কলকাতা: চিনা নাগরিক হান জুনেইকে (Han Zeune) জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে তদন্তকারীদের হাতে। এই চিনা নাগরিকের সঙ্গে চিনের সামরিক বাহিনীর যোগাযোগ থাকার সম্ভাবনা ক্রমেই জোরাল হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে হাওলাযোগের সম্ভাবনাও প্রখর বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। মালদহে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ধৃত হান জুনেই-এর তদন্তভার ইতিমধ্যেই এসটিএফের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে। কলকাতাতে আনাও হয়েছে হানকে। এসটিএফের সদর দফতরে বৃহস্পতিবার এই চিনা নাগরিককে জেরা করেন তদন্তকারীরা।
সূত্রের খবর, হান জুনেইকে জেরায় উঠে আসছে হাওয়ালা যোগ। ২০১৯ সালে ভারতের গুরুগ্রামে স্টার্ট স্প্রিং হোটেল নামে আট কোটি টাকার একটি হোটেল কিনেছিলেন হান। কিন্তু এই বিপুল টাকা তিনি কোথা থেকে পেলেন? সে প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়েই তদন্তকারীরা জানতে পারছেন বাংলাদেশ, নেপাল, মায়ানমার, ভারত ও চিনে হাওয়ালার মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন চলত হানের। হোটেল ছাড়াও ভারতে আরও সম্পত্তি রয়েছে হানের। সেগুলি কোথায় এবং কার কার নামে তা জানার চেষ্টা চলছে।
সাইবার প্রতারণার পাশাপাশি দেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থাকেও প্রভাবিত করার কোনও ষড়যন্ত্র হানের ছিল কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হান চিনের গুপ্তচর বলেই প্রাথমিক অনুমান তদন্তকারীদের। তাঁর সঙ্গে লাল ফৌজের দেশের সামরিক বাহিনীর যোগাযোগ থাকার সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।
সম্প্রতি মালদহের কালিয়াচক থেকে গ্রেফতার করা হয় চিনের নাগরিক হান জুনেইকে। প্রথমে তিনি জানিয়েছিলেন এ দেশে বেড়াতে এসেছেন। কিন্তু পরে জেরায় জেরায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসতে থাকে। এখনও অবধি যা তথ্যপ্রমাণ তদন্তকারীদের হাতে এসেছে, তাতে ভারতের আর্থিক পরিকাঠামো ধ্বংস করাই হানের মূল লক্ষ্য ছিল বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ত্রিপুরা ‘উদ্ধারে’ মুকুল-অস্ত্রেই ধার তৃণমূলের, ঘর বাঁচাতে আরএসএসের শরণে বিজেপি
জেরায় উঠে আসা তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, ‘মাল্টি লেভেল মার্কেটিং’ এর নাম করে হান ও তাঁর সঙ্গী সান জিয়াং তথ্য পাচারের কাজ করতেন। পাওয়ার ব্যাঙ্ক ও ইভেন্ট প্ল্যান্ট বলে দু’টি অ্যাপও তৈরি করেছিলেন তাঁরা। জানা যায়, টাকা দ্বিগুণ করিয়ে দেওয়ার নাম করে, সেই অ্যাপের মাধ্যমেই তাঁরা ভারতে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লগ্নি করাতেন তিনি। গত মঙ্গলবার এসটিএফের হাতে হানের তদন্তভার যায়। বুধবার মালদহ আদালতে তোলা হয় হান জুনেইকে। এদিনই তাঁকে ১০ দিনের এসটিএফের হেফাজত দেওয়া হয়। এরপরই কলকাতায় নিয়ে আসা হয় হানকে। সেখানেই আপাতত জেরা চলবে।