কলকাতা: ঠিক এভাবেই পুলিশের তোলাবাজির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। নিন্দুকেরা বলে, পুলিশের পকেট ভারী করার অভ্যাসটা বেশ পুরনো। সে নিয়ে তর্ক হতেই পারে। কিন্তু, উর্দিধারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকাটা তো নেহাত কম নয়। একদিন আগেই তো নলহাটির একটা ভিডিয়ো সামনে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে প্রকাশ্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ‘তোলা’ তুলছে পুলিশ। যদিও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পুলিশ। অন্যদিকে আরও এক ছবি দেখা গিয়েছে বোলপুরে। সেখানে আবার আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির অভিযোগে পুলিশের হাতে হাতকড়া পড়েছে।
শনিবার বীরভূমের রামপুরহাট থেকে গ্রেফতার কনস্টেবল মনোজিত্ বাগীশ। কেন? অভিযোগ, বেআইনি পথে দেদার কামাই করেছেন এই কনস্টেবল। ধৃত কনস্টেবল রামপুরহাট থানায় কর্মরত ছিলেন। এর আগে হাওড়া গ্রামীণ ও হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটে কাজ করেছেন। শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা।
‘কোটিপতি’ কনস্টেবল
সূত্রের খবর, ২০২২ সালের অগাস্টে মনোজিত্ বাগীশের বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখায় অভিযোগ জমা পড়ে। তার পরই কোটিপতি কনস্টেবলের উপর গোয়েন্দাদের নজর। কারণ, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ। পুলিশ সূত্রের খবর, মনোজিতের ফিক্সড ডিপোজিটের পরিমাণ ৭৬ লক্ষ টাকা। জীবনবিমা ১০ লক্ষের। ১১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকায় বান্ধবীকে দিয়েছেন গাড়ি উপহার। গোয়েন্দাদের নজরে কনস্টেবলের জমি ও সোনাও।
সত্যিই কি বছর ৪৭-এর কনস্টেবল মনোজিত্ বাগীশ কোটিপতি? খোঁজ করতে বারুইপুর পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দত্তপাড়ায় পৌঁছে গিয়েছিল টিভি নাইন বাংলা। অভিজাত ওই এলাকায় দেখা গেল এক পেল্লাই বাড়ি। লোকজনকে জিজ্ঞেস করতেই সকলেই চিনিয়ে দিয়ে বলল এই বাড়িই অভিজিতের। কোন জাদুবলে পেল্লাই এই বাড়ি? খোঁজ করতে আত্মীয় থেকে প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে টিভি নাইন বাংলা। যদিও বিশেষ কেউ তাঁর সম্পর্কে কথা বলতে চাইলেন না কেউই। কিন্তু, তার মধ্যেই একজন ক্যামেরার সামনে মুখ খুললেন। শুধু এটুকু বললেন পুলিশের চাকরির পর বাড়ি করেছে অভিজিৎ।
তবে ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে না চাইলেও, অনেকেই বলছেন ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। সত্যিই যদি তাই হয়, তা হলে টাকার উত্স কী? পৈতৃক সম্পত্তি? না কি সবটাই কালো টাকার খেল? অভিযুক্ত কনস্টেবল মনোজিত্ বাগীশকে হেফাজতে নিয়ে তারই খোঁজ চালাচ্ছে কলকাতা পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা।