Subrata Mukherjee: ‘শুভেন্দুকে শিখতে হবে, কিছু হলেই শুধু ওয়াক আউট!’

TV9 Bangla Digital | Edited By: সৈকত দাস

Nov 05, 2021 | 12:34 AM

Subrata Mukherjee on Opposition leader: "সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় তখন বিরোধী নেতা। জ্যোতি বসু হোম মিনিস্ট্রি-তে বাজেট পেশ করেছেন। জ্যোতিবাবুর টেবিলে এতগুলো বই, সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের টেবিলে এতগুলো বই! এই লড়াই! জীবনের বড় পাওনা এগুলোকেই মনে হয়।''

Subrata Mukherjee: ‘শুভেন্দুকে শিখতে হবে, কিছু হলেই শুধু ওয়াক আউট!’
শুভেন্দু অধিকারী সম্পর্কে সুব্রতবাবুর মূল্যায়ন। নিজস্ব চিত্র

Follow Us

কলকাতা: বিধানসভায় তিনি কাটিয়েছেন জীবনের সিংঘভাগ সময়। কখনও কংগ্রেসে, কখনও তৃণমূলে থাকাকালীন বিরোধী ও শাসক শিবিরের নেতাদের দেখেছেন, চিনেছেন খুব কাছ থেকে। তাঁর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে। দল কিংবা রঙ নির্বিশেষে তাঁকে শ্রদ্ধা করতেন বহু মানুষ। এত দীর্ঘ পথ তিনি অতিক্রম করেছেন, যে সেখানে এসেছে অনেক রং। বাংলার রাজনীতিকদের মধ্যে অন্যতম অভিজ্ঞ হিসেবে বিবেচিত হতেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধী আসনে এবার তাঁরই একসময়ের সহযোদ্ধা শুভেন্দু অধিকারী। তা বিরোধী নেতা হিসাবে শুভেন্দু সম্পর্কে কেমন পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন ছিল সুব্রতবাবুর? Tv9 বাংলায় ‘কথাবার্তা’ অনুষ্ঠানে এ নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

শুভেন্দুকে বিরোধী নেতা হিসাবে মূল্যায়ণ করতে গিয়ে সুব্রতবাবু ফিরে গিয়েছিলেন অতীতে। তুলনা টেনেছেন জ্যোতি বসু ও সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের জমানার। সুব্রতবাবু হাসতে হাসতে বলেন, “আমাকে অনেক সময়ে চ্যাংদোলা করে বাইরে ফেলে দিয়েছেন। আবার পরে মুখ্যমন্ত্রী চা খাইয়ে বলেছেন, কেন প্রেসারের মানুষ এমন করেন। বিধানসভাকে কেমন হতে হয় ওঁদের দেখেই শেখা।”

সুব্রতবাবুর কথায়, “জ্যোতি বসুরা শাস্তি দিয়েছেন, আবার আমাদের উপযুক্ত মর্যাদাও দিয়েছেন। আমাকে হয়ত কোনওদিন বিধানসভা থেকে বার করে দিয়েছেন। আবার ওঁরাই স্ত্রীর কাছে খবরাখবর নিয়েছেন আমি কেমন আছি। আমাদের এখানে আলোচনা-বিতর্ক, রাজ্যের কথা ভেবে একসঙ্গে কিছু পাশ করা, সবই হত। সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় তখন বিরোধী নেতা। জ্যোতি বসু হোম মিনিস্ট্রি-তে বাজেট পেশ করেছেন। জ্যোতিবাবুর টেবিলে এতগুলো বই, সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের টেবিলে এতগুলো বই! এই লড়াই! জীবনের বড় পাওনা এগুলোকেই মনে হয়।”

এখন তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে শুভেন্দু অধিকারী। কেমন লাগে এখনকার বিধানসভা? সরাসরি কারও সম্পর্কে কোনও কথা না বলে সুব্রতবাবুর উত্তর, “বিধানসভায় গুণগত মান বজায় রাখা বিরোধীদের দায়িত্ব। কারণ, সরকারের ধান্দা হল গিয়ে পাশ (বিল) করিয়ে নিয়ে চলে যাওয়া। অপজিশন যদি সেটাকে আইনের কাঠামোয় ধরতে না পারে, ওরম হয়ে যাবে। সে জন্য ভাল অপজিশন না হলে বিধানসভা, পার্লামেন্ট স্বার্থক হবে না।

শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী নেতা হিসাবে কীভাবে দেখেন? সুব্রতবাবুর কথায়,”ওঁর যেটা নেই সেটা হচ্ছে… প্রেসকে বলার মতো কথাবার্তা, সেটা যেমন বলে থাকে, বলে থাকে। কিন্তু হাউসে এফেক্টিভলি তথ্য় দিয়ে আমাদের বিড়ম্বনায় ফেলতে পারবে, সেটা ওর কাছ থেকে পাই না। কিছু হলে আমরা মানলাম না, ওয়াক আউট!” হাসতে হাসতে কথাগুলো বলছিলেন তিনি। তার পর যোগ করেন, “দিনে দশবার ওয়াক আউট করলে কী হবে! প্রতিবাদটা রাখতে হবে এবং দিনের শেষে হাউসে এস্টাব্লিশ করে যেতে হবে। তবে তো প্রেসের লোকেরা লিখে কিছু লিখে মানুষকে জানাতে পারবে। ওঁ দেখেছি, কিছু হলে ওয়াক আউট। ওয়াক আউট হলে তো আমরা সব পাশ করিয়ে নিয়ে বেরিয়ে যাব। ওঁর বিরোধী নেতা হিসাবে যে প্রোজেকশন থাকা উচিত, আমার মনে হয় টাইম লাগবে।”

শুভেন্দু সম্পর্কে সুব্রতবাবুর পর্যালোচনা, “বিলো দ্য বেল্ট, ব্যক্তি আক্রমণ থেকে পিছু হঠতে হবে। শুধু আলোচনায় না গিয়ে ব্যক্তি আক্রমণ, এটা সিপিএমের মধ্যেও বেশি ছিল না। কিন্তু ওরা যখন বিরোধীর চেয়ারে বা শাসকের আসনে ছিল, এই ফিলোজফিটা মানত। এমনকি হাউসের সম্মানটা বাম ও কংগ্রেস বেশি জানত, যা এখনকার আমাদের মধ্যে নেই।”

আরও পড়ুন: Subrata Mukherjee: তৃণমূলের টিকিটে জিতেও বাম-কংগ্রেসের অপেক্ষায় ছিলেন সুব্রত

Next Article