AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

অনুপাত বৈষম্য: পড়ুয়া আছে শিক্ষক নেই, কোথাও ছাত্রছাত্রীর ৬ গুণ শিক্ষক! রিপোর্টে চাঞ্চল্য

Teacher Student Ratio: কলকাতার একাধিক স্কুলে শিক্ষক থাকলেও নেই ছাত্র। ২০১৭ সালের শেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজা মনীন্দ্র রায় রোডের শহীদ স্মৃতি বিদ্যালয়ে মোট পড়ুয়ার সংখ্যা মাত্র ৮। শিল্প কলা শিক্ষা মন্দিরে মোট পড়ুয়া ২৬। পাইকপাড়া কুমার আশুতোষ ইনস্টিটিউশন পড়ুয়ার সংখ্যা ১৪, মাধ্যমিক স্তরে পড়ুয়া স্রেফ ৩ জন।

অনুপাত বৈষম্য: পড়ুয়া আছে শিক্ষক নেই, কোথাও ছাত্রছাত্রীর ৬ গুণ শিক্ষক! রিপোর্টে চাঞ্চল্য
উচ্চ মাধ্যমিকের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নিয়ে নির্দেশিকা সংসদের ( প্রতীকী ছবি)
| Edited By: | Updated on: Aug 10, 2021 | 11:57 PM
Share

সুমন মহাপাত্র: বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যে সরকারি স্কুলগুলি ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতই বা কী, এ নিয়ে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট এই বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলে রাজ্য সরকারকে। এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল জেলার স্কুলগুলিতে পূর্ণ সময়ের শিক্ষকের অভাব ও স্কুলছুটদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে।

কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের বেঞ্চ সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানিতেই জানিয়েছে, রাজ্য সরকারকে হলফনামা পেশ করতে হবে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই। এদিকে রাজ্যের সর্বশেষ ২০১৭-১৮ এর রিপোর্ট বেরিয়েছিল সেই ২০১৯ সালের মার্চ মাসে। তারপর করোনার জেরে বন্ধ স্কুল। আর রিপোর্টও বেরোয়নি। ‘১৯ সালে প্রকাশিত সেই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ছাত্র শিক্ষক অনুপাত আকাশছোঁয়া। একই হাল মাধ্যমিকেও। কেমন সেটা?

কোথাও ছাত্র আছে তো শিক্ষক নেই, আবার কোনও স্কুলে ছাত্রছাত্রীর ৬ গুণ শিক্ষক আছেন। কিন্তু পড়ুয়ার অভাব। রাজ্য জুড়ে উঠে আসছে এমনই শিক্ষক-পড়ুয়া অনুপাতের বৈষম্যের চাঞ্চল্যকর সব তথ্য!

রাজ্যে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে জেলা ভিত্তিক অনুপাত:

মালদহ: এই জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষক পড়ুয়ার অনুপাত হল ১:৯৪। অর্থাৎ, একজন শিক্ষক পড়ান ৯৪ জন পড়ুয়াকে!

মুর্শিদাবাদ: এই জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষক পড়ুয়ার অনুপাত হল ১:৮১।

বাঁকুড়া: এই জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষক পড়ুয়ার অনুপাত হল ১:৫৩।

জলপাইগুড়ি: এই জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষক পড়ুয়ার অনুপাত হল ১:৯২।

ঝাড়গ্রাম: এই জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষক পড়ুয়ার অনুপাত হল ১:৮৮।

নদিয়া: এই জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষক পড়ুয়ার অনুপাত হল ১:৭৫।

একই ছবি মাধ্যমিকের ক্ষেত্রেও। কেমন সেটা?

মুর্শিদাবাদ: ১:৫৯

জলপাইগুড়ি: ১:৫৫

উত্তর দিনাজপুর: ১:৫৫, যা থাকা উচিত ছিল ১:৪০।

অন্যদিকে শহর কলকাতার একাধিক স্কুলে শিক্ষক থাকলেও নেই ছাত্র। ২০১৭ সালের শেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজা মণীন্দ্র রায় রোডের শহীদ স্মৃতি বিদ্যালয়ে মোট পড়ুয়ার সংখ্যা মাত্র ৮। শিল্প কলা শিক্ষা মন্দিরে মোট পড়ুয়া ২৬। পাইকপাড়া কুমার আশুতোষ ইনস্টিটিউশনে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৪, মাধ্যমিক স্তরে পড়ুয়া স্রেফ ৩ জন। অমর ভারতী হাই স্কুল মোট পড়ুয়া ছিল ৩০ জন। সেন্ট্রাল কলেজিয়েট স্কুল বিধান সরণিতে পড়ুয়া ছিল ২৫।

শিক্ষা মহলের মতে, জেনারেল ট্রান্সফার নিয়ে গ্রাম বাংলা থেকে শহরে চলে আসার জন্যই জেলার স্কুলগুলিতে শিক্ষকের অভাব। আর শহরে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ছাত্র বেশি যাওয়ায়, বাংলা মাধ্যমে ছাত্রের অভাব। সব মিলিয়ে অসম বণ্টনের দরুন দেদার বিঘ্নিত হচ্ছে ছাত্র শিক্ষকের অনুপাত। শিক্ষকের চাহিদা রয়েছে বহু স্কুলেই। কয়েকটা উদাহরণ দেওয়া যাক।

মেমারি রসিকালি বিদ্যালয়। এখানে বিজ্ঞান, ইতিহাস ও রসায়ন বিভাগে শিক্ষক প্রয়োজন। ইটাচুনা শ্রী নারায়ণ ইনস্টিটিউশন। এখানে সোশ্যাল সায়েন্স, বিজ্ঞান ও অঙ্কের শিক্ষক দরকার। সোদপুর বালিকা বিদ্যালয় – ভূগোল, অঙ্ক, জীবন বিজ্ঞান, রসায়ন, শরীর শিক্ষার শিক্ষক প্রয়োজন। সাতগ্রাম কুর্শামারি হাই স্কুল। এখানে বাংলার ৩ জন শিক্ষক, অঙ্ক, সংস্কৃত, ভূগোল সহ অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষকের দরকার।

গ্রামের মতো শহরতলির ছবিও প্রায় একই। সোনারপুরের আচার্য প্রফুল্ল নগর আতুলকৃষ্ণ বিদ্যায়তনের ছাত্রী সংখ্যা ২,০০০। হিসাব মতো শিক্ষক প্রয়োজন ৫০ জন। অনুমোদিত পোস্ট রয়েছে ৩৭। আর এখন শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ২৮ জন। এই স্কুলগুলিতে পার্শ্ব শিক্ষক দিয়ে কোনওক্রমে ঠেকেঠুকে চলছে পড়াশোনা। বারুইপুরের পদ্মপুকুর মধ্য বিদ্যালয়েও শিক্ষকের অভাব। এরকম আরও একাধিক শহরতলির স্কুলে শিক্ষক নেই। আরও পড়ুন: ‘নিয়মের বাইরে কাজ করতে পারেন না উপাচার্য,’ শিক্ষিকার বকেয়া বেতন মামলায় ভর্ৎসনা হাইকোর্টের