State Government issued restriction on International Travel: ‘পজিটিভ’ না হলেও ১৪ দিন থাকতে হবে একান্তবাসে, আন্তজার্তিক ভ্রমণে নয়া নির্দেশিকা রাজ্যের
Kolkata: যাত্রীরা নির্দেশিকা মেনে চলছেন কি না তার উপরে নজরদারি থাকবে কলকাতা-সহ জেলা স্তরের কনট্যাক্ট ট্রেসিং সেলের। দেশে ফেরার পরে কেউ পজিটিভ হলে তাঁর নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হবে
কলকাতা: কোভিডের নয়া ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এখন উদ্বেগের কারণ। ইতিমধ্যেই দেশের রাজধানীতে হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে। পাল্লা দিয়ে কলকাতাতেও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ সংক্রান্ত নির্দেশিকায় বদল আনল রাজ্য সরকার। বাধ্যতামূলক করা হল নমুনা পরীক্ষা (RTPCR)। বিদেশ থেক ফেরার ৮ দিনের মাথায় দ্বিতীয়বার ফের নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ না এলেও ১৪ দিনের একান্তবাস বাধ্যতামূলক বিদেশ ফেরত উড়ান যাত্রীদের এমনটাই নির্দেশ রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার দফতরের।
ঠিক কী নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে?
রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের তরফে প্রকাশিত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক আরটিপিসিআর (RTPCR) পরীক্ষা। বিদেশ ফেরত উড়ান যাত্রীদের নমুনা পরীক্ষা করতেই হবে। বিমানবন্দরে নমুনা পরীক্ষার পর ফের ৮ দিনের মাথায় নতুন করে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করতে হবে। সেই নির্দেশ যাবে সংশ্লিষ্ট পুরসভা মারফত। যদি ৮ দিনের মাথায় নমুনা পরীক্ষার পরেও রিপোর্ট পজিটিভ না আসে তবে ফের ১৪ দিনের জন্য একান্তবাসে বাধ্যতামূলকভাবে থাকতে হবে। তারপর ফের ওই যাত্রীর নমুনা পরীক্ষা হবে। তবে, আট দিনের দিন দ্বিতীয়বার পরীক্ষায় রিপোর্ট পজিটিভ এলে সেই নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সে পাঠাতে হবে। কিংবা কোনও উপসর্গ দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ নমুনা পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কীভাবে চলবে নজরদারি?
যাত্রীরা নির্দেশিকা মেনে চলছেন কি না তার উপরে নজরদারি থাকবে কলকাতা-সহ জেলা স্তরের কনট্যাক্ট ট্রেসিং সেলের। দেশে ফেরার পরে কেউ পজিটিভ হলে তাঁর নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। বিমানে আসা যাত্রীদের কেউ পজিটিভ হলে একই পদ্ধতিতে আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা সহযাত্রীদের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের পাশাপাশি কনট্যাক্ট ট্রেসিং এবং পরবর্তী চিকিৎসা পদ্ধতি কী হবে তা স্পষ্ট করা হয়েছে নতুন প্রোটোকলে।
বলা হয়েছে, কোনও যাত্রীর নমুনা পরীক্ষায় রিপোর্ট পজিটিভ এলে তিনি যে বিমানে ভ্রমণ করেছেন সেই বিমানের সহ-যাত্রীদেরও পরীক্ষা করা হবে। সমস্ত পরীক্ষার রিপোর্ট একটি নির্দিষ্ট সরকারি ইমেল আইডিতে জমা দেওয়া হবে।
বঙ্গে প্রথম ওমিক্রন আক্রান্ত শিশু
প্রসঙ্গত, বঙ্গে প্রথম ওমিক্রন আক্রান্ত শিশুটির অনুপ্রবেশ ঘটেছিল বিমানবন্দরের মাধ্যমেই। মুর্শিদাবাদের ওই শিশু তার মা-বাবার সঙ্গে আবু ধাবি থেকে হায়দ্রাবাদ হয়ে বঙ্গে এসে পৌঁছয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, গত ১১ ডিসেম্বর আবু ধাবি থেকে এসে হায়দরাবাদে বিমানবন্দরে অবতরণ করে ওই শিশু ও তার বাবা-মা। হায়দ্রাবাদে দু দিন থাকার পর ১৪ ডিসেম্বর কলকাতায় ফেরে সেই পরিবার। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে ওইদিনই মুর্শিদাবাদের বাড়িতে ফেরেন তাঁরা।
এ দিকে, আবু ধাবি থেকে এসে হায়দরাবাদে বিমানবন্দরে নামার পর ওই পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের করোনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে বাবা-মায়ের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তবে শিশুর নমুনায় করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপরই ওই নমুনা জেনোম সিকোয়েন্সিং-এর জন্য পাছানো হয়। তেলেঙ্গানা সরকার ওই রিপোর্টে জানতে পারে শিশুটি ওমিক্রনে আক্রান্ত। এরপরই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সে কথা জানানো হয় তেলেঙ্গানার তরফ থেকে।
তবে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর ওই শিশুকে কী ভাবে তার পরিবার এতটা পথ নিয়ে আসে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ওমিক্রন পজিটিভ বালক কী ভাবে ফরাক্কা পৌঁছয়? প্রশ্ন ওঠে সেখানেই। এই প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, ডোমেস্টিক উড়ানে আসায় নজরদারি এড়িয়ে গিয়েছে ওই বালক। প্রোটোকল মেনে আন্তর্জাতিক উড়ানে আসা যাত্রীদেরই পরীক্ষা করা হচ্ছে। নজরদারির ফাঁক কোথায়, এই ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
বঙ্গে ভয় ধরাচ্ছে করোনার হালচাল
ক্রমেই রাজ্যে ভয় ধরাচ্ছে করোনার হালচাল। গণতন্ত্রের উৎসব, যিশুপুজোর উন্মাদনা কাটিয়ে শহর এখন বছর শেষের উল্লাসে মাতোয়ারা। এরই মধ্যে ভয় ধরিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন। মঙ্গলবার এ রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৫২ জন। কলকাতাতে এই সংখ্যাটা ৩৮২। পজিটিভিটি রেটও উপরদিকেই, ২.৩৫ শতাংশ। একদিনে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। এর মধ্যে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনায় ২ জন করে করোনার বলি হয়েছেন। হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মৃত্যু হয়েছে ১ জন করে। উত্তর ২৪ পরগনাতেও ফের আক্রান্ত বেড়েছে। নতুন করে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১০২ জন। হাওড়ায় ৫৮ জন। এরপরই হুগলিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৪১।