ডাক। রাজ্যের শিক্ষা দফতরের নোটিস নিয়ে জোর বিতর্ক বাংলায়। ১ থেকে ৭ জানুয়ারি স্টুটেন্ডস উইক। তিন তারিখে এক অনুষ্ঠানে নেতাজি ইন্ডোরে উপস্থিত থাকবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পড়ুয়াদের মধ্যে কোভিড সংক্রমণের আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই সরব বিরোধীরা। প্রত্যেক জেলায় জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে স্টুডেন্টস উইক পালন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই, রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদেরও নির্দেশিকার কপি পাঠানো হয়েছে।
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ জুড়ে রাজ্য সরকার স্টুন্ডেটস উইক পালন করা হবে বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। আগামী ১ ও ২ জানুয়ারি স্কুল মারফত মিড-ডে-মিল সামগ্রী বিতরণ করা হবে ছাত্র-ছাত্রীদের। তারই সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো শুভেচ্ছাপত্র দেওয়া হবে ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের। ইতিমধ্যেই তার গাইড লাইন চূড়ান্ত করেছে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর। অন্য দিকে স্টুডেন্ট উইকে কর্মসূচি হিসেবে প্রায় ২৫ হাজার পড়ুয়াকে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে উচ্চ শিক্ষা দফতর।
এদিকে, বাংলায় এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছুঁয়েছে হাজারে। তার পর রয়েছে নয়া স্ট্রেইন ওমিক্রনের ভয়। এই প্রেক্ষিতে আগামী ৩ জানুয়ারি থেকে কলকাতার স্কুলে স্কুলে পড়ুয়াদের করোনা টিকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ১ ও ২ জানুয়ারি স্কুল পরিদর্শনে যাবেন এক্সিকিউটিভ অফিসার। কলকাতায় ১৫-১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণ শুরু ৩ জানুয়ারি থেকে। প্রথম দিন কলকাতার ১৬ টি বরোর ১৬ স্কুলে টিকাকরণ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
১৭৭ দিন পর হাজার পার করেছে করোনা পজিটিভের সংখ্যা। আক্রান্তদের বেশিরভাগই কলকাতা ও শহরতলির। বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আর গা ছাড়া মনোভাব দেখানোর কোনও জায়গা নেই, এমনটাই বলছেন স্বাস্থ্য় দফতরের অধিকর্তারা। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা প্রতিদিনের তথ্য খতিয়ে দেখে অভ্যন্তরিণ বিশ্লেষণ করেছেন। জেলাগুলিকে ইতিমধ্যেই তৃতীয় ঢেউ নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তারা। দৈনিক করোনা বুলেটিনে যে তথ্য সামনে আসছে, তার থেকেই পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর বলে দাবি করছেন স্বাস্থ্য কর্তারা।
এই পরিস্থিতিতে ছাত্র সপ্তাহ পালনের যৌক্তিকতা খুঁজছেন বিশেষজ্ঞরা। শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, ” আমি মনে করি এটা পরস্পরবিরোধী কথাবার্তা ও আচরণ। যদি সত্যিই কোভিড ও ওমিক্রনের তৃতীয় ঢেউ এসে পড়ে, তাহলে সতর্ক হওয়া উচিত। এই ধরনের সম্মেলনের মধ্যে যাওয়া উচিত নয়। জমায়েত করা উচিত নয়। তবে স্কুল খোলা রাখাটা জরুরি। স্কুল বন্ধ হলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। ভয়ঙ্কর ক্ষতি হবে।”
অন্যদিকে, চিকিৎসক অনির্বাণ দোলুই বলেন, “যে কোনও ধরনের ভিড় কোভিড ছড়িয়ে পড়ার জন্য আদর্শ। যদি না আমরা কোভিড বিধি ঠিকমতো পালন না করতে পারি। আমরা নিউ নর্মালে কীভাবে কোভিড বিধি মেনে সব অনুষ্ঠান করতে পারব, সেদিকে নজর রাখতে হবে।”